'Alas! We Bengalees don't know our history, geography' Tapodhir exclaimes in Barak Banga
বরাক উপত্যকা বঙ্গ সাহিত্য ও সংস্কৃতি সম্মেলনের আঠাশতম দ্বিবার্ষিক অধিবেশনের দ্বিতীয় দিনে শনিবার সাহিত্য বাসরে বিশিষ্ট সাহিত্যিকদের মনোজ্ঞ আলোচনা,বহুভাষিক কবি সম্মেলন , শিশু মেলা আর লোক সাংস্কৃতিক মঞ্চের নানা স্বাদের অনুষ্ঠানে রীতিমতো মেতে উঠেছে জেলা সদর হাইলাকান্দি।
এদিন সকালে শিশু মেলায় শিশুদের নানা স্বাদের অনুষ্ঠানের পাশাপাশি হাইলাকান্দি ইন্ডোর স্টেডিয়ামে “ঈশ্বর চন্দ্র বিদ্যাসাগর স্মৃতি সাহিত্য মঞ্চে” অনুষ্ঠিত হয় সাহিত্য আসর। এতে কলকাতার বিশিষ্ট কবি সাহিত্যিক লেখক শরদিন্দু মুখোপাধ্যায়, বিশিষ্ট কথা সাহিত্যিক শীর্ষেন্দু মুখোপাধ্যায়, অসম বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাক্তন উপাচার্য তপোধীর ভট্টাচার্য, প্রমুখ অংশ নেন।।
কবি আশুতোষ দাসের পৌরোহিত্যে আয়োজিত সাহিত্য আলোচনায় সাহিত্যিক শরদিন্দু মুখোপাধ্যায়,
বলেন, ভারতে বাঙালিরা দ্বিতীয় বৃহত্তম। বাংলায় বিদ্যাসাগরের অবদান অপরিসীম তা’ অস্বীকার করার কোনো উপায় নেই। বিদ্যাসাগরের চরিত্র উত্তারিধার সূত্রে অর্জন করার কথা বলেন তিনি। বক্তব্য রাখতে গিয়ে আসাম বিশ্ববিদ্যালয়ে অবসরপ্রাপ্ত উপাচার্য অধ্যাপক তপোধীর ভট্টাচার্য বাঙালিদের জাতিসত্তা রক্ষা করার আহ্বান জানান। বলেন, বাঙালির ইতিহাস জানতে হবে। বরাকের বাঙালিদের কার্যত কোনো মানচিত্র নেই। আমরা নিজেদের ইতিহাস, ভূগোল জানি না আমরা আবার বাঙালি, আক্ষেপ তাঁর। উত্তর পূর্বের বাঙালিরা সব স্থানেই উদ্বাস্তু। আমরা আমাদের মাতৃভাষার জন্যে কতটুকু চোখের জল ফেলেছি, প্রশ্ন অবসরপ্রাপ্ত এই উপাচার্যের। বাঙালিরা তাদের আত্ম সম্মান হারিয়ে বসেছে। বাঙালিরা এই মুহুর্তে অস্তিত্বের সঙ্কটে রয়েছে,এর থেকে উত্তরণ পেতে হবে। অনুষ্ঠানে সিলেটের শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের বাংলা বিভাগের প্রধান অধ্যাপক শরদিন্দু ভট্টাচার্য, সহ আরো অনেকে বক্তব্য রাখেন।
এদিকে শুক্রবার রাতে প্রদীপ প্রজ্বলন করে বরাক উপত্যকা বঙ্গ সাহিত্য ও সংস্কৃতি সম্মেলনের ২৮ তম দ্বিবার্ষিক কেন্দ্রীয় অধিবেশনের আনুষ্ঠানিকভাবে উদ্বোধন করেন
কথা সাহিত্যিক শীর্ষেন্দু মুখোপাধ্যায়, প্রাক্তন মন্ত্রী গৌতম রায়, লেখক শরদিন্দু মুখোপাধ্যায়। রবীন্দ্র ভবন মিলনায়তনে প্রদীপ জ্বালিয়ে অধিবেশনের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে শরদিন্দু মুখোপাধ্যায় বলেন , বরাকের বাঙালিরা আজ রীতিমতো সঙ্কটের মুখে। কিন্তু এখানকার বাঙালিরা অত্যন্ত সংস্কৃতিপ্রবণ। বরাক উপত্যকার বাঙালিরা সংস্কৃতি মনস্ক। তিনি স্মরণ করিয়ে দিয়ে বলেন, সাহিত্য ও সংস্কৃতি বাঙালির অহঙ্কার, বাঙালির পরিচয়। বাংলাদেশের সিলেটের ঐতিহ্যবাহী শাহজালাল বিশ্ববিদ্যালয়ের বাংলা বিভাগের প্রধান অধ্যাপক ডঃ শরদিন্দু ভট্টাচার্য বক্তব্য রাখতে গিয়ে বলেন, অসমিয়া আর বাংলা জমজ ভাষা। ভাষা সংস্কৃতির প্রধান উপাদান। তাঁর আক্ষেপ, ভাষা ও সংস্কৃতি ধীরে ধীরে হারিয়ে যাচ্ছে। তবে তাঁর ভাষায়, ইচ্ছে থাকলেই সংস্কৃতি টিকিয়ে রাখা যায়। ভাষা সংস্কৃতি বিসর্জন দেওয়া নয়, ভাষা-সংস্কৃতি ধরে রাখতে আহ্বান জানিয়ে অধ্যাপক শরদিন্দু ভট্টাচার্য বলেন, লোক সাহিত্যের খনি হচ্ছে এই বরাক উপত্যকা। ফলে বরাকের ভাষা, সংস্কৃতি টিকিয়ে রাখতে হবে সকলকে।
শনিবার গভীর রাত অবধি লোকমঞ্চের পাশাপাশি সংস্কৃতি মঞ্চে চলে নানা স্বাদের সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান। এবারের সম্মেলনে দর্শক শ্রোতাদের উপস্থিতি আশানুরুপ না হলেও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানকে ঘিরে জমে উঠেছে অনুষ্ঠানস্থল ।
Comments are closed.