Silchar woman accuses husband of striping her naked in public; files domestic violence case
পরকীয়ায় বাধা দেওয়ায় স্ত্রীকে প্রকাশ্যে উলঙ্গ করে মারধর স্বামীর,কোনক্রমে প্রাণে বাঁচল শিলচরের মেয়ে
২০০৫ সালের জুলাই মাসে শিলচরের মেয়ে পিংকি পালের বিয়ে হয় ডিমা হাসাও জেলার ডিটেকছড়ার বাসিন্দা মানিক পালের সঙ্গে। দুমাসের মাথায় স্বামীকে পরকীয়ায় হাতেনাতে ধরে ঘর ছেড়ে বেরিয়ে আসেন পিংকি। পরিবারের অনুরোধে ফিরে গেলেও বরাবরই যন্ত্রণায় দিন কাটিয়েছেন। এবার পুজোয় আবার পরকিয়ায় লিপ্ত হলে স্বামীকে হাতেনাতে ধরেন তিনি। তবে এবার শেষরক্ষা হয়নি তার, বরং এর জেরে প্রকাশ্যে রাস্তায় উলঙ্গ করে মারধর করার পাশাপাশি গরম হাতা দিয়ে পিংকির শরীরের বিভিন্ন অংশ জ্বালিয়ে অত্যাচার করে তার স্বামী এবং পরিবারের লোকেরা, এমটাই অভিযোগ পিংকির বাপের বাড়ির লোকেদের।
তারা জানান, অকথ্য অত্যাচার সহ্য করতে না পেরে গত সপ্তাহে প্রাণ নিয়ে পালিয়ে কোনক্রমে শিলচর আসেন পিংকি। অবশ্য এর আগে স্থানীয় পুলিশের কাছে অভিযোগ দায়ের করতে চেয়েছিলেন তিনি। পুলিশ তার বয়ান লিখতে রাজি হয়নি এবং উল্টে শাসানোর চেষ্টা করে। তাই শিলচর সদর থানায় এজাহার দায়ের করেন তিনি।
পিংকি এবং তার পরিবারের পাশে এসে দাঁড়িয়েছে সামাজিক সংস্থা ইউথ অ্যাগেইনস্ট সোশ্যাল ইভিলস (ইয়াসি)। শুক্রবার ইয়াসির সদস্যদের উপস্থিতিতে তাঁদের মালুগ্রামের কার্যালয়ে সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলেন পিংকি এবং তাদের পরিবারের সদস্যরা। তারা বলেন, বিয়ের পর থেকে বিভিন্ন সময় মানিকের পরকিয়ার কাণ্ড প্রকাশ্যে এসেছে। এতে প্রতিবাদ করতে গেলে পিংকিকে সহ্য করতে হয়েছে অকথ্য গালাগাল এবং মারধর। মানিকের ছোটভাই রনজিৎ পাল এবং তাদের মা-বাবা এসবে মদত জুগিয়েছেন। ঘরের মধ্যে ছোট ভাইযের সামনে বারবার পিংকিকে রেপ করেছে মানিক। এতে প্রতিবাদ তো দূরের কথা, বরং পাশে থেকে অকথ্য গালাগাল দিত রাজু পাল, জানান পিংকির মা শিবানী পাল।
ডিমাহাসাও জেলার ডিটেকছড়ার বাসিন্দা মানিকের পরিবারের নিজস্ব ব্যবসা রয়েছে বিহারা বাজার এলাকায়। মানিকের তিন সন্তানের মা হয়েছেন পিংকি, সন্তানের জন্য উন্নত শিক্ষার ব্যবস্থা করতে এবছরই তাদের নিয়ে শিলচর আসেন। মালিনীবিলের প্রণবানন্দ বিদ্যামন্দিরে তাদের ভর্তি করান। পুজোয় তাদের নিয়ে বাড়ি ফিরে গিয়ে দেখেন মানিক প্রকাশ্যে আরেকটি মহিলাকে নিয়ে থাকছে। তিনি প্রতিবাদ করায় ঘর থেকে টেনে হিচড়ে রাস্তায় নিয়ে আসে মানিক এবং রাজু। প্রকাশ্যে প্রায় উলঙ্গ করে মারধর করে তাকে। একসময় পিংকির মনে হয়েছিল তিনি বাঁচবেন না, তবে সমস্ত শক্তি জুটিয়ে শেষ পর্যন্ত সেখান থেকে পালিয়ে যেতে সমর্থ হন। দিনভর জঙ্গলে লুকিয়ে থেকে, রাতের বেলা অজানা লড়ি চালকের সাহায্য নিয়ে তিনি শিলচর আসেন। এই ঘটনায় ন্যায় পাওয়ার পাশাপাশি তিন সন্তানকে সুরক্ষা দেওয়ার আশা নিয়ে কাছাড় পুলিশের দ্বারস্থ হয়েছেন পিংকি, এমনটাই জানান শিবানী।
ইয়াসির সদস্যরা এই ঘটনায় তীব্র ক্ষোভ ব্যক্ত করেন এবং এই মামলায় পিংকি পালের পাশে থাকার আস্বাস দেন এদিন। তারা বলেন, দেশে মেয়েদের সুরক্ষা নিয়ে ফলাও করে প্রচার হয়, কোটি কোটি টাকার বিজ্ঞাপন দেওয়া হয়। অথচ নির্যাতিত মহিলার বয়ান নিতে রাজি হয়না পুলিশ। আমরা এই মেয়েটির পাশে থাকব এবং তাঁকে ন্যায় দেওয়াতে যা খরচ হবে, সব আমরাই দেব। মহিলাদের সুরক্ষা আমাদের কাছে অত্যন্ত প্রয়োজনীয় বিষয়, তবে আমরা প্রচারের জন্য করিনা এসব।
ইয়াসির একটি দল আগামী সপ্তাহে ডিমাহাসাও যাবে এবং সেখানে পুলিশের উপর মামলাটি নিয়ে নিরপেক্ষ তদন্ত করে দোষীদের ধরার ব্যবস্থা করতে চাপ তৈরি করবে বলে তারা জানান।।
Comments are closed.