Silchar is and will always be a city in our heart shares Shrabanti, Archana
শিলচর। চার অক্ষরে সমৃদ্ধ। একটি শহরের নাম। কিন্তু আমাদের কাছে শিলচর শুধু নিছক একটি শহর নয়। এক আকাশ ভালোবাসা। এক বুক অভিমান। গর্বে মাথা উঁচু হয়ে যাওয়া। যারা শিলচরে থাকেন তাদের জন্য এটি ‘আমার শহর’। কিন্তু যারা শহর থেকে অনেক দূরে প্রবাসে থাকেন তাদের হৃদয়ের অনেকটা জুড়ে এই শহর শিলচর। আসলে কর্মসূত্রে কিংবা আরও বিভিন্ন কারণে প্রবাসে থাকলেও জড়টাতো রয়ে গেছে শিলচরেই।শহরটা আজও অস্তিত্বের অনেকটা জুড়ে আছে।
সেই পুরোনো দিনের গল্প, শহর ঘিরে অফুরান স্মৃতি, সুখে দুঃখের অফুরন্ত কথা যাতে করে ভাষা খুঁজে পায়, তাই যারা শহর থেকে দূরে অন্য শহরে কিংবা অন্য দেশে থাকেন তাদের কথা ভেবেই আমাদের এই নতুন কলাম। এখানে নির্বাচিত ব্যক্তিদের পাশাপাশি অন্যান্যরাও অংশগ্রহণ করতে পারবেন। তাদের স্মৃতি, শহর ঘিরে অনুভূতি, ভালোলাগা, হারিয়ে যাওয়া কথা আমাদেরকে মেইলের মাধ্যমে লিখে পাঠাতে পারেন।
শ্রাবন্তী রায়চৌধুরী
গৃহশিক্ষিকা
গাজিয়াবাদ, উত্তরপ্রদেশ
শিলচর নামটি মুখে উচ্চারণ হলেই অদ্ভুত একটা আনন্দ আসে মনের মধ্যে। এই শিলচরকে ঘিরে কত স্মৃতি জড়িয়ে আছে। তা কি আর কাগজে লিখে বুঝাতে পারব? তবুও কিছু কিছু স্মৃতি আজও ভীষণ ভাবে মনকে নাড়া দেয়। আজ বিয়ের ১১ বছর পার হয়ে গেল, আমি আমার প্রাণের শহর শিলচরকে ছেড়ে বিবাহ সূত্রে উত্তরপ্রদেশের গাজিয়াবাদে রয়েছি। প্রথম যখন আমি এখানে এলাম মনে অনেক কষ্ট হত। কিছুতেই নিজেকে মানিয়ে নিতে পারছিলাম না। প্রতিদিন একবার করে আমার স্বামীকে বলতাম, আমি শিলচর চলে যাব। এখানের আলো, বাতাস, মাটি কিছুই আমার কাছে ভালো লাগছিল না।যাকে বলে হোম সিকনেস। এখন সময়ের সঙ্গে অনেকটাই নিজেকে মানিয়ে নিতে বাধ্য হয়েছি।
আমার স্কুল, কলেজ জীবন দুটোই শিলচরে কেটেছে। আমি শিলচর সরকারি উচ্চতর বহুমুখী বালিকা বিদ্যালয়ের ছাত্রী ছিলাম। স্কুলের টিফিন টাইমে আমাদের মুখ্য খাওয়া ছিল রঙিন বরফ আর মহেশদার তেঁতুলের আচার। আজও যখন স্কুলের বান্ধবীদের সঙ্গে ফোনে কথা হয় তখন একবার হলেও আমরা স্কুলের কথা আলাপ করি।
তারপর মনে হচ্ছে সেন্ট্রাল রোডের কথা। সপ্তাহে কমপক্ষে হলেও দু-তিনদিন কেনাকাটার জন্য মায়ের সঙ্গে যেতেই হত। কেনাকাটা করে যখন ফিরতাম তখন ভাওয়াল পয়েন্টের কোণায় দাঁড়িয়ে ফুচকা না খেয়ে বাড়ি ফিরতাম না। কি সুস্বাদু ফুচকা। এখনো মনে হলে জিভে জল চলে আসে।
