Boat sinks in Sonbeel; one dead and one still missing
The English version of the story will be uploaded soon
নৌকা বিহারে শন বিলে অঘটন, মৃত -১ নিখোঁজ ১: নিরাপত্তা ব্যবস্থা প্রশ্নের মুখে
শনবিলকে পর্যটন স্থল গড়ে তোলার রাজ্য সরকারের প্রয়াস প্রথমেই হোঁচট খেল। গতকাল বিকেল প্রায় সাড়ে তিনটার সময় শনবিলে নৌকা নিয়ে বেড়াতে গিয়ে ঘটে গেল অঘটন; নৌকাডুবিতে প্রাণ হারালো এক যুবক, এখনো সন্ধানহীন অপর একজন । উদ্ধার করা হলো ৯ জন যুবককে। ওরা এখনও চিকিৎসাধীন রয়েছে।
উদ্ধার অভিযান চালাচ্ছিল স্থানীয় জনসাধারণ এবং কালীবাড়ি পুলিশ। মধ্যরাত অবধি এসডিআরএফ টিমের দেখা পাওয়া যায়নি।
এখন ভরা বর্ষার মরসুম,তার ওপর চলছে লাগাতার বৃষ্টিপাত । শনবিল ফুলে-ফেঁপে প্রায় সমুদ্রের রূপ নিয়েছে । তাই ওদের সাপ্তাহিক ছুটির দিনে একদল স্বর্ণকার যুবক শন বিলে নৌকা বিহারে গিয়ে নৌকাডুবিতে এই অঘটনের শিকার হয় বৃহস্পতিবার শেষ বিকেলে। ফাকুয়াগ্রাম থেকে মেশিন নৌকা নিয়ে এই যুবক দল আনন্দ বাজারের উদ্দেশ্যে রওয়ানা হয়ে কালীবাড়ি পুলিশ ফাঁড়ির অন্তর্গত মোকাম কালীবাড়ি সংলগ্ন এলাকায় যাওয়ার পর হঠাৎ এই অঘটন ঘটে।
জানা গেছে, পাথারকান্দি থানা এলাকার কানাই বাজারের বিভিন্ন জুয়েলারির কর্মীরা পূর্বপরিকল্পনা অনুযায়ী একদিন সাপ্তাহিক ছুটি থাকায় শনবিলে নৌকাবিহারে যায় । মোট ১১ জনের যুবক দলের মধ্যে শিলচরের মিঠু মালাকার ছিল। কর্মসূত্রে কানাইবাজার থাকে সে, বাকি সবাই কানাই বাজারের স্থায়ী বাসিন্দা। অন্যান্যদের মধ্যে দলে ছিল মনোজ দেবনাথ, সুধাংশু দেবনাথ নিশি দেবনাথ,বট্টু দেবনাথ, অভিজিৎ দেবনাথ দেবনাথ, সুমন দেবনাথ, বিশ্ব দেবনাথ, নকুল দেবনাথ এবং অপর এক সুমন দেবনাথ ।
দুর্ঘটনার পরই আশপাশে থাকা লোকজন এবং মাঝিরা উদ্ধার অভিযানে নেমে ৯ জনকে উদ্ধার করতে সক্ষম হলেও সন্ধানহীন থেকে যায় মনোজ ও সুধাংশু। উদ্ধার হওয়া নয়জনের মধ্যে ছয়জনকে ভর্তি করা হয় কালিবাড়ি প্রাথমিক হাসপাতালে, তিনজনকে বাজার ঘাটে ।খবর দেওয়া হয় পুলিশে ; কালিবাড়ি ফাঁড়ির ইনচার্জ তাৎক্ষণিকভাবে স্থানীয়দের সহযোগিতায় অভিযানে নামলে রাত সাড়ে আটটা নাগাদ মনোজ দেবনাথ এর মৃতদেহ উদ্ধার হয়। রাত এগারোটা অবধি এসডিআরএফ ঘটনাস্থলে পৌঁছেনি বলে জানা গেছে ।তবে স্থানীয় পুলিশের সহযোগিতায় জেলেরা উদ্ধার অভিযান চালিয়ে গেলেও অন্ধকার ও গভীর জলাশয় হওয়ায় উদ্ধারকাজে অসুবিধার সম্মুখিন হতে হচ্ছে।
এখানে উল্লেখ্য যে রাজ্যসরকার শনবিলকে পর্যটনস্থল হিসেবে গড়ে তুলতে এক বিরাট অংকের টাকা মঞ্জুর করেছেন। এখন শুধু ব্যক্তিগত উদ্যোগেই এখানে নৌকা বিহার চলছে; নৌকাগুলোতে সুরক্ষা ব্যবস্থার কোনো বন্দোবস্ত নেই। লাইফ জ্যাকেট বা এধরনের কোনো কিছুরই ব্যবস্থা নেই। জল কোনও কোনও স্থানে পনেরো-কুড়ি ফুট গভীর, হাওয়া চললে প্রায় সমুদ্রের ঢেউয়ের মতো ঢেউ সৃষ্টি হয়। এই অবস্থায় স্থানীয় প্রশাসনের পক্ষ থেকে কোনও ধরনের নিরাপত্তামূলক ব্যবস্থা না রাখাটা খুবই উদ্বেগের বিষয়। এক আকর্ষণীয় পর্যটন স্থল গড়ে তুলতে নিরাপত্তা ব্যবস্থা এবং যাত্রী সুরক্ষার দিকে কর্তৃপক্ষের নজর রাখতে হবে, নইলে এই পর্যটন স্থল গড়ে উঠার প্রয়াস অঙ্কুরেই বিনষ্ট হয়ে যাবে।
Comments are closed.