Three prisoners escape from Karimganj District Jail, Security system is in question
মুখ থুবড়ে পড়েছে করিমগঞ্জ জেলা কারাগারের নিরাপত্তা ব্যবস্থা। গত ২০ ফেব্রুয়ারি জেল থেকে একজন বাংলাদেশি সহ অন্য এক কয়েদির পলায়নের ঘটনার রেশ কাটতে না কাটতেই শুক্রবার গভীর রাতে করিমগঞ্জ জেলা কারাগারের দেওয়াল টপকে পালালো আরো তিন কয়েদি।
এখানে উল্লেখ্য, ঠিক চারমাস আগে জেল থেকে পালানো কয়েদিকে কিন্তু এখনও আটক করতে পারেনি করিমগঞ্জ পুলিশ। আর এর মধ্যে শুক্রবারের ঘটনায় রীতিমত জেলা জুড়ে কারাগারের নিরাপত্তা ব্যবস্থা নিয়ে সচেতন মহলে বিভিন্ন প্রশ্নের উদ্রেক হয়েছে।শুক্রবার রাত আনুমানিক দু’টার সময় জেল থেকে পালানো তিনজন কয়েদির মধ্যে একজন হোজাই জেলার ফকিরাবস্তির। ফয়জুর রহমান নামের জেল খাটা আসামির হত্যা এবং অন্য কয়েকটি অপরাধের জন্য মামলা চলছিল। অন্য দুইজন করিমগঞ্জ জেলার পাথারকান্দি এবং বাজারিছড়া এলাকার যথাক্রমে মাশুক আহমেদ এবং ওয়াহিদ আলি। এরা দুইজন ড্রাগস কারবারের এবং চুরি কাণ্ডের মামলায় অভিযুক্ত ছিল।
অভিযুক্ত তিনজনকে চলতি মাসের ১০ এবং ১৩ তারিখে করিমগঞ্জ জেলা কারাগারে প্রেরণ করা হলেও করোনাকালের জন্য কোয়ারেন্টাইন করে রাখা হয়েছিল নির্দিষ্ট কক্ষে । শুক্রবার রাতে সেই কক্ষের জানালা ভেঙে পলায়ন করে এরা। প্রাপ্ত তথ্য মতে, দেওয়াল টপকে তিনজন কয়েদি যখন পালাচ্ছিল তখন ঘটনাটি স্বচক্ষে প্রত্যক্ষ করে অন্যান্য কয়েদিরা হইহল্লা করলে কারাগারে থাকা মাত্র দুই জন নিরাপত্তা কর্মী অসহায় অবস্থায় দাঁড়িয়ে থেকে নিজেদের দায়িত্ব পালন করতে থাকে।
শনিবার সাতসকালে ঘটনা জন সম্মুখে আসার পর হইচই পড়ে যায় রীতিমত অফিস পাড়ায়। শাক দিয়ে মাছ ঢাকার অবস্থা করিমগঞ্জ জেলা কারাগারের সুপারিনটেনডেন্ট সঞ্জীব চেতিয়ার। স্পষ্ট ভাবে কোন কারণ উল্লেখ করতে না পেরে জেলা কারাগারের নিরাপত্তা কর্মীর অভাবের দোহাই দিয়ে নিজের কোর্টের বল ঠেলে দিতে চাইছেন তিনি। জেল সুপারিনটেনডেন্ট সঞ্জীব চেতিয়ার স্পষ্টীকরণ মতে, করিমগঞ্জ জেলা কারাগারে বর্তমানে যে নিরাপত্তা রক্ষীর সংখ্যা আছে তা আগের চেয়ে অনেক কম, যার কারণে এখানের নিরাপত্তায় কিছুটা খামতি রয়েছে।খোদ জেল সুপারিনটেনডেন্টর এহেন মন্তব্য যেমন জেলা জুড়ে বিভিন্ন মহলে সমালোচনার খোরাক হয়ে দাঁড়িয়েছে, তেমনি করিমগঞ্জ জেলা প্রশাসনকে কিন্তু বিভিন্ন প্রশ্নের মুখে ঠেলে দিয়েছে ।
তাৎপর্যপূর্ণ বিষয় হচ্ছে যে এভাবে আর কতদিন সাফাই দিয়ে অন্যের ঘাড়ে দোষ ঠেলবেন জেল সুপার। ঠিক চারমাস আগের ঘটনা থেকে কি কোন ধরনের অভিজ্ঞতা হয়নি এদের? কেনই বা পুনরায় এধরনের ঘটনার পুনরাবৃত্তি হলো? না সবকিছুর পেছনে অন্য কোন রহস্য লুকিয়ে রয়েছে ! বিভিন্ন প্রশ্নের উদ্রেক হচ্ছে! ২০ ফেব্রুয়ারি যখন বাংলাদেশি কয়েদি জেল থেকে পালিয়ে গেলো তখন কেনই বা উচ্চপর্যায়ের তদন্ত হয়নি করিমগঞ্জে ? প্রসঙ্গত, চারমাস আগে যে দুইজন কয়েদি একই পন্থা অবলম্বন করে পালিয়েছিল তার মধ্যে একজন ছিল বাংলাদেশের আর অন্যজন ছিল করিমগঞ্জের ভাঙা এলাকার বহু চর্চিত হাবিবুল হত্যাকাণ্ডের মূল আসামি। হাবিবুল হত্যাকাণ্ডের মূল আসামি জেল থেকে পালিয়ে যাওয়ার খবর পেয়ে নিজেদের পরিবারের নিরাপত্তার ভয়ে জেলা পুলিশ সুপারের দ্বারস্থ হয়েছিলেন তার পরিবার। জেল থাকে পালানো কয়েদি কোনভাবে পালিয়ে বাঁচতে পারবে না, শীঘ্রই করিমগঞ্জ পুলিশ খুনের মামলার মূল নায়ককে ফের গ্রেফতার করবে বলে পরিবারকে আশ্বস্ত করেছিলেন জেলা পুলিশ সুপার নিজে।
এই অবস্থায় ২০ ফেব্রুয়ারি থেকে ২০ জুন পর্যন্ত জেল থেকে পালানো দুই কয়েদি আটকতো দূর, ফের শুক্রবার তিন কয়েদি জেল কুঠুরির জানালা ভেঙে নিরাপত্তা কর্মীদের চোখে ধুলো দিয়ে দেওয়াল টপকে পালিয়ে যাওয়ার ঘটনায় বর্তমানে রীতিমতো জনতার কাঠগড়ায় করিমগঞ্জ পুলিশ।
Comments are closed.