এইতো সম্প্রতি আমরা দুর্গোৎসব কাটিয়ে উঠলাম। এই দুর্গাপুজোকে নিয়ে কত যে সুখকর স্মৃতি আজও মনকে নাড়া দেয়। বিয়ের আগে কোনদিন ভাবতেই পারতাম না যে শিলচর এর বাইরে কোথাও পুজো কাটাবো। আত্মীয়দের অনেক অনুরোধ সত্ত্বেও আমাদের পাশের জেলা করিমগঞ্জ, হাইলাকান্দিতেও পুজোর সময় যেতাম না। পূজার সময় এক মাস আগে থেকেই শুরু হয়ে যেত কেনাকাটা। রোজ দিদিদের সঙ্গে সেন্ট্রাল রোডে গিয়ে কেনাকাটা করা আর শেষ হত ষষ্ঠীর দিন। কেনাকাটার থেকেও বেশি আনন্দ হত রোজ কারোর না কারোর সঙ্গে দোকানে দেখা হয়ে যেত বলে।আর ওখানে দাঁড়িয়েই শুরু হয়ে যেত গল্প।
এখানেও আমরা একটা বাঙালি সমাজের সঙ্গে জড়িত আছি। পঞ্চমী দিন থেকেই শুরু হয়ে যায় নানান অনুষ্ঠান। পুষ্পাঞ্জলি দেওয়া, ভোগ খাওয়া সব কিছুই হয়। তাও মনের মধ্যে কোথাও যেন একটা ব্যথা অনুভব করি।
তারপর মনে হয় গান্ধীমেলার কথা। গান্ধী মেলা সম্বন্ধে এর আগে এক প্রবাসী বান্ধবী ঠিকই লিখেছেন, যে অন্ততপক্ষে চার পাঁচ দিন মেলায় যাওয়া চাই ই চাই। বান্ধবীরা মিলে আমরা দিনের বেলায় ঘোরার পারমিশন পেতাম।ঘরে শাসন ছিল খুবই শক্ত। সন্ধ্যার সঙ্গে সঙ্গেই বাড়ি ফিরে আসতে হতো। আমরা প্রথমে ঢুকে যেতাম আর্টিফিশিয়াল গয়নার দোকানে। সেখান থেকে কত রকমের কানের দুল কিনতাম! তারপর মনসা চাট হাউসে গিয়ে চাট খেতাম। আর সবার শেষে বাড়ি ফেরার পথে নিয়ে আসতাম গরম গরম জিলিপি। মেলার জিলিপির একটা অন্যরকম স্বাদ ছিল, সে যতই আনহাইজিনিক হোক।
প্রতিবছরই আমরা একবার কখনো বা দুবার শিলচর যাই। কিন্তু এখন বর্তমান যুগের শপিংমলের কালচার আর মোবাইল ফোনের দৌরাত্ম্যে পুরনো দিনের অনেক কিছুই হারিয়ে গেছে। শিলচরের মাটি থেকে কিন্তু মানুষের মধ্যে আন্তরিকতার কোনো ভাটা পড়েনি। সবশেষে একটা কথাই লিখব, হোক না যতই পরিবর্তন আমার কাছে শিলচর এক সুখকর স্মৃতি হয়েই চিরদিন থাকবে।
অর্চনা (পুরকায়স্থ) ভট্টাচার্য্য
শিক্ষিকা
পুনে
শিলচর। শব্দটার মধ্যে একটা অদ্ভুত টান রয়েছে।এর মাধুর্য হৃদয় স্পর্শী। শব্দটা উচ্চারণ মাত্রই এক ভালো লাগার অনুরণন হয় হৃদয় জুড়ে। এই অনুভূতিটা খুব ভালোভাবে উপলব্ধি করতে পারবেন যারা আমার মত বহু বছর ধরে শিলচরের বাইরে প্রবাসে রয়েছেন। আমাদের সবার ভালোবাসার শহর এই শিলচর। জীবনের এ পথ চলায় পেছনে ফিরে আমার প্রিয় শহরে কাটানো দিনগুলোর দিকে তাকাতে গিয়ে অদ্ভুত এক অনুভূতি মনের গভীরে। দলা পাকানো কষ্ট গলার কাছটায়। শিলচরের প্রতি ভালোবাসা আমাকে আবেগ রুদ্ধ করছে আর শিলচরের বাইরে থাকার আক্ষেপ আমাকে শহরটার আরো কাছে টেনে ধরছে।
