Also read in

Insulting the fourth pillar of democracy is unfortunate, the culprits will be severely punished, says Chief Minister Sarbananda Sonowal

বৃহস্পতিবার মুখ্যমন্ত্রী সর্বানন্দ সোনোয়ালের সফরকালে স্থানীয় প্রশাসনের অব্যবস্থার ফলে অনুষ্ঠান কভার করতে আসা সাংবাদিকরা অপমানিত বোধ করেন এবং মুখ্যমন্ত্রীর অনুষ্ঠান পরিত্যাগ করেন। অনুষ্ঠান শেষ হওয়ার পর খবরটি মুখ্যমন্ত্রী সর্বানন্দ সোনোয়ালের কাছে যায়। তিনি দলের সাংসদ রাজদীপ রায়ের মাধ্যমে শনিবার স্থানীয় সংবাদ মাধ্যমের উদ্দেশ্যে একটি বার্তা পাঠান। তার বার্তায় বলা হয়েছে, “ঘটনাটি দুর্ভাগ্যজনক, এমনটা হওয়া কোনোভাবেই কাম্য ছিলনা। সংবাদমাধ্যম গণতন্ত্রের চতুর্থ স্তম্ভ, তাদের অসম্মান কোনোভাবেই মেনে নেওয়া যায় না। সরকারের পক্ষ থেকে আমরা দুঃখ প্রকাশ করছি এবং আশা দিচ্ছি আগামীতে এ ধরনের ঘটনার পুনরাবৃত্তি হবে না।”

শুক্রবার জেলাশাসক কার্যালয়ের কনফারেন্স হলে সাংসদ রাজদীপ রায় জেলাশাসক কীর্তি জল্লি, অতিরিক্ত জেলাশাসক সুমিত সত্যওয়ান, স্বাস্থ্য আধিকারিক সুমন চৌধুরীকে নিয়ে স্থানীয় সাংবাদিকদের সঙ্গে আলোচনায় বসেন। আলোচনা শুরুতেই তিনি জানান, মুখ্যমন্ত্রী বৃহস্পতিবার রাতের পুরো ঘটনাটি শুনেছেন এবং অত্যন্ত দুঃখিত হয়েছেন। তিনি স্পষ্ট জানিয়েছেন, গণতন্ত্রের চতুর্থ স্তম্ভ অর্থাৎ সংবাদমাধ্যমকে উপেক্ষা ব অপমান করা কোনওভাবেই মেনে নেওয়া হবে না। এই দুঃসময়ে অন্যান্য যোদ্ধাদের সঙ্গে সংবাদমাধ্যমের যোদ্ধারা সমানতালে পরিশ্রম করে যাচ্ছেন। তাদের পরিশ্রমের ফলেই সাধারণ মানুষ প্রত্যেক ঘটনার খবর পাচ্ছেন এবং নিজেদের সুরক্ষিত রাখতে পারছেন। শুক্রবারে যেহেতু তিন জেলার প্রতিনিধিদের সঙ্গে বৈঠক ছিল তাই সাংবাদিকদের মুখোমুখি হতে বিলম্ব হয়েছে। তবে যেভাবে সাংবাদিকদের সঙ্গে স্থানীয় প্রশাসন ব্যবহার করেছে এটা মুখ্যমন্ত্রী জানতেন না। রাতে সময় পেলে তিনি নিজে সাংবাদিকদের মুখোমুখি হতেন, কিন্তু পরিস্থিতির কারণে এটা সম্ভব হয়নি।
মুখ্যমন্ত্রী বা সরকারের যেকোনও সদস্য বরাক উপত্যকা বা ব্রহ্মপুত্র উপত্যকার সংবাদমাধ্যমকে অত্যন্ত শ্রদ্ধা করেন। যাদের উদাসীনতা এবং অবহেলার ফলে বৃহস্পতিবারের ঘটনাটি হয়েছে, তাদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেবে মুখ্যমন্ত্রীর কার্যালয়।

