Also read in

Barak Valley Voluntary Blood Donors Forum wins first prize tenth time in thirteen years

হ্যাঁ, ২০০৬ সালে পুরস্কার প্রদান শুরু হওয়ার পর থেকে তেরো বছরের মধ্যে দশবার-ই প্রথম পুরস্কার পেল বরাক ভেলী ভলান্টারি ব্লাড ডোনার্স ফোরাম।

রাজ্যে স্বেচ্ছা রক্তদান আন্দোলনকে উৎসাহিত করার লক্ষ্যে ২০০৬-০৭ সাল থেকে রাজ্য রক্ত সঞ্চরণ পর্ষদ এবং আসাম রাজ্য এইডস নিয়ন্ত্রণ সংস্থার উদ্যোগে স্বেচ্ছা রক্তদান শিবির আয়োজকদের পুরস্কৃত করা শুরু হয়। সেই সময় গোটা রাজ্যে নিয়মিত স্বেচ্ছা রক্তদান শিবির আয়োজক সংগঠন প্রায় ছিলোই না৷ সত্যি বলতে কি, এখনো তেমন সংগঠনের সংখ্যা অঙ্গুলিমেয়। সেদিক দিয়ে দেখতে গেলে ২০০২ সালে গঠিত বরাক ভ্যালি ভলান্টারি ব্লাড ডোনার্স ফোরামই রাজ্যের প্রথম নিয়মিত রক্তদাতা সংগঠন। রক্তদানকে এক সামাজিক আন্দোলনের রূপ দেওয়ার শুরুয়াৎ করার কৃতিত্ব অবশ্যই ফোরামের।

Silchar MLA Dilip Paul donating blood
Silchar MLA Dilip Paul donating blood

সেই প্রথম বছর (২০০৬-০৭) থেকে লাগাতার চার বছর রাজ্যের সেরা রক্তদাতা সংগঠনের শিরোপা দখল করে বরাক ভ্যালি ভলান্টারি ব্লাড ডোনার্স ফোরাম। কিন্তু ২০১০-১১ অর্থবর্ষে তেরাপন্থ যুব পরিষদ একই দিনে রাজ্যব্যাপী প্রায় ২৫টি মেগা ক্যাম্পের আয়োজন করে। এতে উৎসাহিত হয়ে মাড়োয়াড়ি যুব মঞ্চও প্রচুর রক্তদান শিবির আয়োজন করে। ফলে তারাই প্রথম ও দ্বিতীয় স্থান অধিকার করে নেয়, ফোরাম নেমে আসে তৃতীয় স্থানে। পরের বছর ফোরাম দ্বিতীয় স্থানে উঠে আসে। ২০১৩-১৪ তে আবার প্রথম হয় ফোরাম। প্রতিযোগিতার ক্ষেত্র তৈরি হয়ে যায়। ২০১৪-১৫ তে আবার দ্বিতীয়। কিন্তু তার পর থেকে ফোরাম তাদের কাজকর্মের পরিধি বাড়ায়। ২০১৫-১৬ থেকে আর পিছন ফিরে তাকাতে হয়নি ফোরামকে, প্রতিবারই শীর্ষে থেকেছে তারা। ১৪ নভেম্বর গুয়াহাটিতে অনুষ্ঠিত সিলেকশন মিটিঙের ফলাফলেও দেখা যাচ্ছে, এবারও রাজ্যের সেরা রক্তদাতা সংগঠনের সম্মান পেতে চলেছে ফোরাম। দ্বিতীয় ও তৃতীয় স্থানে রয়েছে তেরাপন্থ যুব পরিষদ ও মাড়োয়াড়ি যুব মঞ্চ।

এখানে উল্লেখ্য যে, বরাকের ফোরামের উদ্যোগে ডিব্রুগড়, কামরূপ, শোণিতপুর, বঙ্গাইগাঁও, ধুবড়ি, দরং, চিরাং, লক্ষীমপুর, তিনসুকিয়া, শিবসাগর ও চরাইদেউ জিলায়ও জিলা ভিত্তিক রক্তদাতা ফোরাম গঠিত হয়েছে এবং সবগুলো সংগঠনই রক্তদাতা তৈরি এবং রক্তদান সম্পর্কিত কাজকর্ম শুরু করছে। এ বছরের রিপোর্ট অনুযায়ী ডিব্রুগড় ব্লাড ডোনার্স ফোরাম রাজ্যের সেরা তালিকায় সপ্তম স্থান দখল করেছে। মাত্র ১৬ জন রক্তদাতা কম হওয়ায় দশম স্থান পাওয়া থেকে বঞ্চিত হয়েছে ওয়েস্টার্ন আসাম ভলান্টারি ব্লাড ডোনার্স ফোরাম। প্রতিযোগিতায় ছিল কামরূপ ব্লাড ডোনার্স ফোরামও। রক্তদান শিবিরের সংখ্যা বেশি হলেও মোট রক্তদাতার সংখ্যা কম হওয়ায় তারা সেরা তালিকায় জায়গা পেতে ব্যর্থ হয়েছে।
সরকারী ভাবে পুরস্কার প্রথা চালু হওয়ার মোট তেরো বছরের মধ্যে দশ বার প্রথম, দুইবার দ্বিতীয় এবং একবার তৃতীয় হওয়া বরাক ভ্যালি ভলান্টারি ব্লাড ডোনার্স ফোরাম নিঃসন্দেহে বরাকবাসীর গর্বের সংগঠনে পরিণত হয়েছে। ফোরামের প্রতিষ্ঠাতা সম্পাদক আশু পাল জানিয়েছেন, “রক্তদানে এই শ্রেষ্ঠত্বের কৃতিত্বের দাবীদার হচ্ছেন বরাকের রক্তদাতাবৃন্দ, রক্তদান শিবির আয়োজক সংস্থা সমূহ ও ফোরামের প্রত্যেক সদস্য সৈনিক।” তিনি আশা প্রকাশ করেছেন, রাজ্যসেরা সম্মানের এই ধারাবাহিকতাকে অমলিন রাখতে বরাকের সর্বস্তরের জনগণ, বিশেষ করে যুব সমাজ আগামী দিনে আরো বেশি বেশি করে স্বেচ্ছা রক্তদানের পথে এগিয়ে আসবেন।

সাফল্যের খতিয়ান:
২০০৬-০৭ – প্রথম
২০০৭-০৮ – প্রথম
২০০৮-০৯ – প্রথম
২০০৯-১০ – প্রথম
২০১০-১১ – তৃতীয়
২০১১-১২ – প্রথম
২০১২-১৩ – দ্বিতীয়
২০১৩-১৪ – প্রথম
২০১৪-১৫ – দ্বিতীয়
২০১৫-১৬ – প্রথম
২০১৬-১৭- প্রথম
২০১৭-১৮ – প্রথম
২০১৮-১৯ – প্রথম

আগামী ১লা ডিসেম্বর, বিশ্ব এইডস দিবসে গুয়াহাটির শঙ্করদেব কলাক্ষেত্রে স্বাস্থ্যমন্ত্রী হিমন্তবিশ্ব শর্মা রাজ্যের সেরা দশটি রক্তদাতা সংগঠনকে পুরস্কৃত করবেন।

Comments are closed.