আমারই অজান্তে কে যেন আমার হাত ধরে আমাকে নিয়ে চলেছে অতীতের পথে, কৈশরের এক অলস দুপুরে। ওই সময়টার কথা মনে করে নিজেকে বড্ড বোকা মনে হয়। ঘটনাটায় হয়তো অনেকেই হাসবেন, নিজেও মনে মনে হাসছি, কিন্তু ওই সময়ে ঘটনাটা খুব দুঃসাহসিক ছিল। আমি আর আমার এক বন্ধু বর্ণা একই মাস্টারের কাছে পড়তাম। কিছুটা দূর ছিল বলে ঘর থেকে অনেকদিনই রিক্সা ভাড়া দেওয়া হতো। আমরা রিকশায় না এসে মাস্টারের বাসা থেকে আসার পরই সেই পয়সাটা নিয়ে ছুট লাগাতাম আমাদের পাড়ায় অবস্থিত মাদার টেরিজার অনাথ আশ্রমে। না, রিক্সা ভাড়া জমিয়ে অনাথ আশ্রমে সাহায্য করার জন্য নয়। আসলে ওই অনাথ আশ্রমে তখন এই এলাকায় একমাত্র ল্যান্ডলাইন ফোন ছিল। আমরা দুই বন্ধু সেই ফোনে পয়সা ঢেলে আমাদের বন্ধুর সঙ্গে কথা বলতাম। আরো অদ্ভুত ব্যাপার হচ্ছে, যার সঙ্গে কথা বলতাম তার সঙ্গে কিন্তু মাস্টারের বাসায় অল্প আগেই দেখা হয়েছে। ওর সঙ্গে কথা বলাটা মুখ্য ছিল না, মুখ্য ছিল টেলিফোনে কথা বলা। অতি সামান্য গোছের কিছু কথা বার্তা বলে ফোনটা রেখে দিতাম। এখন তো বাচ্চাদের হাতে অ্যান্ড্রয়েড মোবাইল। দেশ-বিদেশের মানুষের সঙ্গে কথা চলছে। তখন কিন্তু ল্যান্ড লাইন ফোনে দুমিনিট কথা বলার জন্য দুই বন্ধুর মধ্যে ঝগড়া হতো কে বেশি বলে নিল। ঘটনাটায় এখন নিজেদের বোকা ভাবের জন্য হাসলেও ওই সময় অনেক বড় কিছু করে উঠার আনন্দ ছিল অমূল্য।
আজ পেছনে ফিরে হাঁটতে গিয়ে কিংবা শিলচরকে নিয়ে ভাবতে গিয়ে বারবার কৈশোর না হলে শৈশবের দিনগুলোতে ফিরে যেতে মন চাইছে। কোন এক পড়ন্ত বেলায় বন্ধুদের সঙ্গে মিলে ঘরে বানানো আচার খাচ্ছিলাম অন্য একজনের উঠোনে বসে। সবার ঘর থেকে বিভিন্ন ধরনের আচার এনে একসঙ্গে খাওয়ার এক মজা ছিল তখন। খাওয়া শেষ হয়ে গিয়েছিল। এবার হাত ধোয়ার পালা। ওই বাড়ির পুকুরে নেমে সবাই হাত ধুচ্ছিলাম। নিজেরটা ধোয়া হয়ে গেলে আরেকজনকে সাহায্য করতে গিয়ে পা হড়কে সোজা পুকুরের জলে। সাঁতার না জানায় তলিয়ে যাচ্ছিলাম জলের নিচে। আমাদের বন্ধু গ্যাংয়ের লিপি আমাকে টেনে তুলল কোনক্রমে। অদ্ভুত ব্যাপার হচ্ছে, ও নিজেই সাঁতার জানে না। অথচ ওর জন্যই আমি বেঁচে ছিলাম। আপাদমস্তক জলে ভেজা অবস্থায় বাড়ি ফিরতে ফিরতে প্রমাদ গুনছিলাম আর মনে