Also read in

My determination helped me achieve my goal, now I am eying UPSC: APSC topper Maria Tanim

মারিয়া তানিম। এই মুহূর্তে আসামে বহুচর্চিত নাম। আসাম পাবলিক সার্ভিস কমিশনের এবারের পরীক্ষায় প্রথম স্থান অধিকার করে শুধু মা বাবারই নন, বরাক উপত্যকার মুখও উজ্জ্বল করেছেন তিনি। এই সাফল্যের পর মারিয়ার সাথে আমাদের প্রতিনিধির সাক্ষাৎকারের সম্পাদিত অংশ এখানে তুলে ধরা হলো

সবচেয়ে প্রথমেই জানতে চাইব এপিএসসি’র প্রস্তুতিটা কিভাবে নিয়েছিলে?

আমি ২০১৪ তে প্রস্তুতি শুরু করি। সেটা ছিল আমার প্রথম চেষ্টা। আমি আমার বাবার কাছ থেকে এ বিষয়ে অনুপ্রেরণা পেয়েছি। বাবাও প্রশাসনিক পদে কাজ করেছেন, তাই ভাবলাম আমিও প্রশাসনিক কাজে যোগ দিতে পারি। সেবার আমি মাত্র ১ মার্কের জন্য চূড়ান্ত তালিকায় স্থান করে নিতে পারিনি। তারপরে আমি এবার আবার চেষ্টা করলাম এবং প্রথম স্থান পেলাম। দিনে ৬-৭ ঘন্টা প্রস্তুতির জন্য ব্যয় করতাম।

চাকরির সাথে সাথেই কি প্রস্তুতিটা চলছিল?

ইঞ্জিনিয়ারিং থেকে বেরিয়ে আমি বেঙ্গালুরুতে চাকরিতে যোগ দেই, তারপর আইসিআইসিআই ব্যাংকে যোগ দিলাম গৌহাটিতে। তবে প্রিলিমিনারি পাস করার পরই আমি চাকরিটা ছেড়ে দিয়েছিলাম।

এবারে ভবিষ্যতের পরিকল্পনাটা কি, বড় ধরনের আরও কিছু করার ইচ্ছা আছে কি ?

হ্যাঁ, আমি ইউপিএসসি তে সফল হওয়ার চেষ্টা করব। আমার লক্ষ্য এখন ইউপিএসসি।

প্রস্তুতি কি শুরু হয়ে গেছে?

না, এখনো শুরু করিনি। আগামী বছর থেকে শুরু করব। ‌

আচ্ছা, এখন এপিএসসিতে যে পরিবর্তনগুলো আনা হয়েছে, সে বিষয়ে তোমার মতামত কি?

আমি এটুকুই বলবো, আগের ব্যাচ গুলোর সঙ্গে তুলনা করলে নিশ্চয়ই বোঝা যায় অনেকগুলো পরিবর্তন এসেছে। এমনকি ফলাফল ঘোষণার ক্ষেত্রেও। এ ব্যাপারে এটা বলতে পারি, সঠিক সময়ে সঠিক সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।

এপিএসসিতে দুর্নীতি চলার অভিযোগ রয়েছে, সেই অবস্থা থেকে এখন অনেক স্বচ্ছতা এসেছে এমনটা মনে করা হচ্ছে, এ বিষয়ে কি বলবে?

দুর্নীতির বিষয়টা নিয়ে আমি বিশেষ কিছু বলতে চাই না, কারণ বিষয়টা নিয়ে তো তদন্ত হচ্ছেই। এখানে আমি আরেকটা কথা বলতে চাই, অনেকে ভাবেন পরীক্ষা ভালো হওয়া সত্ত্বেও সাফল্য আসেনি অর্থাৎ যোগ্য ব্যক্তি যোগ্যতার মূল্য পেলেন না। কিন্তু আমি বলব, এটি একটি অত্যন্ত কঠিন পরীক্ষা। তাই একবারেই যে একজন সফল হয়ে যাবে, সেটা নয়। আমি নিজে যেবার সফল হতে পারিনি, পরে বুঝতে পেরেছিলাম আমার খামতিটা কোথায় ছিল। পরের বার আমি সেগুলো দূর করেছিলাম।

বাইরে না গিয়ে বরাক উপত্যকায় থেকেও কি কেউ এপিএসসি’র জন্য সফল প্রস্তুতি নিতে পারবে ?

