Also read in

Netaji School teacher Sikha Chakraborty is no more

হূদরোগে আক্রান্ত হয়ে প্রাণ হারালেন নেতাজি বালিকা বিদ্যালয়ের শিক্ষিকা শিখা চক্রবর্তী

স্বামীর চিকিৎসার জন্য প্রায় দুই সপ্তাহ ধরে কলকাতায় ছিলেন রাঙ্গিরখাড়ির নেতাজি বালিকা বিদ্যালয়ের শিক্ষিকা শিখা চক্রবর্তী। সঙ্গে তার কন্যা চিকিৎসক পারমিতা চক্রবর্তী। নানান দৌড়ঝাপের মধ্যেই রবিবার রাতে হঠাৎ অসুস্থ হয়ে পড়েন এবং কিছুক্ষণের মধ্যেই মৃত্যু হয়। কন্যা পারমিতা চক্রবর্তী জানিয়েছেন, হূদরোগে আক্রান্ত হয়েই মারা গেছেন প্রবাদপ্রতিম শিক্ষক প্রয়াত শ্যামাদাস ভট্টাচার্যের কন্যা শিখা চক্রবর্তী। স্বামী হীরক চক্রবর্তী কর্কটরোগে আক্রান্ত হওয়ায় কিছুদিন কাছাড় ক্যান্সার হাসপাতালে চিকিৎসা হয়েছে। লকডাউন পরবর্তী সময়ে তার চিকিৎসার জন্য কলকাতায় নিয়ে যাওয়া হয়েছে। তার সঙ্গেই কলকাতায় পাড়ি দিয়েছিলেন চিকিৎসক শিখা চক্রবর্তী। সেখানে তার বড় বোন অনুরাধা চক্রবর্তীর বাড়িতেই ছিলেন।

ডাঃ পারমিতা চক্রবর্তী জানিয়েছেন, মায়ের স্বাস্থ্যের অবস্থা স্বাভাবিকই ছিল, হঠাৎ করে এভাবে চলে যাবেন ভাবতেই পারছিনা। একসময় পারমিতা করোনা ভাইরাস আক্রান্ত হয়েছিলেন, তাকে বাড়িতে থেকে চিকিৎসার অনুমতি দিয়েছিল স্বাস্থ্য বিভাগ। সেই সময় অত্যন্ত সাবধানে মেয়ের চিকিৎসার দিকে নজর রেখেছেন শিখা চক্রবর্তী। এছাড়া পরিবারের প্রত্যেকের কাছে সবথেকে বেশি ভরসার জায়গা ছিলেন তিনি। ঘরের প্রত্যেকের খেয়াল রাখার পাশাপাশি একজন দক্ষ শিক্ষিকা ছিলেন। বিশেষকরে ছাত্রীদের কাছে তিনি অত্যন্ত প্রিয় ছিলেন। স্কুল থেকে পাশ করে বেরিয়ে যাওয়ার পরও ছাত্রীরা তার সঙ্গে এত সুন্দর সম্পর্ক রাখে, যেন একজন বন্ধু বা মায়ের মত। তার মৃত্যুতে প্রত্যেকেই শোকাহত।

সাংবাদিক বিশ্বকল্যাণ পুরকায়স্থের মাসি শিখা চক্রবর্তী তার কাছেও অত্যন্ত প্রিয় ছিলেন। মৃত্যু সংবাদ পাওয়ার পর তিনি বলেন, “মনে হচ্ছে মাতৃহারা হয়েছি, তিনি এভাবে চলে যাবেন স্বপ্নেও কল্পনা করতে পারিনা। এই বছর আমাদের কাছ থেকে আর কি কি কেড়ে নেবে এখনও হিসেব করতে পারছিনা।”

কাছাড় হাই স্কুলের প্রাক্তন শিক্ষক প্রয়াত শ্যামাদাস ভট্টাচার্যের চতুর্থ সন্তান শিখা চক্রবর্তী অত্যন্ত মেধাবী ছাত্রী ছিলেন। খুব সাধারণ ঘরের মেয়ে হয়েও অত্যন্ত বিচক্ষণ এবং আধুনিক মনের মানুষ ছিলেন তিনি। স্বামী, দুই কন্যা, জামাতা, নাতনি, পরিবারের অন্যান্য সদস্য সহ অসংখ্য গুণমুগ্ধকে রেখে গেছেন। পরিবার সূত্রে জানা গেছে কলকাতায় তার মৃতদেহ সৎকারের ব্যবস্থা করা হবে। সোমবার সকালে তার পরিবারের সদস্যরা বিমানে কলকাতায় পৌঁছচ্ছেন। তাদের উপস্থিতিতে শেষকৃত্য সম্পন্ন হবে।

Comments are closed.