Not Barak - Bramhaputra, it is skills that gets one job in Assam says Rajdeep Roy
আগামী কয়েক মাসের মধ্যেই রাজ্যে বিধানসভা নির্বাচন অনুষ্ঠিত হচ্ছে এবং এর আগে তৃণমূল স্তরে কর্মীদের নিয়ে জোরদার প্রচার শুরু করেছে বিজেপি। পাশাপাশি শুরু হয়েছে নির্বাচনের মেনিফেস্টো গড়ে তোলার প্রক্রিয়া, এতে জনগণের মতামত নেওয়া হচ্ছে। ২০১৬ সালের নির্বাচনে বিজেপির মেনিফেস্টোতে বরাক উপত্যকার জন্য বেশ কিছু উল্লেখ ছিল, তার মধ্যে অনেকগুলোই পূরণ হয়নি। বিশেষ করে সরকারি চাকরিতে তৃতীয় এবং চতুর্থ শ্রেণীর নিয়োগের ক্ষেত্রে বরাক উপত্যকার স্থানীয়দের প্রাধান্য দেওয়ার যে প্রতিশ্রুতি দেওয়া হয়েছিল, সেটা পূরণ হয়নি। শনিবার জেলা বিজেপির কার্যালয়ে শিলচরের সাংসদ, রাজ্য বিজেপির সাধারণ সম্পাদক রাজদীপ রায় এবং কাছাড়ের প্রভারি বিশ্বরূপ ভট্টাচার্য একটি বিশেষ সাংবাদিক সম্মেলন আয়োজন করেন। তারা মেনিফেস্টো নিয়ে আলোচনা করার পাশাপাশি গত সাড়ে চার বছরে দলের বিভিন্ন কার্যকলাপের খতিয়ান তুলে ধরেন।
রাজ্য সরকারের বিভিন্ন বিভাগে চাকরির ক্ষেত্রে তৃতীয় এবং চতুর্থ শ্রেণি স্তরে বরাক উপত্যকার যুবক-যুবতীরা প্রাধান্য পাবেন বলে প্রতিশ্রুতি দেওয়া হয়েছিল, সেটা পূরণ হয়নি। এই প্রসঙ্গে প্রশ্ন করলে রাজদীপ রায় বলেন, “সরকারি চাকরির ক্ষেত্রে আমরা যোগ্যতাকেই প্রাধান্য দিচ্ছি। অবশ্যই আমাদের মুখ্যমন্ত্রী বরাক এবং ব্রহ্মপুত্রের সমন্বয় নিয়ে সব সময় চেষ্টা করে যাচ্ছেন। তবে চাকরির ক্ষেত্রে কাউকে বিশেষভাবে প্রাধান্য না দিয়ে যোগ্য যুবক-যুবতীকেই সুযোগ দেওয়া হচ্ছে। আমরা চাই বরাক উপত্যকার সার্বিক উন্নতি হোক এবং এখানে কাজকর্মের সম্ভাবনা আরও বৃদ্ধি পাক, এতে প্রত্যেকের লাভ হবে।”
সম্প্রতি কাগজ কল কর্মচারিদের মোমবাতি মিছিল আটকে দিয়েছিল প্রশাসন। তারা অনেক কষ্টে জীবন ধারণ করছেন, এর অনেক নিদর্শন সম্প্রতি দেখা গেছে। এই প্রসঙ্গে রাজদীপ রায় বলেন, “দেখুন কাগজকল ধ্বংসের জন্য দায়ী আমাদের সরকার নয়, তবে আমরা চাই এর পুনরুদ্ধার হোক। ইতিমধ্যে বেশ কিছু বড় মাপের ব্যবসায়ীদের সঙ্গে কথাবার্তা হয়েছে। যেসব সমস্যা ঝুলন্ত অবস্থায় রয়েছে সেগুলো মিটিয়ে যদি কেউ এটি কিনতে চান, তাহলে সরকার এভাবেও কাগজ কল চালু করতে রাজি আছে। দেশের বিভিন্ন বড় মাপের ব্যবসায়ীরা ইতিমধ্যে যোগাযোগ করেছেন, অনেক কথা আছে যেগুলো এখনই জনসমক্ষে বলা যাবে না। এছাড়া প্রাকৃতিক দিক নিয়ে বেশকিছু সমস্যা রয়েছে। এতবড় কাগজকল পুনরায় চালু করতে গেলে এলাকায় পরিবেশ দূষণ হবে কিনা, এই দিকগুলো বিবেচনা করছে আমাদের সরকার। যদি সবকিছু মিলে যায়, তাহলে ভবিষ্যতে কাগজ কল চালু হবে না এমনটা বলা যায়না।”
