Barak Book Fair from 15th November, international publishers likely to participate
ত্রিপুরা, পশ্চিমবঙ্গ এবং অসমের বিভিন্ন এলাকার প্রকাশকদের সঙ্গে এবারের শিলচরের বই মেলায় যোগ দিচ্ছেন বাংলাদেশের ঢাকা ও সিলেটের প্রকাশকরাও। এই অর্থে এবারের বইমেলা আন্তর্জাতিক বইমেলার স্বীকৃতি পাচ্ছে। ১৫ নভেম্বর থেকে শুরু হচ্ছে বরাক উপত্যকা বঙ্গ সাহিত্য ও সংস্কৃতি সম্মেলন আয়োজিত ‘বরাক বইমেলা ২০১৯’। শিলচরের বিপিনচন্দ্র পাল সভাস্থলে দশ দিন ব্যাপী চলবে মেলাটি, ২৪ নভেম্বর শেষ হবে এটি।
বরাক উপত্যকা বঙ্গ সাহিত্য ও সংস্কৃতি সম্মেলনের কেন্দ্রীয় কার্যনির্বাহী কমিটির সাধারণ সম্পাদক গৌতম প্রসাদ দত্ত, কাছাড় জেলা সমিতির সম্পাদক জয়ন্ত দেব রায়, বইমেলার আহবায়ক প্রদীপ আচার্যরা জানিয়েছেন, এবার মোট ৪৫টি স্টল নিয়ে বইমেলা আয়োজন করা হবে। কলকাতা, আগরতলা, গুয়াহাটি এবং শিলচরের সঙ্গে এবার থাকছেন ঢাকা এবং সিলেটের প্রকাশকরাও। পরিকাঠামোগত দিক থেকে জাতীয় স্তরের বইমেলার মতোই উন্নত করা হয়েছে এবারের আয়োজনটি। ১৫ নভেম্বর বইমেলা উদ্বোধন করবেন বিশিষ্ট কথা সাহিত্যিক তথা সাহিত্য আকাডেমী পুরস্কার প্রাপ্ত অনুবাদক শ্যামল ভট্টাচার্য। বিশিষ্ট অতিথি হিসেবে যোগ দেবেন মুখ্যমন্ত্রীর মিডিয়া উপদেষ্টা হৃষীকেশ গোস্বামী। সঙ্গে থাকবেন আন্তর্জাতিক স্তরের প্রকাশক লুৎফুর রহমান সহ অন্যান্যরা। উদ্বোধনী অনুষ্ঠান এদিন বিকেলে আয়োজিত হবে এবং এর আগে সকালে একটি সচেতনতামূলক শোভাযাত্রা করা হবে। দশদিন ব্যাপী বইমেলায় থাকছে বিভিন্ন ধরনের আলোচনা, সাহিত্য-আড্ডা, বহুভাষিক কবি সম্মেলন, সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান ইত্যাদি। বইমেলাকে সাধারণ মানুষের মধ্যে পৌঁছে দিতে বরাক বঙ্গের তরফে উপত্যকার বিভিন্ন বিদ্যালয়ের সাথে যোগাযোগ করা হয়েছে। ছাত্র-ছাত্রীদের মধ্যে বই পড়ার প্রবণতা বাড়িয়ে তুলতে হবে, এই উদ্দেশ্যে বিভিন্ন অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হবে বইমেলায়, এমনটাই জানালেন আয়োজকরা। “এবার বরাক উপত্যকার তিন জেলা মিলে কেন্দ্রীয়ভাবে একটি বইমেলা আয়োজন হচ্ছে। এতে প্রথমবারের মতো অংশ নিচ্ছেন ঢাকা এবং সিলেটের প্রকাশকেরা। অতীতেও তারা আমাদের আমন্ত্রণে অনেকবার চেষ্টা করেছেন তবে বিভিন্ন কারণে বই নিয়ে শিলচর এসে পৌঁছাতে পারেননি। এবার বাংলাদেশের বেশকিছু প্রথম সারির প্রকাশক নিজেদের বইপত্র নিয়ে শিলচরের বই মেলায় যোগ দিচ্ছেন এটা এবারের বিশেষ প্রাপ্তি”। এছাড়াও গুয়াহাটির ন্যাশনাল লাইব্রেরী প্রথমবারের মতো শিলচরে বই মেলায় অংশ নিচ্ছে। সব মিলিয়ে এবারের বইমেলায় বইয়ের দিক থেকে অনেক নতুনত্ব থাকবে।
পশ্চিমবঙ্গ, ত্রিপুরার মত রাজ্যে সরকারের তরফে বইমেলা আয়োজনের বিশেষভাবে সহযোগিতা করা হয়। বিভিন্ন ক্ষেত্রে বই বিক্রির ব্যাপারে সরকারি সাহায্য ও পাওয়া যায়। তবে শিলচরে প্রায় তিন দশকের বেশি সময় ধরে বইমেলা আয়োজন করার পরেও রাজ্য সরকার শিলচরে বইমেলা আয়োজন নিয়ে কোন ধরনের সাহায্য বা সহযোগিতার হাত বাড়িয়ে দেন না।
বইমেলায় বিশেষ অতিথি হিসেবে মুখ্যমন্ত্রীর মিডিয়া উপদেষ্টা হৃষীকেশ গোস্বামী যোগ দিচ্ছেন, তার উপস্থিতিতে কাছে এগুলো সমস্যার সমাধানের দিকে এগোনো যাবে বলে আশা করছেন আয়োজকরা। তবে সরকারি সাহায্যের বাইরেও বইমেলাকে টিকিয়ে রাখতে হলে মূলত সাধারণ মানুষের মধ্যে বই পড়ার প্রবণতাকে জাগিয়ে তুলতে হবে। আজকের যুগের যুবপ্রজন্ম অ্যান্ড্রয়েড-নির্ভর জীবন যাপন করছে। বই পড়ার প্রতি তাদের একটা অনীহা রয়েছে, বিশেষ করে বাংলা বইয়ের প্রতি। এধরনের মেলা আয়োজন করার ফলে তারা হয়তো বছরে একবার হলেও বই পড়ার দিকে কিছুটা আকৃষ্ট হবেন। এই ধারাকে আরো সরল করে তুলতে বিভিন্ন অনুষ্ঠান আয়োজন করা হচ্ছে। তবে সরকারের পক্ষ থেকে কিছুটা সহযোগিতা পাওয়া গেলে ভবিষ্যতে এই ধারাকে বজায় রাখা সম্ভব হবে। তা না হলে হয়তো একটা সময় আসবে আর বইমেলা আয়োজন করতে সমর্থ নাও হতে পারে সংস্থা। বরাক বঙ্গ আশা করছে শিলচর তথা বরাক উপত্যকার মানুষ আমাদের এই উদ্যোগকে সফলতার দিকে নিয়ে যেতে এগিয়ে আসবেন।
Comments are closed.