Also read in

The law has recognized, now society should accept us, pleads the LGBT community in Silchar

সমকামী হওয়া কোনভাবেই অপরাধ হতে পারে না। কোন দেশের ধর্মীয় বা সাংস্কৃতিক ঐতিহ্যকে এক্ষেত্রে অজুহাত হিসেবে ব্যবহার করা যাবে না। আজ এই কথা দেশের সর্বোচ্চ আদালত স্বীকার করলেও লড়াই অনেক বাকি। আইন সমকামীদের স্বীকৃতি দিলেও সমাজ এখনও আমাদের মেনে নেয়নি। এবার সমাজের স্বীকৃতি পাওয়াই হবে আমাদের লড়াইয়ের লক্ষ্য, এমনটাই অভিমত ব্যক্ত করলেন শিলচরের সমকামী অধিকার রক্ষা আন্দোলনের সদস্যরা। শনিবার বিকালে পার্করোডের ক্ষুদিরাম মুর্তির সামনে সমকামী সুরক্ষা নিয়ে এক সভা আয়োজন করা হয়।  দীর্ঘদিন ধরে শিলচরে সমকামী অধিকার নিয়ে আন্দোলন করে আসা বিভিন্ন ব্যক্তি সহ এর সমর্থনকারীরা সভায় অংশ নেন। এদিন গান, কবিতা এবং ভাষনের মাধ্যমে তারা সংবিধানের ৩৭৭ ধারা তুলে নেওয়ার জন্য সর্বোচ্চ আদালতকে সাধুবাদ জানান।

বিকাল ৪টায় ক্ষুদিরামের মুর্তির সামনে প্রায় ৪০জন তরুণ-তরুণী সহ বিভিন্ন বয়সের মানুষ জমায়েত হন। আন্দোলনের মুল উদ্যোক্তা শুভজিত দত্ত এদিন শিলচর তথা বরাক উপত্যকায় দীর্ঘদিন ধরে চলে আসা সমকামী আন্দোলনের কথা তুলে ধরেন। তিনি বলেন, সমকামীরা স্বাভাবিক মানুষ, এটা জানতে বা বুঝতে হলে শিক্ষিত হতে হয়। তবে আমাদের দুর্ভাগ্য, সমাজের অধিকাংশ মানুষ এসব বুঝতে চাননা, ভয় করেন, তাই আমাদের মেনে নিতে চাননা। শিলচরে সাল ২০১৩ থেকে আমরা আন্দোলনটি চালিয়ে যাচ্ছি। অনেক সময়ে অনেক ঝামেলা অনেক অপমান সহ্য করতে হয়েছে। এবার সুপ্রিম কোর্ট বলছেন সমকামিতা অপরাধ বা রোগ নয়। তাই আমরা এখন আস্বস্থ। এবার সমাজের সাধারণ মানুষের মন থেকে সমকামিতা নিয়ে যে ভয় রয়েছে, সেটা দুর করতে হবে। সমাজের সব ক্ষেত্রে সমকামীদের সাধারণ মানুষ হিসাবে স্বীকৃতি আদায় করতে হবে।

আসাম বিশ্ববিদ্যালয়ের ইংরেজি বিভাগের গবেষক পান্না পাল, যার গবেষণার বিষয়ই ‘এলজিবিটি’, এদিন সভায় বলেন, দুই ব্যক্তি সম্মতির মাধ্যমে সম্পর্ক স্থাপন করতে চাইলে এতে কারও বাধা দেওয়ার কারন নেই। আইন এই কথাটি মেনে নিয়েছে। এবার সামাজিক গ্রহণযোগ্যতার পালা। আমরা গান, কবিতা ও লেখালেখির মাধ্যমে এই চেষ্টা চালিয়ে যাবো। গৌহাটি হাইকোর্টের আইনজীবী তানিয়া লস্কর এনআরসি প্রক্রিয়া সহ সকল ক্ষেত্রে সমকামীদের বিশেষ অধিকার দেওয়ার কথা বলেন। তাঁর কথায়, মানবিকতার আইন সমকামীদের উপক্ষা করতে বলেনা। আমরা সমাজে এঁদের মানতে পারি না। তারা উপেক্ষিত এবং সংখ্যায় স্বল্প, তাই প্রত্যেক ক্ষেত্রে তাদের আলাদা করে স্বীকৃতি দেওয়া সমাজ ও রাষ্ট্রের কর্তব্য।

গায়ক এদিব ইমন, কবি শহিদুল ইসলাম লস্কর সহ অনেকেই গান-কবিতা ইত্যাদি দিয়ে সমকামীদের প্রতি নিজেদের সমর্থন জানান। উল্লেখ্য শহিদুল এবং তাঁর বন্ধু শামীম আহমেদকে সমকামীদের সমর্থনে কবিতা লিখে প্রকাশ করায় অতীতে একবার জেলও খাটতে হয়েছিল। সেই কথা টেনে এনেই শহিদুল এদিন বলেন, আজ আইন সমকামীদের অপরাধী বলছে না, এটা দীর্ঘদিনের আন্দোলনের ফসল। সমাজে স্বীকৃতি পেতে হলে কথা বলার সুযোগ পেতে হবে। সেই সুযোগ এখন এসেছে।
সারা বিশ্বের সব সমাজেই সমকামীরা আছে, এটি পশ্চিমী সমাজের কোন আবিস্কার নয়। এটা একটা মানবিক বাস্তবতা, এই অনুভূতি নিয়েই আন্দোলন চালিয়ে যাওয়ার কথা বলে সভা শেষ হয় এদিন।

Comments are closed.