রাজদীপ রায়ের কথার সূত্র ধরেই বিশ্বরূপ ভট্টাচার্য বলেন, “বর্তমানে যারা আন্দোলন করছেন, কাগজ কল নিয়ে তাদের কথা বলার নৈতিক অধিকারই নেই। আমি নিজে একসময় কাগজ কলের সঙ্গে জড়িত ছিলাম, আমরা দেখেছি কিভাবে আর্থিক নয়-ছয় হয়েছে এবং তখনকার রাজনৈতিক নেতারা প্রত্যক্ষ এবং পরোক্ষভাবে এসব বিষয়কে মদত দিয়েছেন। যেসব কর্মীরা তখন নেতাদের অবৈধ কারসাজিতে সাহায্য করেছেন, তারাই এখন রাস্তায় নেমে আন্দোলন করছেন। আমাদের সরকার শিল্পপ্রতিষ্ঠানকে উন্নত করতে আগ্রহী, তারা নিজের মতো কাজ করছেন এবং সময়মতো এর ফল দেখা যাবে।” তিনি যেসব রাজনৈতিক নেতার কথা উল্লেখ করেছেন তাদের অনেকে বর্তমানে বিজেপির সদস্য। এই প্রসঙ্গে জানতে চাইলে তারা এড়িয়ে যান।
আসাম বিশ্ববিদ্যালয়ের সমাবর্তনে এসে মুখ্যমন্ত্রী সর্বানন্দ সোনোয়াল অসম আন্দোলনের শহিদদের শ্রদ্ধা জানিয়ে ছিলেন। পরবর্তীতে বিজেপির কেন্দ্রীয় নেতা জেপি নাড্ডা শিলচরে দাঁড়িয়ে সেই সূত্রে কথা বলেন। শেষমেষ প্রজাতন্ত্র দিবসের অনুষ্ঠানে আসাম আন্দোলনের শহিদদের শ্রদ্ধা জানান মন্ত্রী পরিমল শুক্লবৈদ্য, অথচ বরাকের শহিদদের কথা উল্লেখ করেননি তিনি। এই প্রশ্নের সরাসরি উত্তর দিতে চাননি রাজদীপ রায় এবং বিশ্বরূপ ভট্টাচার্য। রাজদীপ রায় বলেন, “পাকিস্তানের হাত থেকে বাংলাদেশকে উদ্ধার করেছিলেন দেশের প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী ইন্দিরা গান্ধী, এর মূল কারণ ছিল সেই দেশে বাঙালিদের উপর উর্দু ভাষা চাপিয়ে দেওয়ার ষড়যন্ত্র। অসমে আশির দশকে যে আন্দোলন হয়েছিল তার একটা উগ্র দিক ছিল আমরা সবাই জানি। তবে বর্তমানে যে সরকার রয়েছেন তারা সেই দিকটি ভুলে বারবার সাম্যের বার্তা দিচ্ছেন। এই প্রসঙ্গে মুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গে আমার কথা হয়েছে এবং তিনি এত সুন্দর ভাবে অসমিয়া এবং বাঙালির সমন্বয়ের কথা বলেছেন, আমি নিজে মুগ্ধ হয়েছি। কেউ যদি বলেন অটল বিহারী বাজপেয়ী পুরোপুরিভাবে অসম আন্দোলনের পক্ষে ছিলেন সেটা ভুল হবে। আমার পরিবারের সদস্যরা অসম আন্দোলনের শিকার হয়েছেন, আমরা জানি বাঙালিরা কতটুকু যন্ত্রণা ভোগ করেছেন। তবে বিশ্ববিদ্যালয়ে মুখ্যমন্ত্রী আদৌ কি বলেছেন সেটা নিয়ে আমার সন্দেহ রয়েছে, আমার মনে হয়না তিনি অসম আন্দোলন বলেছিলেন।”
Comments are closed.