Netaji Subhash Chandra Basu Seva kendra extends helping hand to 'NRC victims'
এন আর সি’র হিয়ারিং এর কাজ শুরু হতেই সহযোগিতার কাজ শুরু হয়ে গেছে পূর্ণোদ্যমে নেতাজি সুভাষচন্দ্র বসু সেবা কেন্দ্রেও। শিলচর বাণীপাড়ায় অবস্থিত নেতাজি সুভাষচন্দ্র বসু সেবাকেন্দ্রে আসামের সব জায়গা থেকে আসা মানুষকে এনআরসি’তে সহযোগিতার কাজ শুরু হয়েছে সোমবার থেকে। প্রতিদিন সকাল ১১ টা থেকে দুপুর দুটো পর্যন্ত এনআরসির কাজে নানাভাবে প্রচুর মানুষকে সাহায্য করা হচ্ছে। সময়সীমা বেঁধে দেওয়া হলেও এরপরও কেন্দ্রের কাজ চলতে থাকে যতক্ষণ পর্যন্ত না উপস্থিত প্রত্যেকটা মানুষকে সাহায্য করা হচ্ছে। আগামী ৩০ জুন অব্দি রবিবার ছাড়া প্রত্যেকদিনই খোলা থাকবে কেন্দ্র।
বরাক উপত্যকার জনগণতো বটেই, আসামের দূর-দূরান্ত থেকে যারা বরাক উপত্যকায় আসছেন তাদেরকেও এনআরসি সংক্রান্ত বিভিন্ন বিষয়ে সাহায্য করা হবে। কাজ শুরু করার আগেই শিলচর ও আশেপাশে প্রত্যন্ত জায়গায় মাইকের মাধ্যমে সবাইকে এ বিষয়ে অবহিত করা হয় বলে জানালেন সেবা কেন্দ্রের একজন কর্মকর্তা কমল চক্রবর্তী। জানা গেল, প্রথম দিনই ৫০ জনের মত লোক সাহায্যের জন্য এসেছেন। এরপর থেকে আরও বাড়বে বলে আশা করা হচ্ছে।
তার কাছ থেকে আরও জানা গেল, যারা নোটিস পাচ্ছেন, তাদেরকে কি কি কাগজপত্র নিয়ে যেতে হবে তার বিশদভাবে পরামর্শ দেওয়া হচ্ছে সেবা কেন্দ্রে। সরকারি নির্দেশ মতো নির্দিষ্ট ব্যক্তির কাছে ১৫ দিন আগে ভেরিফিকেশনের নোটিশ বাড়িতে পৌঁছে যাওয়ার কথা। অথচ বেশ কিছু ক্ষেত্রে দেখা যাচ্ছে ব্যক্তিরা নোটিস পাচ্ছেন না। সেবা কেন্দ্রের পক্ষ থেকে তিনি নিজেদের ARN NO. দিয়ে নেটে খুঁজে কোনও শুনানির নোটিশ তাদের নামে আছে কিনা দেখার জন্য সবার কাছে অনুরোধ জানান। । এরপর ডাউনলোড করে একটি কপি বের করে রাখার কথাও উল্লেখ করেন।
এদিকে সরকারের পক্ষ থেকে শিলচর ডাকবাংলোতে শুনানির জন্য বিশাল বড় একটি কেন্দ্র খোলা হয়েছে। সরকারের পক্ষ থেকে ৩০/৪০ জন কর্মী প্রায় বারোটা টেবিলে বসে বরাক উপত্যকা সহ আসামের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে আসা জনগণকে এনআরসি সংক্রান্ত বিষয়ে সাহায্য করছেন।
“এক্ষেত্রে সবচেয়ে বেশি অসুবিধা হচ্ছে, হিয়ারিং এর জন্য কাগজ কিংবা নথি যা সবচেয়ে প্রয়োজনীয় সেগুলোই ওরা সঙ্গে করে নিয়ে আসছেন না। ফলে প্রচণ্ড অসুবিধার সৃষ্টি হচ্ছে। আর সেজন্যই আমরা একটা হেল্প ডেস্ক সেন্টার খুলেছি” জানালেন কমল চক্রবর্তী। তিনি উদাহরণস্বরূপ উল্লেখ করেন স্বপন দাসের কথা। সারা জীবন সার্কাস করে ঘুরে বেড়ানো এই ভদ্রলোক এনআরসি বিষয়ে তেমন কিছু জানেন না। তাই গোয়ালপাড়া থেকে আগত এই ভদ্রলোকের কাছে নোটিশ ছাড়া কোনো নথিপত্র ছিল না। এতদূর থেকে আসা স্বপন দাসের পক্ষে আবার গোয়ালপাড়া ফিরে গিয়ে নথিপত্র আনা খুবই অসুবিধাজনক। তাই এক্ষেত্রে স্বপন দাসকে শিলচর থেকেই নথিপত্র সংগ্রহে কিভাবে সাহায্য করেছেন এ কথা উল্লেখ করতে গিয়ে কমল চক্রবর্তী জানান, এনআরসি’র ক্ষেত্রে আমরা অনেকের সাহায্য পাচ্ছি। শিলচরে তো বটেই এমনকি আসামের যেকোনো জায়গায় যে কোনো সাহায্যে প্রচুর মানুষ এগিয়ে আসছেন। এক্ষেত্রে হিন্দু, মুসলমান, বাঙালি, অসমিয়া সবাই নিজেদের মত করে সাহায্য করছেন। এটি অবশ্যই একটি ইতিবাচক দিক, উল্লেখ করলেন চক্রবর্তী। “আপার আসামেও যারা এনআরসির কাজে যাচ্ছেন, সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের কাছ থেকে বিভিন্ন ভাবে সাহায্য ছাড়াও খুব ভালো ব্যবহারও পাচ্ছেন। তাই বলা যায়, সর্বস্তরে আমরা সাহায্য পাচ্ছি এবং অবশ্যই বলতে হয়, মানবতার জয় সর্বশ্রেষ্ঠ জয়।
আসামের অন্য জায়গা থেকে যারা আসছেন তাদের প্রতি আমরাও বিশেষ খেয়াল রাখছি। যারা অসমিয়া এবং বাংলা বলতে পারেন না তাদের জন্য এমনকি হোটেলে গিয়েও কথা বলে আসছি, যাতে করে কোনো অভিযোগ না আসে যে শিলচরে এসে ওরা ভালো ব্যবহার পাননি।
যে কোন জায়গার মানুষকে আমরা সাহায্য করব। আমাদের মূল লক্ষ্য হচ্ছে, যতক্ষণ পর্যন্ত না ওই নির্দিষ্ট ব্যক্তির নাম তালিকায় আসবে ততক্ষণ পর্যন্ত আমাদের লড়াই চলবে”, বললেন চক্রবর্তী।
Comments are closed.