"Drugs is smuggled in Barak Valley through Myanmar via China," DGP Bhaskar Jyoti Mahanta
মায়ানমার থেকে বরাক উপত্যকায় ড্রাগস পাচারে সাহায্য করছে চিন: ডিজিপি ভাস্কর জ্যোতি
মনিপুর-মিজোরাম হয়ে বরাক উপত্যকায় প্রচুর পরিমাণে ড্রাগস ঢুকছে। এরপর রাজ্যের বিভিন্ন এলাকায় এই ড্রাগসগুলো ছড়িয়ে যায়। একই সঙ্গে সংশোধিত নাগরিকত্ব আইন (কা) বিরোধী আন্দোলনকারীদের যারা আন্দোলনের নামে অশান্তি ছড়াচ্ছে তাদের বেশিরভাগই নিষিদ্ধ ড্রাগ সেবন করে। রাজ্যের আরক্ষী সঞ্চালক প্রধান ভাস্কর জ্যোতি মহন্ত একথাগুলো উল্লেখ করেন। এই ড্রাগসগুলো মায়ানমারে চাষ হয়। আর এই ড্রাগসের চাষ এবং সাপ্লাইয়ের ক্ষেত্রে সবচেয়ে বেশি সাহায্য করছে চিন। বঙ্গভবনে শনিবার বরাক উপত্যকার তিন জেলার সাধারণ মানুষের সঙ্গে আলোচনা প্রসঙ্গে তিনি একথাগুলো উল্লেখ করেন। এখানে উল্লেখ করা যেতে পারে, কাছাড় পুলিশ আয়োজিত ‘মুখোমুখি’ অনুষ্ঠানে যোগদান করার উদ্দেশ্যে ভাস্কর জ্যোতি মহন্ত শিলচর এসেছেন।
তিনি তার বক্তব্যে উল্লেখ করেন, সংশোধিত নাগরিকত্ব আইন পাশ হওয়ার পর গুয়াহাটি সহ রাজ্যের বিভিন্ন এলাকায় ‘কা’ এর বিরোধিতা করে আন্দোলনের নামে যুবকরা অশান্তির সৃষ্টি করছে। আন্দোলন চলছে প্রায় দুই মাস ধরে। এই আন্দোলনকারীরা আসলে ড্রাগস সেবনকারী বলে তিনি উল্লেখ করেন এবং এর স্বপক্ষে তথ্য সহ যুক্তি উত্থাপন করেন। তিনি জানান, এই আন্দোলন যখন অশান্ত হয়ে ওঠে তখন তাদের ওপর রাবার বুলেট চালানো হয়। কিন্তু এর পর আশ্চর্যজনকভাবে দেখা গেল, আন্দোলনকারীরা গুলি খেয়েও ভাবলেশহীনভাবে হাসছে। যেখানে সাধারনত এই রাবার বুলেট গায়ে লাগলে যন্ত্রণায় কুঁকড়ে ওঠে মানুষ। এর পরই এই তথ্য সামনে আসে যে এই আন্দোলনকারীরা আসলে ড্রাগ সেবন করে। ফলে তাদের ব্যথা অনুভূত হয় না। এই নিষিদ্ধ ইয়াবা জাতীয় ট্যাবলেট খেলে সাত-আট ঘণ্টা পর্যন্ত কোন অনুভূতি থাকে না।
তার বক্তব্যে আরও জানা গেল, চিন এই ড্রাগস পাচারে সাহায্য করছে। বিশেষভাবে চিনের ওহাও অঞ্চল থেকে এই সাহায্য করা হচ্ছে। দেশের সরকার এগুলো বন্ধ করতে চাইলেও চিনের সহায়তায় মায়ানমারের সান এলাকায় নিষিদ্ধ পোস্ত চাষ হয়। মায়ানমার থেকে ভারতের মিজোরাম ও মনিপুর হয়ে বরাক উপত্যকার মধ্য দিয়ে বাংলাদেশের বাজারে এই ড্রাগসগুলো পৌঁছে দেওয়া হয়। কিন্তু বাংলাদেশে পুরোপুরি পাচার না হয়ে, এর এক অংশ বরাক উপত্যকা তথা অসমের বিভিন্ন এলাকায় পৌঁছে যায়।
শুধুমাত্র কাছাড় নয়, গোটা রাজ্যে তামাক বিরোধী অভিযান চালানোর কথা বলেন ডিজিপি। মতবিনিময় অনুষ্ঠানে এক প্রশ্নের উত্তরে তিনি এ কথার উল্লেখ করে বলেন, যতক্ষণ পর্যন্ত জনগণ সচেতন হবেন না ততক্ষণ পর্যন্ত আইন কিংবা নিয়ম কারোর সাহায্যে আসবেনা। এমনকি তামাক বর্জন এর ক্ষেত্রেও। ট্রাফিক সমস্যা নিয়েও তিনি বলেন যে ট্রাফিক সমস্যা নিরসনে সাধারণ মানুষের মধ্যে সচেতনতা বৃদ্ধি সবচেয়ে জরুরি।নিত্য নতুন নিয়ম বানিয়ে কিংবা নিয়ম ভাঙলে কঠোর ব্যবস্থা নিয়ে এই সমস্যার সমাধান হওয়ার নয়। পুলিশ কড়া পদক্ষেপ নিলে একাংশ জনগণ আন্দোলনে নেমে পড়তেও পিছপা হন না। কাজেই এ ক্ষেত্রে সফল হতে হলে জনগণকে এগিয়ে আসতে হবে। নিজের শহরের উন্নতি কিংবা শহরকে সুন্দর করে তুলতে নিজেরা যদি এগিয়ে আসেন কিংবা শহরকে পরিচ্ছন্ন রাখার চেষ্টা করেন তবে সমস্যা অনেকটাই মিটে যায়।
বরাক উপত্যকায় একটি ফরেনসিক ল্যাব তৈরি, অনলাইনে এফআইআর গ্রহণসহ বিভিন্ন স্মার্ট পদক্ষেপ গ্রহণ করা হবে বলে তিনি আশ্বাস দেন। তাছাড়া মানব পাচার রোধ করার উদ্দেশ্যে জেলার বিভিন্ন সামাজিক সংস্থার সঙ্গে মিলে পুলিশ কাজ করবে বলে জানান।
এদিনের অনুষ্ঠানে ডিজিপি ভাস্কর জ্যোতি মহন্ত ছাড়াও উপস্থিত ছিলেন প্রাক্তন কেন্দ্রীয় মন্ত্রী তথা বরিষ্ঠ বিজেপি নেতা কবীন্দ্র পুরকায়স্থ, পদ্মশ্রী ড: রবি কান্নান ডিআইজি দিলীপ কুমার, তিন জেলার পুলিশ সুপার সহ বিভিন্ন বিশিষ্ট ব্যক্তিবর্গ।
Comments are closed.