Associations to go to green tribunal to stop construction of amusement park at Gandhi Bagh
পুরসভার উদ্যোগে ঐতিহাসিক গান্ধীবাগ পার্কে অত্যাধুনিক অ্যামিউজমেন্ট পার্ক এবং পাঁচতারা হোটেল বানানোর প্রকল্পের বিরুদ্ধে জোরালো আওয়াজ উঠছে শিলচরের বিভিন্ন মহল থেকে। মঙ্গলবার সন্ধ্যায় সম্মিলিত সাংস্কৃতিক মঞ্চের উদ্যোগে চার্চ রোডে দশরূপকের কার্যালয়ে এক সভা অনুষ্ঠিত হয়। ১৯৬১ সালের ভাষা আন্দোলনে স্মৃতিবিজড়িত গান্ধীবাগ এবং এর সঙ্গে থাকা সবুজ পার্কটিকে বাঁচানোর উদ্দেশ্যে জোরালো আন্দোলনের ডাক দেওয়া হয় এদিন। পাশাপাশি শিলচর পৌরসভার বিরুদ্ধে গ্রিন ট্রাইব্যুনালে মামলা করার বিষয়েও আলোচনা হয় সভায়।
এদিন সভায় অংশ নেন সম্মিলিত সাংস্কৃতিক মঞ্চের সদস্য সহ বিভিন্ন সমাজসেবীরা। সম্মিলিত সাংস্কৃতিক মঞ্চের অধীনে যেসব সংস্থা রয়েছে তাদের সদস্য, জেলা কংগ্রেসের সদস্য সহ অন্যান্যরা এদিন বিভিন্ন প্রস্তাব তুলে ধরেন। তারা বলেন, ১৯৬১ সালের ভাষা আন্দোলনের স্মৃতি জড়িয়ে রয়েছে গান্ধীবাগে। প্রত্যেক ব্যক্তির হৃদয়ের খুব কাছাকাছি এই পার্ক। শিলচর শহরের অন্যতম সবুজ অঞ্চল হচ্ছে এই গান্ধীবাগ। এ অঞ্চলটিকে ধ্বংস করে দেওয়ার চক্রান্ত করছে পৌরসভা। তার পিছনে রয়েছে বিরাট অংকের টাকার লেনদেন। আমরা অতীতে বারবার সাংসদ বিধায়কদের দেখেছি সাধারণ মানুষের কথা না শুনে সিদ্ধান্ত নিতে। তবে পুরসভায় যারা জয়ী হন তারা বরাবরই মানুষের কাছাকাছি থাকেন। তাদের কাছে নিজের কথা বলার সুযোগ থাকে বরাবরই। তবে এই প্রথমবার শিলচরের পুরসভা সাধারণ মানুষের কোনো কথাই শুনছে না এবং নিজের ইচ্ছে মতো সিদ্ধান্ত নিচ্ছে। তাদের সঙ্গে বারবার কথা বলার চেষ্টা করেও কোন লাভ হয় না সাধারণ মানুষের। তবে এবার তারা যেটা করছেন এটা সবকিছু ছাড়িয়ে গেছে। তারা একে একে শহরের ঐতিহ্য পরিবেশ এবং সম্পদ ধ্বংস করার দিকে এগিয়ে চলেছেন। আমরা শহরের সাধারণ মানুষ হিসেবে এর প্রতিবাদ করতে বাধ্য হচ্ছি।
৫ সেপ্টেম্বর আনুষ্ঠানিকভাবে পার্কের কাজটি শুরু হবে বলে জানানো হয়েছে। পৌরসভার বিরুদ্ধে আমরা এর আগে জোরালো আওয়াজ তুলবো। বুধবার জেলা শাসকের কাছে এ ব্যাপারে স্মারকপত্র প্রদান করা হবে এবং বৃহস্পতিবার সকাল থেকে নানা ভাবে প্রতিবাদ জানানো হবে। তারা যদি আমাদের বিরুদ্ধে শক্তি প্রদর্শন করেন, আমরা গণতান্ত্রিক পদ্ধতিতে তাদের বিরোধিতা করব। এ আন্দোলন দীর্ঘদিন ধরে চলবে। আমরা আশা করছি, গান্ধীবাগকে বাঁচাতে উপত্যকার প্রত্যেক মানুষ আমাদের পাশে দাঁড়াবেন।
পরিবেশ বিজ্ঞানী তথা অসম বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক শোভন দত্তগুপ্ত গান্ধীবাগ সংলগ্ন সবুজ অঞ্চলের প্রয়োজনীয়তা এবং গ্রিন ট্রাইব্যুনালের নির্দেশ নিয়ে বিভিন্ন তথ্য তুলে ধরেন। তিনি বলেন, উষ্ণায়নের ২১ নম্বর বায়োডাইভারসিটি ইন্ডো-বাংলা হটস্পটের অধীনে রয়েছি আমরা। আন্তর্জাতিক ট্রাইব্যুনালের নিয়ম অনুযায়ী কোনও সবুজায়ন ধ্বংস করার অধিকার নেই এই অঞ্চলে। আমরা এব্যাপারে শিলচর পৌরসভার কাছে বারবার জানতে চেয়েছি তারা গ্রীন ট্রাইব্যুনালের নির্দেশ মান্য করে কাজ করছেন কিনা। কিন্তু কোন উত্তর তারা আমাদের দেননি এবং এখন পার্কটিকে ধ্বংস করার কাজে নেমে পড়েছেন। আমরা আগামীতে তাদের বিরুদ্ধে আন্তর্জাতিক ট্রাইব্যুনালে মামলা করতে পারি এবং এতে আমাদের পাশে থাকবে গুয়াহাটির আরণ্যক নামে একটি শক্তিশালী সংগঠন। গান্ধী পার্কে শিবপুর বোটানিকেল গার্ডেন থেকে বেশ কিছু প্রয়োজনীয় গাছ এনে লাগানো হয়েছে। গাছগুলো কেটে ফেলার অধিকার সাধারণ মানুষের নেই বলে উল্লেখ করা হয়।
Comments are closed.