The Birth centenary celebration of Swami Atmasthanandaji is also celebrated in Silchar.
রামকৃষ্ণ মঠ ও মিশনের পঞ্চদশ অধ্যক্ষ শ্রীমৎ স্বামী আত্মস্থানান্দজী মহারাজের জন্মশতবর্ষ উদযাপন অনুষ্ঠান আজ শিলচরেও ভাবগম্ভীর পরিবেশে আয়োজন করলেন ভক্তবৃন্দ। সার্কিট হাউস রোডের আশীর্বাদ বিবাহ ভবন প্রাঙ্গনে অনুষ্ঠানটি আয়োজন করা হয়। শ্রীমৎ স্বামী আত্মস্থানন্দজী জন্মশতবর্ষ উদযাপন কমিটি, শিলচর শাখার দ্বারা আয়োজিত একদিনের এই অনুষ্ঠানে দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে মহারাজরা যোগদান করেন।
সকাল সাতটায় শ্রীশ্রী রামকৃষ্ণ দেব, শ্রীমা সারদা দেবী এবং স্বামী বিবেকানন্দের বিশেষ পূজার মধ্যে দিয়ে দিনটি শুরু হয়। তারপর, বৈদিক মন্ত্র পাঠ, উদ্বোধনী সংগীত ও স্বাগত ভাষণ দিয়ে শুরু করে সকাল ৯টা থেকে শুরু হয় ধর্ম আলোচনার প্রথম পর্ব। এতে বক্তব্য রাখেন কলকাতার কাঁকুড়গাছির যোগদান রামকৃষ্ণ মঠের অধ্যক্ষ স্বামী বিমলাত্মানন্দজি মহারাজ, লখনউ রামকৃষ্ণ মঠের অধ্যক্ষ স্বামী মুক্তিনাথানন্দজি মহারাজ, শিলচর রামকৃষ্ণ মিশন সেবাশ্রমের সম্পাদক স্বামী গণধীশানন্দজি মহারাজ এবং শিলচর রামকৃষ্ণ মিশনের আরেক মহারাজ স্বামী বৈকুন্ঠানন্দজি প্রমূখ। এরপরে সংগীতের অনুষ্ঠানে অংশগ্রহণ করেন মেঘরাজ চক্রবর্তী, গার্গী দেব এবং অনিমেষ দেব প্রমুখ।
দুপুরে মহাপ্রসাদ বিতরণ শুরু হলেও শেষ হতে বিকেল গড়িয়ে যায়। এতে প্রায় দশ হাজার লোক প্রসাদ গ্রহণ করেন। সাথে চলতে থাকে পালাকীর্তন ।
বিকাল তিনটায় ধর্ম আলোচনার দ্বিতীয় পর্বে অংশগ্রহণ করেন বাগবাজার রামকৃষ্ণ মঠের অধ্যক্ষ স্বামী নিত্যমুক্তানন্দজী মহারাজ, ইম্ফল রামকৃষ্ণ মিশনের সম্পাদক স্বামী নরেশানন্দজি মহারাজ, করিমগঞ্জ রামকৃষ্ণ মিশনের সম্পাদক প্রভাসানন্দজি মহারাজ এবং রামকৃষ্ণ মিশন টিবি সেনেটোরিয়াম রাঁচির পক্ষে স্বামী সৎসঙ্গানন্দ মহারাজ।
সন্ধ্যায় সন্ধ্যারতি এবং সংঙ্গীতাঞ্জলির মাধ্যমে অনুষ্ঠানটি শেষ হবে। এতে শিল্পী অমরেন্দ্র চক্রবর্তী, সুমনা পাল চৌধুরী, রথীন চক্রবর্তী এবং মঞ্জুশ্রী দাস সংগীত পরিবেশন করবেন।
এই প্রসঙ্গে মহারাজ সম্বন্ধে দুচারটে কথা না বললেই নয়। গুজরাটে নরেন্দ্র মোদীর সঙ্গে মহারাজের আলাপ হয়েছিল, মোদী গিয়েছিলেন সন্ন্যাসী হতে। মহারাজ তাঁর সঙ্গে কথা বলে পরামর্শ দিয়েছিলেন, সন্ন্যাসী হওয়া তোমার কাজ নয়। অন্য কাজে তোমাকে প্রয়োজন। এর পর রাজনীতিতে যোগ দেন নরেন্দ্র মোদি।
ভুজে ভূমিকম্পের পর মহারাজ ছুটে গিয়েছিলেন। তখন তিনি ভাইস প্রেসিডেন্ট। নিজে তদারকি করেছিলেন ত্রাণ ও উদ্ধারের যাবতীয় কাজের।
তাঁকে যদি কেউ জিজ্ঞাসা করতেন “কখনও চিন্তিত হতে দেখি না তো আপনাকে। কী করে এত শান্ত থাকেন?”হাতে ধরা বিবেকানন্দের বাণী সম্বলিত পুস্তিকা দেখিয়ে সন্ন্যাসীর জবাব ছিল “সব সমস্যা সমাধান হাতে নিয়েই ঘুরছি। চিন্তিত হওয়ার অবকাশ নেই।”
আত্মস্থানন্দজী মহারাজ মহাপ্রভু চৈতন্যদেব এবং বিজয় কৃষ্ণ গোস্বামীর বংশধর। তার পরিবারের পাঁচজন সন্ন্যাসী। তিনি ছাড়া তার তিন ভাই এবং বোন আজীবন সন্ন্যাসী হয়ে কাটিয়েছেন। রামকৃষ্ণ সংঘের পঞ্চদশ অধ্যক্ষ হওয়ার আগে তিনি ১৯৯২ সালে মঠের সাধারণ সম্পাদক হিসাবে মনোনীত হন। ১৯৯৭ সহ-সভাপতি পদে নিযুক্ত হন এবং দীক্ষা দিতে শুরু করেন। ২০০৭ সালে সংঘের পঞ্চদশ অধ্যক্ষ হিসেবে তাঁকে নিযুক্ত করা হয়। ২০১৭ সালের ১৮ জুন তিনি ইহলোক ত্যাগ করেন। তার কার্যকালে দুইবার শিলচরে এসেছেন। এখানে তার অসংখ্য ভক্ত রয়েছেন এবং তাদের উদ্যোগেই এই শতবর্ষ উদযাপন অনুষ্ঠানটি আয়োজন করা হয়েছে।
Comments are closed.