মনে ভাবছিলাম, আজ বোধ হয় ভগবানও নিচে নেমে এলে আমাকে বকুনির হাত থেকে বাঁচাতে পারবেন না। কিন্তু মজার ব্যাপার হচ্ছে, ভগবান নিজে না এসে পাঠিয়ে দিয়েছিলেন আমারই ছোট মাসিকে। ছোট মাসি হাজারীবাগ থেকে বাড়িতে বেড়াতে আসায় সে যাত্রায় বেঁচে গিয়েছিলেম মার আর বকুনির হাত থেকে। যদিও এ ধরনের মারাত্মক ঘটনাও আটকাতে পারিনি পরের দিন আবার খেলতে যেতে। পাড়ার সবাই মিলে খেলার আনন্দটা ভীষণ রকম উপভোগ করতাম আমরা।এখনতো বাচ্চাদের মাঠ থেকে মোবাইলে অনলাইন গেইমগুলো বেশি আকৃষ্ট করে।
আজও মনে পড়ে, মা এবং দিদি দের সঙ্গে শ্যাম সুন্দর এ রামায়ণ শুনতে যাওয়ার কথা। বিশ্বনাথ গাঙ্গুলীর রামায়ণ পাঠ খুব জনপ্রিয় ছিল শিলচরে। শ্যাম সুন্দরে তখন ভিড় উপচে পড়ত। রামায়ণ পাঠ শুনতে ভালো লাগলেও অনেক সময় চোখে ভর করা ঘুম লজ্জায় ফেলতে চাইতো। পিছে সবাই আমার ঘুম পেয়ে যাওয়ার দুর্বলতা ধরে নেবে, তাই সঙ্গে করে নিয়ে যেতাম তেতুলের আচার। ঘুম ধরলে তেতুলের আচারের দায়িত্ব ছিল আমার চোখ থেকে ঘুম তাড়ানোর।এখন মনে হলে ভীষণ হাসি পায়।
আগে যাত্রারও খুব প্রচলন ছিল। এখন আধুনিকতার মোড়কে ও বিনোদনের অনেক মাধ্যমের ফলে যাত্রা শিল্প অনেকটা ম্লান হয়ে গেছে! আমাদের ছোটবেলায় পুজোর সময় বা পুজোর পরে যাত্রা গানের আয়োজন হতো। তখন পরিবার এবং বন্ধুদের সঙ্গে যাত্রা দেখার আনন্দটাই আলাদা ছিল। লুপ্তপ্রায় এই শিল্পের কথা আজ ভীষণ ভাবে মনে পড়ছে। পুজোর পরের দিনগুলো আরো বেশি করে ভালো লাগতো এই যাত্রা দলগুলোর জন্য। সন্ধ্যে থেকেই আয়োজন শুরু হয়ে যেত যাত্রা দেখার। যাত্রা দেখার লোভে ওই দিন আর পড়াশোনার জন্য আমাদের বকুনি দিতে হত না মায়েদের। আমরা বাধ্য মেয়ের মত পড়াশোনা শেষ করে খাওয়া দাওয়া করে তৈরি হয়ে যেতাম যাত্রায় যাওয়ার জন্য। সঙ্গে ব্যাগে করে নিয়ে যেতাম হালকা খাবার দাবার, ঠাণ্ডার জন্য চাদর, আরো কত কি!। যাত্রা দলের নায়ক নায়িকারা আমাদের চিন্তায় আমাদের মননে এতটাই প্রভাব ফেলত যে মনে হতো ওরা আমাদেরই পরিবারের একজন। পায়ে মশা কামড়াচ্ছে, কে তোয়াক্কা করছে! কান্নার দৃশ্যে মন কেঁদে উঠত, হাসির দৃশ্যে আমরা একাত্ম হয়ে উঠতাম তাদের সঙ্গে। নায়ক-নায়িকাদের দেখে মনে হতো না জানি ওরা কারা? পরের দিন হঠাৎ করে রাস্তায় দেখা হয়ে গেলে বুকের ভেতরটা ঠাস করে উঠত।সামনে যেন শাহরুখ কিংবা মাধুরী! আহা! সব মিলিয়ে ওই দিনগুলো কিন্তু ছিল বড্ড মজাদার!
