Also read in

BEEKSHAN's 21st Film Festival dedicated to Mrinal Sen and Kader Khan.

আসাম বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপিকা দূর্বা দেবের হাত ধরে আনুষ্ঠানিকভাবে শুরু হলো ২১তম বীক্ষণ চলচ্চিত্র উৎসবউৎসব। কিংবদন্তি নির্দেশক মৃণাল সেন, কৌতুক অভিনেতা কাদের খান এবং কবি নীরেন্দ্রনাথ চক্রবর্তীকে স্মরণ করে শুরু হলো চলচ্চিত্র উৎসবের। মঙ্গলবার সন্ধ্যায় গান্ধীভবনে এটি শুরু হয়। অতনু ঘোষ পরিচালিত বাংলা ছবি ‘ময়ূরাক্ষী’ প্রদর্শনের মাধ্যমে উৎসবটি শুরু হয়। তারপরেই পোল্যান্ডের ছবি ‘আফটার মেরেজ’ দেখানো হয়।

গত বছর যে কিংবদন্তি নির্দেশক অভিনেতা বা কবিরা পৃথিবী ছেড়ে চলে গেছেন, তাদের স্মরণ করা হয় প্রথমে। এক মিনিটের নীরবতা পালন করেন উপস্থিত অতিথিরা। মৃণাল সেন কাদের খান ও কবি নীরেন্দ্রনাথ কে উৎসর্গ করা হয় এবারের চলচ্চিত্র উৎসবটি। সদস্য রত্নদ্বীপ দেব প্রয়াত কিংবদন্তি দের বিষয়ে কথা বলেন। তিনি বলেন, মৃণাল সেনের মত নির্দেশক চলে যাওয়া ভারতীয় সিনেমার ক্ষেত্রে নক্ষত্র পতন, তবে না চাইলেও মেনে নিতে হয়। সিনেমা প্রেমী হিসেবে মৃণাল সেন আমাদের কাছে কত বড় নাম তা বলে বোঝানোর নয়। আমরা সিনেমার মাধ্যমে আমরা সম্মান জানাতে চাই।

অতিথিরা প্রদীপ প্রজ্জ্বলনের মাধ্যমে অনুষ্ঠানটি শুরু করেন এবং এতে দুটি সুন্দর গানের উপহার দেন তরুণ শিল্পী মাধব ঘোষ।
স্বাগত ভাষণে বীক্ষণ এর সদস্য কমল চক্রবর্তী বলেন, শুধু কয়েকটি সিনেমা একসঙ্গে প্রদর্শন করা় চলচ্চিত্র উৎসবের উদ্দেশ্য নয়, এর আসল উদ্দেশ্য হচ্ছে সাধারণ মানুষের মধ্যে ভালো সিনেমা দেখার রুচি তৈরি করা। তারা শহর থেকে শুরু করে গ্রামাঞ্চলের বিভিন্ন বিদ্যালয়, কলেজ ইত্যাদিতে পুরস্কার প্রাপ্ত সিনেমা প্রদর্শন করেছেন। দর্শকরা যেসব সিনেমার মধ্যে নিজেদের খুঁজে পান, সেগুলোই তারা মনে রাখেন। এতে ভাষা বা সিনেমার দৈর্ঘ্য এসব বাধা হয়ে দাড়ায় না। বাৎসরিক চলচ্চিত্র উৎসব আয়োজন করার পাশাপাশি বীক্ষণ সারা বছর ধরে বিভিন্ন জায়গায় প্রদর্শনের ব্যবস্থা করেন। এতে সাধারণ মানুষের মধ্যে সিনেমা দেখার রুচি তৈরি হচ্ছে বলে তাদের ধারণা। অনেক বাধা-বিপত্তির সম্মুখীন হলেও নিজেদের আদর্শ থেকে দূরে সরে যায়নি এবং কারো কাছ থেকে সাহায্য নিয়ে এই কাজটি করিনি। হিন্দি বাংলা সহ বিভিন্ন আঞ্চলিক ভাষায় সিনেমা দেখানো সহ আন্তর্জাতিক স্তরের সিনেমা ও আমরা এখানে দর্শকদের জন্য প্রদর্শন করতে পেরেছি।এসব করতে গিয়ে কখনো পাইরেসির মত মাধ্যমের সাহায্য নেওয়া হয়নি।

উল্লেখ্য প্রায় দুই দশক ধরে শিলচরে চলচ্চিত্র উৎসব আয়োজন করে আসছে বীক্ষণ সিনে কমিউন। এবার ২১তম আসরে ১৩ টি দেশের ১৬ টি ভাষায় ২১টি চলচ্চিত্র প্রদর্শন করবে তারা। জানুয়ারি গান্ধী ভবনে টানা পাঁচদিন চলবে চলচ্চিত্র উৎসবটি। তবে এবার আলাদা করে টিকিট বিক্রির ব্যবস্থা না করে আন্তর্জাতিক স্তরে ফিল্ম ফেস্টিভ্যালগুলোর মতই পুরো অনুষ্ঠানের জন্য একটি মাত্র ডেলিগেশন কার্ড থাকছে। চলচ্চিত্র প্রদর্শনের পাশাপাশি থাকছে স্পর্শমনি ফাউন্ডেশনের সহায়তায় ক্যুইজ প্রতিযোগিতাও।
প্রথম এবং শেষ দিন ছাড়া তিনদিনে পাঁচটি করে সিনেমা দেখানো হবে। সকাল ১১ টা, দুপুর ১টা, বিকেল ৩টে, সন্ধ্যা সাড়ে পাঁচটা এবং রাত ৮টা, এই পাঁচটি সময়ে সিনেমা দেখানো হবে। শেষের দিন অর্থাৎ ৫ই জানুয়ারি চারটি সিনেমা দেখানো হবে।

চলচ্চিত্র উৎসবের শেষের দিন সন্ধ্যায় অইঋদ্ধি স্পর্শমনি ফাউন্ডেশনের সহযোগিতায় সিনেমা ভিত্তিক ক্যুইজ কম্পিটিশন আয়োজন করা হবে। প্রয়াত অধ্যাপিকা অইঋদ্ধি ভট্টাচার্যের স্মৃতিতে প্রত্যেক বছর এই প্রতিযোগিতার আয়োজন করা হয়।

এবারের আসরে জার্মান, চিলি, স্পেনিশ, পোলিস, ইটালিয়ান, ফরাসী, মালি ইত্যাদি বিদেশী ভাষার ছবিসহ বাংলা, হিন্দি, মারাঠি ইত্যাদি ভারতীয় ভাষার সিনেমাও দেখানো হবে। চলচ্চিত্র উৎসবের ডেলিগেশন কার্ড আবাহন এবং বাতায়ন সহ বীক্ষণ সিনে কমিউন এর কার্যালয়ে পাওয়া যাবে।

Comments are closed.