অবশ্যই নিতে পারবে। তবে সেরকম নিষ্ঠা থাকা চাই। ইচ্ছাশক্তি প্রবল হলেই একজন সফল হতে পারেন। তবে এটাও ঠিক, এক্ষেত্রে গৌহাটির আবহাওয়া সম্পূর্ণ আলাদা। অনেক কোচিং সেন্টার রয়েছে। ওরা খুবই ভালো গাইড করে। বলা যায়, গৌহাটিতে থাকলে বিষয়টা সহজ হয়। তবে সঙ্গে এও বলবো, এখন ইন্টারনেটের যুগ। আর ইন্টারনেটে এখন সবকিছুই সহজলভ্য রয়েছে। কাজেই ডিটারমিনেশন থাকলে বরাক উপত্যকায় বসেও একজন এই পরীক্ষায় সফল হতে পারেন।

পড়াশোনার পাশাপাশি কি করতে ভালোবাসো, অর্থাৎ তোমার হবিটা কি?

আমি রান্না করতে খুব ভালোবাসি; গানও শুনি।

তুমি বলছ যে তোমার মা-বাবা তোমাকে খুব সাপোর্ট করেছেন এই ব্যাপারে, ব্যাপারটা একটু খোলসা করে বল

যখন আমি প্রথম বার অসফল হই, তারপরে কিছুটা ভেঙে পড়েছিলাম। ভেবেছিলাম আমার দ্বারা এ সম্ভব না। তখন আমার মা বাবা আমাকে খুব অনুপ্রাণিত করেছেন এবং সাহস যুগিয়েছেন।আমাকে বুঝিয়েছেন যে আমার দ্বারা সম্ভব এটা। এই উত্তরনের ক্ষেত্রে সবসময়ই ওরা আমার পাশে ছিলেন।

তুমি ট্রেনিং এর শেষে একটা গুরুত্বপূর্ণ প্রশাসনিক পদে যোগ দিচ্ছ, মেয়ে হিসেবে তুমি মেয়েদের জন্য কিছু করতে চাইবে ?

অবশ্যই। আর দেখা যায়, ব্রহ্মপুত্র উপত্যকার তুলনায় বরাক উপত্যকায় সচেতনতা অল্প কম রয়েছে । আমি অবশ্যই ওদেরকে সাহায্য করতে চাই যারা সঠিক পথ বেছে নিতে পারছেন না। আর একজন অফিসার হিসেবে আমাকে যে দায়িত্ব দেওয়া হবে সে দায়িত্ব আমি নিষ্ঠার সঙ্গে পালন করব। মহিলা অফিসার হিসেবে অবশ্যই মহিলা সংক্রান্ত বিষয়গুলো বিশেষভাবে খতিয়ে দেখব এবং সাহায্যটা যাতে তৃণমূল পর্যায়ে পৌঁছে সেটাও লক্ষ্য রাখবো।

যারা ভবিষ্যতে এ পি এস সি পরীক্ষায় বসতে চাইবে তাদের জন্য কিছু বলবে?

আমি এক্ষেত্রে বলব নিষ্ঠা খুব জরুরি। নিজের সিদ্ধান্তে দৃঢ় হতে হবে। অনেক সময়ই আশাহত হওয়ার সম্ভাবনা থাকে। নিজেকে বোঝাতে হবে এবং লক্ষ্যের দিকে নিজেকে টেনে নিয়ে যেতে হবে। ইচ্ছাশক্তি প্রবল হলে রাস্তা কঠিন হলেও সাফল্য আসবেই।

Comments are closed.