আজও ভুলতে না পারার তালিকাটা বড্ড বেশি দীর্ঘ!এক মাস ব্যাপী চলা গান্ধী মেলার স্মৃতি মনের গভীরে এতটাই যে লিখতে গেলে ইতিহাস হয়ে যাবে। কি করে ভুলি, পাড়ার মাঠে বন্দী আর কাবাডি খেলায় আপাদমস্তক ধুলোমাটিতে এক হয়ে যাওয়ার কথা! পাড়ার বড়রা ছোটরা মিলে খেলার মধ্যে যে কি আনন্দ! ঠিক যেভাবে হোলিতে বন্ধুদের সঙ্গে বাড়িতে বাড়িতে গিয়ে সবাইকে রং দেওয়ার মধ্যে অনাবিল আনন্দ! ভুলতে পারিনা শিলংপট্টি স্কুল থেকে বাড়ি আসার পথে আসাম রাইফেলস এর রাস্তার লিচু গাছ থেকে লিচু চুরি করার দুঃসাহসিকতার কথা! একইভাবে মনে পড়ে লক্ষ্মী পূর্ণিমার দিন বন্ধুদের সঙ্গে বাড়ি বাড়ি গিয়ে কতকিছু চুরির ঘটনা! সবচাইতে মজার ব্যাপার ছিল,আমরা চুরি করতাম আমাদেরই বন্ধুদের কারোর বাড়িতে! পৌষ সংক্রান্তির মেরামেরীর কথা কি ভোলার জো আছে! রান্না করতে গিয়ে হাত পুড়ে এক হয়ে যেত! কিন্তু তাতেও কোন যন্ত্রণা নেই! কারণ যন্ত্রনার চাইতে অনেক বেশি ছিল আনন্দটা। ভুলতে পারিনা জন্মদিনের সন্ধ্যায় শৈশবের বান্ধবী বর্ণার সঙ্গে লুকিয়ে ‘সেন্ড অফ’এ কাটলেট খাওয়ার কথা। আজ ফাইভস্টার হোটেলও সেই আনন্দের কাছে হেরে যাবে। তবে লুকিয়ে খেতাম কারণ সেদিন ‘আট আনাজ’র সংক্রান্তিতে আমিষ খাওয়া বারণ ছিল। অনেক পরে কোন এক প্রৌঢ়া আত্মিয়া বলেছিলেন, সংক্রান্তির রাতে আমিষ খাওয়া যায়। এতদিনের অপরাধ বোধটা সেদিন খানিকটা কমে ছিল।
আসলে মনের গভীরে এতটাই স্মৃতির ভিড়, লিখতে গেলে ইতিহাস হয়ে যাবে। শিলচরের বাতাস, এবড়ো খেবড়ো রাস্তায় রিকশা চলার ঝাঁকুনি, শৈশবে লোডশেডিংয়ে উঠোনে বসে পড়ার সময় মশার কামড়, সিলেটি কথার মিষ্টতা, অনুষ্ঠানের মধ্যে খানে হঠাৎ বিদ্যুৎ চলে যাওয়ায় সবার মধ্যে অপ্রস্তুত ভাব, কোনক্রমে আবার অনুষ্ঠান শুরু করা, শিলচরের রাস্তায় রাস্তায় বৃষ্টিতে কাদা হয়ে যাওয়া সব কিছুই আমার মনে আনন্দের অনুভূতি। তাই এত বছর প্রবাসে থেকেও মনের মধ্যে শিলচরের সঙ্গে জুড়ে থাকা সব অনুভূতি সঞ্চিত আছে পরম যতনে। ঠিক যেমন আমার গৌরব, আমার অহংকার রক্তেরাঙ্গা উনিশে মে রয়েছে আমার সত্বায়, আমার সমস্ত অস্তিত্ব জুড়ে।
Comments are closed.