Azmal begs vote for Radheshyam by spreading panic of Hindutva, chaos in Chandrapur bye-pass meeting
হিন্দুত্ববাদের আতংক ছড়িয়ে করিমগঞ্জ লোকসভা আসনে এআইইউডিএফ দলের প্রার্থী রাধেশ্যাম বিশ্বাসকে জয়ী করার আহবান জানালেন সাংসদ বদর উদ্দিন আজমল।। সোমবার সন্ধ্যায় হাইলাকান্দি জেলার লালার চন্দ্রপুর বাইপাস এলাকায় দলীয় প্রার্থী রাধেশ্যাম বিশ্বাসের সমর্থনে আয়োজিত এক নির্বাচনী জনসভায় অংশ নিয়ে এআইইউডিএফ সুপ্রিমো বদরুদ্দিন আজমল তাঁর সংক্ষিপ্ত ভাষনে উপস্থিত সংখ্যালঘু ভোটার নাগরিকদের মধ্যে হিন্দুত্ববাদের আতংক ছড়িয়ে বলেন, ভারতবর্ষকে হিন্দু রাষ্ট্র বানাতে চায় বিজেপি। আর এই গেরুয়া দল ভারতের সংবিধান, সহ ইসলাম ধর্ম এবং ইমানের শত্রু। ওই দল ক্ষমতায় ফের ক্ষমতায় এলে ভারতের সংবিধান বদলে দেবে। ওরা তক্কি, দাড়ি, মসজিদ, আজান এসব চায় না। তাই তিনি ওই দলকে ক্ষমতাচ্যুত করতে করিমগঞ্জ আসনে ইউডিএফ প্রার্থী রাধেশ্যাম বিশ্বাস কে জয়ী করার আহবান জানান।।
আজমল এদিন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির মেইক ইন ইন্ডিয়া কার্যসূচিকে সুপার ফ্লপ আখ্যা দিয়ে বলেন, বিগত পাঁচ বছর নরেন্দ্র মোদি শুধুই বিদেশ সফর করে মেইক ইন ইন্ডিয়া, কর্মসংস্থান, অ্যাকাউন্টে পনের লক্ষ টাকা জমা হওয়ার প্রতিশ্রুতি দিলেও বাস্তবে কিছুই হয় নি।। তিনি বিজেপি দলকে সাম্প্রদায়িক আখ্যা দিয়ে বলেন, ওই দল শাহনাজ হোসেন সহ কোন মুসলিমকে দলীয় টিকিট দেয় নি।। তাই তিনি এই দলকে ক্ষমতাচ্যুত করতে করিমগঞ্জ আসনে ইউডিএফ প্রার্থী রাধেশ্যাম বিশ্বাসকে ভোট দানের আর্জি জানান।
এদিন আজমল কংগ্রেসেরও সমালোচনা করে বলেন, বৃহত্তর স্বার্থে রাজ্যের মাত্র তিনটি আসনে ইউডিএফ প্রার্থী দিয়ে বাকি এগারোটি আসন কংগ্রেসের জন্য ছেড়ে দিয়েছে। কিন্ত কংগ্রেস বিনিময়ে প্রতারণা করেছে।।। আজমল এদিন জোরগলায় দাবি করে বলেন করিমগঞ্জ, ধুবড়ি ও বরপেটায় ইউডিএফ প্রার্থীরা জয়ী হবেন।।। তিনি বলেন, বিজেপিকে আটকাতে ইউডিএফ ত্যাগ স্বীকার করেছে। অথচ কংগ্রেস করে নি। আর এতেই প্রমাণিত হচ্ছে, বিজেপির সাথে কংগ্রেসের মিত্রতা রয়েছে। হাইলাকান্দি জেলা এআইইউডিএফ সভাপতি আবজল হোসেন লস্করের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত এদিনের নির্বাচনী সভার শুরুতে জনাকয়েক যুবকের উশৃংখল আচরণে সভাস্থলে বিশৃঙ্খলার সৃষ্টি হয়। আর এতে সভার ছন্দপতন হয়। একদিকে দুর্বল সাউন্ড সিস্টেম আর অন্যদিকে জনাকয়েক যুবকের হাল্লা,চিৎকারে শুরুতে বক্তারা বার বার বাধার সম্মুখীন হন। যদিও একসময় ধিং এর বিধায়ক আমিনুল ইসলাম মাইক ধরে এধরনের অপ্রত্যাশিত আচরণের পেছনে প্রাক্তন মন্ত্রী গৌতম রায়ের হাত রয়েছে বলে সরাসরি অভিযোগ তুলেন। বলেন, গৌতম রায়ের ইশারায় আজমলের সভায় বিশৃঙ্খলার সৃষ্টি করে মিডিয়ায় প্রচারের ষড়যন্ত্র করা হয়েছে।। সভা বানচাল করতেই এ ধরনের চক্রান্ত করা হয়েছে।
সভায় বক্তব্য রাখতে গিয়ে কাটলিছড়ার বিধায়ক সুজাম উদ্দিন লস্কর জোর গলায় দাবি করে বলেন, হাইলাকান্দি জেলায় ইউডিএফ সরকার রয়েছে। তিন বিধায়ক থেকে শুরু করে জেলা পরিষদ, আঞ্চলিক পঞ্চায়েত, পঞ্চায়েতে এ আই ইউ ডি এফ প্রতিনিধিরা রয়েছেন। যার ফলে আগামী লোকসভা নির্বাচনে রাধেশ্যাম বিশ্বাস হাইলাকান্দি জেলার পঁচানব্বই শতাংশ ভোট পাবেন। সুজাম উদ্দিন লস্কর বলেন, বিগত দিনে কংগ্রেস প্রার্থী ললিত মোহন, নেপাল দাসকে ভোট দিয়ে দিল্লিতে পাঠালেও বাস্তবে গ্রামের জনগণের কোন কাজ হয় নি। সাংসদ রাধেশ্যাম বিশ্বাস দিল্লিতে গিয়ে বিগত পাঁচ বছর এন আর সি, নাগরিকত্ব, উগ্রপন্থী সমস্যা ইত্যাদি ইস্যু নিয়ে সোচ্চার ছিলেন।
সুজাম উদ্দিন প্রাক্রন মন্ত্রী গৌতম রায়ের সমালোচনা করে বলেন, বিজেপি কে জিতিয়ে তিনি ও তাঁর পুত্র রাহুল রায় গেরুয়া বিগ্রেডে যোগ দিতে গোপন তৎপরতা শুরু করেছেন।৷ কংগ্রেস আর ইউডিএফ দলের মধ্যে ভোট ভাগ বাটোয়ারা করে বিজেপিকে জেতাতে গৌতম রায় গোপন তৎপরতা চালাচ্ছেন বলে বিধায়ক সুজাম উদ্দিন লস্কর মন্তব্য করেন । বিগত দিনে সুলতানিছড়া চা বাগানে সংখ্যালঘু পরিবারকে উচ্ছেদের পেছনে কংগ্রেস প্রার্থী স্বরূপ দাস জড়িত ছিলেন বলে চাঞ্চল্যকর অভিযোগ তুলেন তিনি।
এদিনের নির্বাচনী সভায় বিজেপি ও কংগ্রেসের তীব্র সমালোচনা করে অন্যদের মধ্যে বিধায়ক আনোয়ার হোসেন লস্কর, আজিজ আহমেদ খান, হাফিজ বসির আহমেদ ক্বাসিমি, আদির্য লাংথাসা, আব্দুল আজিজ, প্রার্থী রাধেশ্যাম বিশ্বাস প্রমুখ বক্তব্য রাখেন।
Comments are closed.