Also read in

"Books teach us to be human being", Swami Ganadhishanandaji at the inauguration of Silchar Book Fair

সাধারণ পরিস্থিতিতেই বইমেলা নিয়ে উদাসীন থাকেন জনগণ, এখন করোনা ভাইরাসের সংক্রমনের ভয়ে সব ধরনের জনসমাগম এড়িয়ে চলছেন সাধারণ মানুষ। এমন একটা সময়ে দাঁড়িয়ে শিলচর শহরে ঐতিহ্যপূর্ণ বইমেলা অনুষ্ঠিত হচ্ছে। আয়োজকদের মতে এটা তাদের কাছে অস্তিত্বের লড়াই। তিনদিনের সীমিত বইমেলাটি শনিবার সন্ধ্যেবেলা শিলচরের ইলোরা হেরিটেজে শুরু হয়েছে। অনুষ্ঠানে অতিথি হিসেবে যোগ দিতে এসে শিলচর রামকৃষ্ণ মিশনের মহারাজ গণধীশানন্দজি মহারাজ বলেন, “অত্যন্ত গৌরবের এই উদ্যোগ, আয়োজকদের সাধুবাদ জানাই। দুই-হাত, দুই-পা এবং মস্তিষ্ক বিশিষ্ট এক প্রাণী আমরা, পুস্তক আমাদের মানুষ করে তোলে। কারণ পুস্তকের মাধ্যমে জ্ঞান আহরণ হয়, আমরা জানতে পারি। বইমেলা এমন একটি জায়গা যেখানে জ্ঞানের চর্চা হয়। এই কঠিন পরিস্থিতিতে দাঁড়িয়ে যারা বইমেলা আয়োজন করছেন আমি তাদের সাধুবাদ দিচ্ছি, একটা ট্রেডিশনকে আপনারা বাঁচিয়ে রাখতে চেষ্টা করছেন।”

গণধীশানন্দজি মহারাজ ছাড়াও এদিন উদ্বোধন অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন চিকিৎসক শিশির বিশ্বাস, বরিষ্ঠ কংগ্রেস নেতা পার্থ চক্রবর্তী, এবছরের বই মেলা কমিটির কার্যকরী সভানেত্রী স্বর্ণালী চৌধুরী, অতিথি বন্দনা সাহা, কবি সুজয়া ভট্টাচার্য এবং শতদল আচার্য, লেখক হিমাশীষ ভট্টাচার্য সহ অন্যান্যরা। অতিথিরা প্রদীপ প্রজ্জ্বলনের মাধ্যমে তিন দিনের অনুষ্ঠান উদ্বোধন করেন। শারীরিক অসুবিধার জন্য অনুষ্ঠানে যোগ দিতে পারেননি সভাপতি অতীন দাশ।

আয়োজকদের পক্ষ থেকে শতদল আচার্য বলেন, পরিস্থিতির কথা মাথায় রেখে বরাকের বাইরের কোনও প্রকাশক এবার বইমেলায় আসতে পারছেন না। তবে এই সুযোগে স্থানীয় প্রকাশকদের একটা প্লাটফর্ম গড়ে তোলার সম্ভাবনা রয়েছে। প্রথম দিনে স্থানীয় ১০টি প্রকাশনী থেকে স্টল বসানো হয়েছে আগামীতে আরও অনেকেই এতে যোগ দেবেন। মূল স্রোতের প্রকাশকেরা যেমন এখানে জায়গা পাচ্ছেন সেভাবেই আমরা চাই লিটল ম্যাগাজিন এবং ছোটমাপের প্রকাশকরাও তাদের বইপত্র নিয়ে মেলায় যোগ দিন। প্রত্যেকেই সমান জায়গা পাবেন।”

আগামী দুইদিন বিভিন্ন সাহিত্য আলোচনা কবিতা পাঠ ইত্যাদির পরিকল্পনা রয়েছে বই মেলা কমিটির। এব্যাপারে শতদল আচার্য বলেন, “আমরা বিভিন্ন আলোচনা এবং সাহিত্য আড্ডার পরিকল্পনা করেছি। পরিস্থিতি বুঝে সেগুলো এগিয়ে নিয়ে যাওয়া হবে। আয়োজন ছোট হলেও প্রাণের অভাব থাকবে না এই বছরের বইমেলায়। আমরা চাই প্রত্যেকে একবার হলেও এখানে এসে আমাদের পাশে দাঁড়ান।”

স্বর্ণালী চৌধুরী বলেন, আমরা অনেক অল্প বয়স থেকে দেখে আসছি পরিতোষ পাল চৌধুরী সহ শিলচর শহরে গুণীজনেরা বইমেলার জন্য অক্লান্ত পরিশ্রম করছেন। এবার আমাদের কাছে সুযোগ তাদের ঐতিহ্য এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার। কিরে অনেকেই সাড়া দিয়েছেন এবং মনে হচ্ছে আমাদের পরিশ্রম বৃথা যাবে না। তবে আমরা পরিষ্কার জানিয়ে দিয়েছি যারাই বইমেলায় প্রবেশ করবেন প্রত্যেকের মাস্ক থাকতে হবে। প্রত্যেকের সুবিধার জন্য আমরা মেলার গেটে সেনিটাইজারের ব্যবস্থা করেছি এবং যারা মাস্ক নিয়ে আসবেন না তাদের জন্য মাস্ক রাখা হয়েছে। নো মাস্ক-নো এন্ট্রি, আপাতত এটাই আমাদের শ্লোগান।’

প্রকাশক গোবিন্দ কংস বণিক বলেন, “লকডাউনের পরে বিভিন্ন প্রকাশনীর থেকে বই এসেছে , তবে সাধারণ পরিস্থিতি থেকে সেটা অনেক কম। এবার প্রায় কোথাও বইমেলা আয়োজিত হচ্ছেনা। এই সময়ে দাঁড়িয়ে শিলচরে যে মেলাটি করা হচ্ছে এতে অবশ্যই পাঠকদের মনে নতুন আশার সঞ্চার হবে। আমরা এইবছর ব্যবসার দিকটা দেখছিনা, ঐতিহ্য বাঁচিয়ে রাখতে বইমেলায় যোগ দিয়েছি। যদি ভালো বিক্রি হয় সেটা হবে আমাদের কাছে অতিরিক্ত পাওনা।”

Comments are closed.