"Coming to Karimganj," Prime Minister tweets in Assamese
আজ প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি একই সঙ্গে পশ্চিমবঙ্গের পুরুলিয়া এবং বরাক উপত্যকার করিমগঞ্জ জেলায় নির্বাচনী সভায় যোগ দেবেন। তিনি টুইটারে আলাদা আলাদাভাবে এগুলো ঘোষণা করেছেন। তবে লক্ষণীয় বিষয় হচ্ছে পুরুলিয়ায় যাওয়ার কথা বাংলায় লিখলেও করিমগঞ্জে আসার কথা লিখেছেন স্পষ্ট অসমীয়া ভাষায়। পাশাপাশি রয়েছে ইংরেজিতেও টুইট। তবে মূল সমস্যা অসমীয়ায় টুইট নিয়ে নয়, অসম চুক্তির ৬-নম্বর ধারা বাস্তবায়নের যে প্রয়াস সরকার নিচ্ছে তার কোনো ঘোষণা প্রধানমন্ত্রীর তালিকা রয়েছে কিনা এটাই দেখার বিষয়। তিনি করিমগঞ্জে দাঁড়িয়ে হয়তো এমন কোনো ঘোষণা করে দিতে পারেন যেটা উপত্যকার বাঙ্গালীদের স্বার্থের পরিপন্থী হতে পারে, এমন একটা চাঁপা আতঙ্ক দেখা দিয়েছে।
করিমগঞ্জে আসার ব্যাপারে প্রধানমন্ত্রী লিখেছেন, “কাইলৈ, ১৮ মাৰ্চত অসমত থাকিম। কৰিমগঞ্জৰ ৰেলীৰ সময়ত এই মহান ৰাজ্যৰ জনসাধাৰণৰ মাজত থকাৰ বাবে আগ্ৰহেৰে অপেক্ষা কৰিছো। বিগত ৫ বছৰত বিভিন্ন খণ্ডত অসমে বহুতো যোগাত্মক পৰিৱৰ্তন প্ৰত্যক্ষ কৰিছে। এই উন্নয়নৰ কাৰ্যাৱলী আগুৱাই নিয়াৰ বাবে এন ডি এই ৰাইজৰ আশীৰ্বাদ বিচাৰিছে।”
পুরুলিয়ায় যাওয়ার ব্যাপারে প্রধানমন্ত্রী টুইটের ভাষ্য হচ্ছে, “আগামীকাল, ১৮ই মার্চ আমি আমার পশ্চিমবঙ্গের ভাই ও বোনেদের মধ্যে উপস্থিত থাকার সুযোগ পেয়ে আনন্দিত। আমি পুরুলিয়ায় একটি জনসভায় বক্তব্য রাখবো। পশ্চিমবঙ্গ জুড়ে, পরিবর্তনের আকাঙ্খা জেগেছে। বিজেপি-র সুশাসনের কর্মসূচী জনগণের মধ্যে এক সুরেলা ধ্বনি তুলেছে।”
অতীতে বরাকের মাটিতে দাঁড়িয়ে প্রধানমন্ত্রী ঘোষণা করে গেছেন, তার সরকারের শাসনকালে অসম চুক্তির ৬-নম্বর ধারা বাস্তবায়িত হবে। পরবর্তীতে এই ধারা বাস্তবায়নের জন্য একটি বিশেষ দল গঠন করা হয় এবং সেখানে বরাক উপত্যকার কোনও প্রতিনিধিত্ব ছিলনা। গত বছর ডিসেম্বর মাসে মুখ্যমন্ত্রী সর্বানন্দ সোনোয়াল আসাম বিশ্ববিদ্যালয়ের সমাবর্তন অনুষ্ঠানে এসে অসম আন্দোলনের শহীদদের শ্রদ্ধা জানিয়েছেন। পরবর্তীতে প্রজাতন্ত্র দিবসের অনুষ্ঠানে দাঁড়িয়ে অসম আন্দোলনের শহীদদের শ্রদ্ধা জানান মন্ত্রী পরিমল শুক্লবৈদ্য, তবে সরকারিভাবে লেখা ভাষণে বরাকের ভাষা শহীদদের উল্লেখ ছিলনা। এমনকি দলের কেন্দ্রীয় নেতৃত্বের তরফে জেপি নাড্ডা যখন জানুয়ারি মাসে শিলচরে এক দলীয় অনুষ্ঠানে যোগ দেন তিনিও ‘জয় আই অহোম’ বলেছিলেন।
অসমের মাটিতে দাঁড়িয়ে ‘জয় আই অহোম’ বলা অথবা অসম আন্দোলন এবং অসম চুক্তির উল্লেখ করা অস্বাভাবিক নয়। তবে উপত্যকার বাঙ্গালীদের অস্তিত্বের নানান বিষয় একেবারেই অবহেলা করে যেভাবে অসম চুক্তি এবং অসম আন্দোলনের প্রচার হচ্ছে, এতে উপত্যকার একাংশ মানুষ অশনিসংকেত লক্ষ্য করছেন। আগামীতে যদি রাজ্যে অসম চুক্তির ৬-নম্বর ধারা বাস্তবায়িত হয় এবং ভূমিপুত্রের সংজ্ঞা থেকে বাদ পড়েন বাঙালি সম্প্রদায়ের লোকেরা, তাহলে তাদের ভবিষ্যৎ কঠিন হয়ে পড়বে।
তবে আতঙ্ক আপাতত অনেকটাই জল্পনা-ভিত্তিক, প্রধানমন্ত্রীর সভা শেষ হলে পরে পুরো বিষয় পরিষ্কার হবে।
Comments are closed.