
Durga Puja: Administration prohibits construction of pandals on roads, appeals exclusion of plastic
‘মা আসছেন’। কথাটা বাঙালি মাত্রকেই আবেগিক করে তোলে। দূর্গা পূজার দিন যত ঘনিয়ে আসছে, বাঙালির আবেগ ততই বাড়ছে। আবেগের পাশাপাশি এবারের পূজায় দূর্গাপূজা উদযাপন কমিটিগুলোকে প্রয়োজনীয় কিছু পদক্ষেপ মাথায় রাখতে হবে। কাছাড় জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে এবার দুর্গাপূজায় কঠোর ব্যবস্থা গ্রহণ করা হচ্ছে। জনস্বার্থ বিঘ্নিত কোন পদক্ষেপকে জেলা প্রশাসন কঠোরভাবে মোকাবিলা করবে বলে প্রশাসনের পক্ষ থেকে জানানো হয়।
কাছাড়ের জেলাশাসক লায়া মাদ্দুরির পৌরহিত্যে সব পূজা কমিটির সদস্য এবং সংশ্লিষ্ট সরকারি বিভাগের আধিকারিকদের সঙ্গে অনুষ্ঠিত সভায় পূজা কমিটিগুলোকে রাস্তাঘাটের ক্ষতি তথা জনসাধারণের চলাচলে ব্যাঘাত না ঘটিয়ে প্যান্ডেলগুলো নির্মাণ করার জন্য আহ্বান জানানো হয়।ইতিমধ্যে যে প্যান্ডেলগুলো রাস্তার উপরে নির্মাণ করা হয়েছে সেগুলোকে অতিসত্বর সরিয়ে নেওয়ার জন্য নির্দেশ দেন অতিরিক্ত জেলাশাসক জেসিকা লালসিম। এবারের দূর্গাপূজায় প্লাস্টিক পুরোপুরি বর্জন করার জন্য বিশেষভাবে উল্লেখ করা হয়।
আরও বলা হয়, প্যান্ডেল নির্মাণে পূজা কমিটিগুলোকে পিডব্লিউডি রাস্তা, এনএইচ বিল্ডিং, এসএমবি’র অনুমতি নিতে হবে। তাছাড়া প্যান্ডেলগুলোতে অস্থায়ী বৈদ্যুতিক সংযোগ নেওয়ার জন্য এপিডিসিএল’র অনুমতি নিতে হবে। এপিডিসিএল থেকে যথাযথ অনুমতি না নিয়ে যদি কোনো পূজা কমিটি অবৈধভাবে বৈদ্যুতিক সংযোগ স্থাপন করে তাহলে তাদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলে উল্লেখ করেন অতিরিক্ত জেলা শাসক লালসিম।
শব্দ দূষণ বিষয়েও প্রশাসন এবার কড়া ব্যবস্থা নিচ্ছে। কোর্টের আদেশ ও শব্দদূষণ নিয়ন্ত্রণের নির্দেশিকা অনুযায়ী লাউড স্পিকারের সর্বাধিক মাত্রা ৬৫ ডেসিমেল অতিক্রম করতে পারবে না।তাছাড়া রাত দশটা থেকে সকাল আটটা পর্যন্ত সব ধরনের সাউন্ড সিস্টেম ব্যবহার নিষিদ্ধ করা হয়েছে। প্রতিমা বিসর্জনের ক্ষেত্রেও প্রসাশন কড়া ব্যবস্থা নিচ্ছে। প্রতিমা নিরঞ্জনের শোভাযাত্রায় ডিজে সিস্টেম ও মাইক নিষিদ্ধ করা হয়েছে। এদিকে কোন পুজো কমিটি যদি শব্দ দূষণ সম্পর্কে নিষেধাজ্ঞা না মানে এবং অনুমোদিত ডেসিবেলের সীমা লঙ্ঘন করে তাহলে শিলচর পৌরসভা তাদের কাছ থেকে জরিমানা আদায় করবে বলে জানিয়েছেন পুর সভাপতি নীহারেন্দ্র নারায়ন ঠাকুর। তাছাড়া প্রত্যেক পূজা কমিটিকে প্রতিমা নিরঞ্জনের শোভাযাত্রার সময় এবং রাস্তা সম্পর্কিত যাবতীয় তথ্য প্রশাসনকে আগে থেকেই জানাতে হবে।
এবারে সব পূজা প্যান্ডেলগুলোতে সিসিটিভির ব্যবস্থা থাকতে হবে। পুরুষ ও মহিলাদের লাইন আলাদা হতে হবে, প্যান্ডেলের প্রবেশদ্বারগুলোতে স্বেচ্ছাসেবক মোতায়েন করতে হবে বলে জানানো হয়।
জেলাশাসক লায়া মাদ্দুরি প্লাস্টিক সম্পূর্ণভাবে পরিত্যাগ করার জন্য সব পূজা কমিটির কাছে আবেদন রেখেছেন। এর পরিবর্তে যেকোনো পরিবেশবান্ধব সামগ্রী ব্যবহার করার পরামর্শ দেন তিনি।এমনকি প্রসাদ বিতরণের ক্ষেত্রে কলাপাতা ব্যবহার করার জন্য অনুরোধ করেন তিনি।জেলা প্রশাসন এবার দুর্গা পুজোতে শারদীয় পুরস্কার প্রদান করার কথা ঘোষণা করেছে।
প্রত্যেক পূজা কমিটিতে তরল ও কঠিন বর্জ্য নিরসনের জন্য পৃথকভাবে লাল ও সবুজ রঙের আলাদা আলাদা ডাস্টবিন রাখতে হবে। এসএলআরএম’র কর্মীরা বজ্র পদার্থগুলো পূজা প্যান্ডেলগুলো থেকে নিষ্পত্তি কেন্দ্রে নিয়ে যাবে বলে উল্লেখ করা হয়।
আসন্ন দুর্গাপুজোতে জনগণ যাতে সুষ্ঠুভাবে পূজা পরিদর্শন করতে পারেন, সঙ্গে পরিবেশ ও শব্দ দূষণ না হয় সেজন্য জেলা প্রশাসন এবার অধিক কঠোর হচ্ছে। জেলা প্রশাসন এজন্য প্রত্যেক পূজা কমিটিকে সহযোগিতা করার আহ্বান জানিয়েছে। এই অবস্থায় প্রত্যেক পূজা কমিটি জেলা প্রশাসনের নির্ধারিত পদক্ষেপ মেনে সুষ্ঠুভাবে পরিচালনা করবে এবং সাধারণ জনগণও সুশৃংখল পরিবেশে বাঙালির শ্রেষ্ঠ পূজা উপভোগ করতে পারবেন বলে আশা করা যায়।
এখানে উল্লেখ্য, রাস্তার উপরে অম্বিকাপট্টি, তারাপুর, হাইলাকান্দি রোড, সোনাই রোড প্রভৃতি অঞ্চলে বেশ বড় বড় কয়েকটি পুজো প্যান্ডেল নির্মাণ করা হয় প্রতিবছরই। এবার তার ব্যতিক্রম হবে কিনা সেটাই দেখার বিষয়।
Comments are closed.