Also read in

RamaKrishna Mission Karimganj: The concluding ceremony of celebrating the centenary year of the Karimganj Ramakrishna Mission.

করিমগঞ্জ রামকৃষ্ণ মিশনের বর্ষব্যাপী শতবর্ষ উদযাপনের সমাপ্তি উৎসব ডিসেম্বর মাসে শুরু হচ্ছে। আগামী ১ ডিসেম্বর থেকে এই শতবর্ষ উদযাপনের সমাপ্তি অনুষ্ঠানের সূচনা হবে। চলবে ৮ ডিসেম্বর পর্যন্ত। প্রসঙ্গত উল্লেখ্য, ২০১৭ সালের মে মাসে শতবর্ষ উদযাপনের শুভারম্ভ হয়েছিল।এক বছর ব‍্যাপী বিভিন্ন অনুষ্ঠানের মাধ্যমে শতবর্ষ উদযাপন করা হচ্ছে।

বর্ষ ব্যাপী এই উদযাপনের সমাপ্তি উৎসবের অঙ্গ হিসেবে স্বামী বিবেকানন্দের ব্রোঞ্জ মূর্তি স্থাপন ও উন্মোচন অন্যতম। সেই সঙ্গে দূর্গামণ্ডপ, প্রসাদ বিতরণ কক্ষ ও একটি প্রেক্ষাগৃহেরও দ্বারোদ্ঘাটন হবে বলে মিশন সূত্রে জানা যায়। এ সময় দীক্ষা প্রদান অনুষ্ঠানও চলবে।স্বামী গৌতমানন্দজি মহারাজ ও স্বামী সুবীরানন্দজি মহারাজ এই অনুষ্ঠানে যোগদান করবেন বলে জানা গেছে। সমাপ্তি অনুষ্ঠানের অঙ্গ হিসেবে বৈদিক স্তোত্র পাঠ, সংগীত, কত্থক নৃত্য, ওডিসি নৃত্য,গীতি আলেখ্য, গীতিনাট্য, নাটক,ভক্তিগীতি, কীর্তন ইত্যাদির আয়োজন করা হয়েছে। তাছাড়া রয়েছে শতবার্ষিকী উপলক্ষে স্মরণিকা উন্মোচন।

দুদিনই ধর্মসভারও আয়োজন করা হয়েছে। প্রথম দিনের ধর্ম সভায় প্রধান বক্তা হিসেবে উপস্থিত থাকবেন রাশিয়ার মস্কোর রামকৃষ্ণ বেদান্ত কেন্দ্রের ইনচার্জ স্বামী জ্যোতিরুপাজি মহারাজ, দক্ষিণ আফ্রিকার ডারবান রামকৃষ্ণ কেন্দ্রের অধ্যক্ষ সুমনসানন্দজি মহারাজ, আগরতলা রামকৃষ্ণ মিশনের সম্পাদক স্বামী হিতকামানন্দজি মহারাজ। দ্বিতীয় দিনের ধর্ম সভায় বক্তা হিসেবে উপস্থিত থাকবেন ভুবনেশ্বর রামকৃষ্ণ মিশনের সম্পাদক আত্মপ্রভানন্দজি মহারাজ, বাংলাদেশের সিলেট রামকৃষ্ণ মিশনের সম্পাদক চন্দ্রনাথনন্দজি মহারাজ,সিমলা রামকৃষ্ণ মিশনের সম্পাদক সত্যস্থানন্দজি মহারাজ। সভায় সভাপতির আসন অলংকৃত করবেন রামকৃষ্ণ মঠ ও মিশনের সহ-সভাপতি গৌতমানন্দজি মহারাজ।

সূত্রানুসারে আরো জানা যায়, বিগত শতবর্ষের এই যাত্রাপথে করিমগঞ্জ রামকৃষ্ণ মিশন শ্রী শ্রী ঠাকুর, শ্রী মা ও স্বামীজীর বাণী ও আদর্শ যেমন প্রচার করেছে তেমনি শিক্ষা স্বাস্থ্য নৈতিক আধ্যাত্বিক ও অন্যান্য বিবিধ সেবায় সমাজের কল্যাণে কাজ করেছে।

এ উপলক্ষে করিমগঞ্জ মিশনের পূর্ণনন্দজী মহারাজ শতবার্ষিকী উৎসব তথা করিমগঞ্জ মিশন নিয়ে আমাদের প্রতিনিধির সঙ্গে কথা বলেন। তিনি বরাক বুলেটিনের প্রতিনিধিকে বলেন, “করিমগঞ্জ রামকৃষ্ণ মিশনের পূর্ব ইতিহাস দেখতে গেলে আমরা বলতে পারি, অবিভক্ত বাংলায় সিলেট রামকৃষ্ণ মিশনের স্বামী ত্রিনেশানন্দজি মহারাজের প্রেরণায় ও সতীশ চন্দ্র দেব, রুক্ষিনি মোহন চৌধুরী আরো কতিপয় ব্যক্তি জড়ো হয়ে রামকৃষ্ণ মিশন নামে একটি সমিতি স্থাপন করেন। তার পেছনেও একটা ইতিহাস ছিল। সে বছর বন্যায় জনগণ খুব ক্ষতিগ্রস্ত হন। তখন তাদের সাহায্যার্থে আমরা ও কিছু মানুষ এগিয়ে আসে, সেই ভক্তরা এবং স্বামী ত্রিনেশানন্দজির অনুপ্রেরণায় এই কতিপয় ব্যক্তি সমিতি গঠন করেন। পরে ১৯২৯ সালে এটি সিলেট রামকৃষ্ণ মিশনের শাখা হিসেবে পরিণত হয়। তারপর বিভিন্নভাবে রামকৃষ্ণ মিশনের কাজের ধারা চলতে থাকে। মাঝেমধ্যেই বিভিন্ন রামকৃষ্ণ মিশন থেকে সাধু-সন্ন্যাসীরা আসতেন। এরপর ১৯৪৭ সালের পয়লা অক্টোবর করিমগঞ্জ রামকৃষ্ণ মিশন বেলুড় মঠের স্বয়ংক্রিয় শাখা কেন্দ্র হিসেবে পরিণত হয়। তখন স্বামী গোপেশ্বরানন্দজি মহারাজ করিমগঞ্জ রামকৃষ্ণ মিশনের দায়িত্ব গ্রহণ করেন। এরপর অনেকজনই মিশনের সম্পাদকের দায়িত্ব গ্রহণ করেছেন। বর্তমানে প্রভাসানন্দজি মহারাজ সম্পাদকের দায়িত্ব পালন করছেন।
এই যে শতবর্ষ উদযাপন হচ্ছে তাতে যোগ দিতেও দেশ-বিদেশ থেকে বহু সাধু-সন্ন্যাসীরা আসছেন। এ উপলক্ষে বিভিন্ন অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়েছে। বর্ণাঢ্য শোভাযাত্রা বের হবে। রয়েছে সাংস্কৃতিক সহ ধর্মীয় অনুষ্ঠান। তাছাড়া ২৯ ও ৩০ নভেম্বর দুদিন ব্যাপী মিশনে দীক্ষাও প্রদান করা হবে। এই শতবর্ষ উদযাপন সুষ্ঠুভাবে সম্পন্ন হবে এবং ভক্তদের কামনা পূর্ণ হবে বলে আশা প্রকাশ করছি।”

Comments are closed.