Beaten by the mob in suspicion of theft, Abdul Matin lastly breathes last.
করিমগঞ্জের মালিপাড়ায় চুরির ঘটনাকে কেন্দ্র করে গনধোলাই এর শিকার হয়ে আব্দুল মতিন নামের এক ব্যক্তির মৃত্যুর ঘটনায় এলাকা জুড়ে চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়েছে। প্রকাশ্য দিবালোকে উত্তেজিত জনতার আক্রমণে আহত হয়ে শেষ পর্যন্ত শিলচর মেডিক্যাল কলেজে ভর্তি হতে হয় আব্দুল মতিনকে। কিন্তু দুদিন মৃত্যুর সঙ্গে লড়াই করলেও শেষ পর্যন্ত রবিবার প্রাণ হারান তিনি।
ঘটনাটি ঘটেছে উত্তর করিমগঞ্জ ফকিরাবাজার এলাকার সুপ্রাকান্দি মালিপাড়ায় । বিস্তারিত তথ্য মতে, কয়েকদিন আগে এখানকার এক বালিকা বিদ্যালয়ে চুরির ঘটনা ঘটে এবং গত শুক্রবার সেই চুরি যাওয়া লোহার গ্রিল নিয়ে যেতে দেখা যায় এক ফেরিওয়ালাকে । সন্দেহের চোখে গ্রামবাসীরা ফেরিওয়ালাকে চুরি হওয়া গ্রিলের আধা অংশ কোথা থেকে পেয়েছে জানতে চাইলে সেই ব্যক্তি ফকিরাবাজার এলাকার আব্দুল মতিন বলে এক ব্যক্তির নাম উল্লেখ করে । আর সেই থেকেই ঘটনার সূত্রপাত।
সুপ্রাকান্দি মালিপাড়ার উত্তেজিত স্থানীয়ারা সন্দেহের বশে আব্দুল মতিনকে রাস্তায় পেয়ে আটক করেন এবং এদের মধ্যে একাংশ উত্তেজিত জনতা নির্মম ভাবে অত্যাচার চালান তার উপর । গণধোলাই খেয়ে পালিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করলে মাথায় আঘাত করেন সেখানে উপস্থিত কোনও এক ব্যক্তি। ফলে আব্দুল মতিন নামের সেই ব্যক্তিটি মাটিতে পড়ে যান। শেষে খবর দেওয়া হয় পুলিশে । দুপুর নাগাদ ওসি উৎপল বরা এসে আহত আব্দুল মতিনকে উদ্ধার করেন এবং তাকে ভর্তি করানো হয় সদর হাসপাতালে।পরে ফেরিওয়ালা আকদ্দস আলীকে পুলিশ আটক করে। কিন্তু এদিকে অবস্থা শোচনীয় দেখে আব্দুলকে সেখান থেকে স্থানান্তরিত করা হয় শিলচর মেডিক্যাল কলেজে। দুদিন ধরে লড়াই করে ররিবার মৃত্যুবরণ করেন আব্দুল মতিন ।
এদিকে গত শুক্রবার গণরোষের শিকার হওয়া মতিনের পরিবারের পক্ষ থেকে করিমগঞ্জ সদর থানায় মামলা দায়ের করা হলে শনিবার পুলিশ স্বপন চন্দ এবং কাজল মালাকার নামের মালিপাড়ার দুই ব্যক্তিকে আটক করে । ররিবার আব্দুল মতিনের মৃত্যুর খবর চাউর হওয়ার পর পরিস্থিতি পরিবর্তন হতে থাকে । ইতিমধ্যে গণধোলাই এর ভিডিও আপলোড হতে থাকে সামাজিক মাধ্যমগুলোতে। মুহূর্তের মধ্যে ফেসবুক, হোয়াটসআপে শেয়ার হতে থাকে । দোষীদের উপযুক্ত শাস্তি প্রদানের জন্য ঘন ঘন দাবি উঠে । বিকালে মরদেহ বাড়িতে নিয়ে আসলে জড়ো হন কাতারে কাতারে মানুষ । আব্দুল মতিনের মৃতদেহ করিমগঞ্জ সুতারকান্দি গামী ৩১ নং জাতীয় সড়কের ফকিরাবাজার তেমাথায় রেখে সড়ক অবরোধের ডাক দেওয়া হয়।
এদিকে এই ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে পরিস্থিতি যে থমথমে হয়ে উঠবে সে খবর প্রশাসনের কাছে আগে থেকেই ছিল । যার কারণে সকাল থেকেই পুলিশ বাহিনী মোতায়েন থাকতে দেখা যায় ফকিরাবাজার এলাকায় । অবরোধের খবর পেয়ে ছুটে আসেন সদরের ওসি উৎপল বরা, সার্কেল অফিসার রাকেশ ডেকা, বিধায়ক কমলাক্ষ দে পুরকায়স্থ ।
অন্যদিকে সকালেই নিহতের বাড়িতে ঘটনার খোঁজ নেন বিধায়ক কমলাক্ষ দে পুরকায়স্থ সহ বিজেপি নেতা ইকবাল হুসেন, আলা উদ্দিন চৌধুরী, বজলুল হক প্রমুখ ।
সড়ক অবরোধ করে দোষীদের রাত্রের মধ্যে গ্রেফতার করার জন্য দাবি তোলেন অবরোধকারীরা । ক্ষতি পূরণ বাবদ সরকারি আর্থিক সাহায্য এবং আগামী চব্বিশ ঘন্টার মধ্যে বাকি অভিযুক্তদের গ্রেফতার করা হবে বলে সরকারের পক্ষে সার্কেল অফিসার আশ্বাস দিলে সড়ক অবরোধ প্রত্যাহার হয় সন্ধ্যা নাগাদ । সর্বশেষ পাওয়া খবর অনুযায়ী আটক দুই অভিযুক্ত ছাড়া বাকিরা ফেরার রয়েছে । পরিস্থিতি এখনও থমথমে রয়েছে । মালিপাড়ায় আধা সামরিক বাহিনী মোতায়েন করা হয়েছে ।
Comments are closed.