সাংসদ রাজদীপ রায় সেদিন মুখ্যমন্ত্রীর বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন। তিনি নিজেও একসময় নেমে এসে সংবাদকর্মীদের বোঝানোর চেষ্টা করেছিলেন। তবে তিনি পুরো ঘটনাটি জানতেন না। একই বয়ান জেলাশাসক কীর্তি জল্লিরও, তিনি বলেন পুরো ঘটনা তিনি জানেন না। শুক্রবার সাংবাদিকরা পুরো ঘটনা তার কাছে তুলে ধরেন। তারা বলেন, তথ্য ও জনসংযোগ বিভাগ থেকে সাংবাদিকদের জানানো হয়, তার জন্য দুপুর সাড়ে বারোটায় তারা জেলাশাসক কার্যালয়ে উপস্থিত হন, সেখানে মুখ্যমন্ত্রীর সাংবাদিক সম্মেলন থাকবে। সন্ধ্যা ৬টা ১৫ মিনিট নাগাদ আধিকারিকরা জেলাশাসক কার্যালয়ের নিচের তলায় সিঁড়ির পাশে একটি পোডিয়াম এবং মাইক বসিয়ে বলেন, এখানেই মুখ্যমন্ত্রী সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলবেন। জায়গাটির পাশেই রয়েছে কার্যালয়ের বাথরুম, দুর্গন্ধময় এবং সংকীর্ণ একটি প্যাসেজ। সাংবাদিকরা নিজেদের মধ্যে ঠিক করলেন যে সবাই পোডিয়ামের সামনে থাকবেন না, সামাজিক দূরত্ব মেনেই মুখ্যমন্ত্রীর বয়ান গ্রহণ করা হবে। অথচ সিঁড়ির পাশ দিয়ে তিন জেলার বিভিন্ন রাজনৈতিক কর্মী এবং সরকারি আধিকারিকরা বারবার উঠছেন আর নামছেন। কয়েকবার মুখ্যমন্ত্রীর সুরক্ষা কর্মীরা এসে সাংবাদিকদের বলেন, আপনার সরে দাঁড়ান। সাংবাদিকরা কথা রাখেন এবং সরে দাঁড়ালেন। এরপর হঠাৎ করে এক কালো বেশধারী সুরক্ষাকর্মী এসে রীতিমতো ধাক্কা দিয়ে সাংবাদিকদের সরিয়ে দিতে শুরু করলেন। উপস্থিত সাংবাদিকরা প্রথম ঠান্ডা মাথায় জিজ্ঞেস করলেন, অন্যরা যদি উপরে কনফারেন্স হলে বসে কথা বলতে পারেন তাহলে আমরা কেন সিঁড়ির পাশে এই ছোট্ট জায়গায় দাঁড়াবো। এতে আধিকারিকরা পাত্তাই দিলেন না, উল্টো সোশ্যাল ডিসটেন্সেংয়ের জ্ঞান দিতে থাকলেন। এক সময় সাংবাদিকরা চরম অপমানিত বোধ করে ঠিক করলেন তারা আর এখানে দাঁড়িয়ে থাকবেন না।

এব্যাপারে জেলাশাসক শুক্রবার বলেন, ‘আমি জেলায় আসার পর থেকে এখনও প্রত্যেক সাংবাদিকের সঙ্গে পরিচয় হয়নি। তবে যারাই যোগাযোগ করেছেন তাদের পর্যাপ্ত তথ্য প্রদান করেছি। এই দুঃসময়ে আমরা আগের মত করে সবকিছু সামাল দিতে পারছিনা। তবে সাংবাদিকদের উপেক্ষা বা অপমান করার কোন ভাবেই আমাদের উদ্দেশ্য ছিল না। সংবাদমাধ্যম আমাদের কাছে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ এবং তাদের সঙ্গে নিয়ে আমরা কাজ করতে আগ্রহী। আগামীতে এমনটা হবে না। যেসব আধিকারিকদের উদাসীনতায় বা অবহেলায় ঘটনাটি ঘটেছে, তাদের বিরুদ্ধে কড়া ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

সাংসদ রাজদীপ রায় প্রত্যেক সাংবাদিকের কাছে অনুরোধ রাখেন, সবাই যেন এই দুঃসময়ে একে অন্যের পাশে থেকে কাজ করেন।

Comments are closed.