Also read in

TT Club wins Silchar DSA's second division championship, becomes First Division Club defeating Classmates

আড়াই দশকের অপেক্ষার অবসান!  এ ডিভিশনে খেলার স্বপ্ন পূরণ উধারবন্দের টি টি ক্লাবের,  ফাইনাল হেরে বি ডিভিশনেই রইল ক্লাসমেটস

শিলচর জেলা ক্রীড়া সংস্থার এ ডিভিশন ক্রিকেট লিগে খেলার স্বপ্ন পূরণ হলো উধারবন্দের টেবিল টেনিস ক্লাবের (টি টি ক্লাব)। ১৯৯৭ সালে সি ডিভিশনে চাম্পিয়ন হয়ে বি ডিভিশনে খেলার যোগ্যতা অর্জন করেছিল উধারবন্দের ক্লাবটি। এরপর টানা ২৩ বছর ধরে দ্বিতীয় ডিভিশনে খেলে আসছে তারা। ‌ একাধিকবার সেমিফাইনাল, কোয়াটার ফাইনাল এবং ফাইনালে খেললেও চ্যাম্পিয়ন হতে পারেনি টি টি ক্লাব। অবশেষে স্বপ্ন পূরণ। মঙ্গলবার বি ডিভিশনের খেতাবি লড়াইয়ে টি টি ক্লাব ১৩ রানে হারায় ক্লাসমেটস ইউনিয়নকে। চ্যাম্পিয়ন হওয়ার সুবাদে ট্রফি সহ ১০ হাজার টাকা পেল টি টি ক্লাব। সেইসঙ্গে আগামী বছর এ ডিভিশন লিগে খেলবে তারা। উল্টোদিকে, ফাইনালে হেরে যাওয়ায় বি ডিভিশনের রানারআপ ট্রফি ও সাত হাজার টাকা নিয়েই সন্তুষ্ট থাকতে হচ্ছে ক্লাসমেটসকে।

এদিন এস এম দেব স্টেডিয়ামে প্রথমে ব্যাট করে নির্ধারিত কুড়ি ওভারে ৯ উইকেটে ১৩৭ রান করে টি টি ক্লাব। গোটা টুর্নামেন্ট জুড়ে টি টি ক্লাবের ব্যাটিং ইউনিট ধারাবাহিক পারফর্ম করেছে। ‌ টপ অর্ডার ও মিডল অর্ডার রান করেছে। ‌ তবে ফাইনালে টি টি ক্লাবের এই দুই বিভাগই ব্যর্থ হয়। যদিও টুর্নামেন্টের একমাত্র সেঞ্চুরিয়ান ওপেনার কৌশিক দত্ত ফাইনালেও দারুন একটা ইনিংস খেললেন। ‌ একদিক থেকে নিয়মিত ব্যবধানে উইকেট পড়ে গেলেও অন্য প্রান্তে কৌশিক ছিলেন মেজাজে। তিনি খেলেন ৫৪ রানের অর্ধশত রানের ইনিংস।

একটা সময় কিন্তু ৬৬ রানে ৫ উইকেট হারিয়ে প্রচন্ড চাপে পড়ে গিয়েছিল উধারবন্ধের ক্লাবটি। তাদের কর্মকর্তা ও সমর্থকদের কপালে তখন ভাঁজ। তবে এমন পরিস্থিতিতে দলের হাল ধরে লোয়ার অর্ডার। কৌশিক ফিরে যাবার পর লোয়ার অর্ডারে প্রীতম নন্দী (১৮) ও প্রীতম দত্ত (১৬) দুটি মহামূল্যবান ইনিংস খেলেন। এর আগে ব্যর্থ হন আজহারুল ইসলাম বড়লস্কর (৩), দেবজ্যোতি দেব (০) এবং ধ্রুবজ্যোতি রায় (২)। প্রচন্ড চাপে থাকলেও ব্যাটিং এর গভীরতার জোরে লড়াকু একটা স্কোর খাড়া করে নেয় টি টি ক্লাব। আসলে বিপক্ষকে বাগে পেয়ে ও এর ফায়দা তুলতে পারেনি ক্লাসমেটস। তাদের তুষার নাথ তিন উইকেট এবং মনোজিৎ রুদ্রপাল ও রিপু মজুমদার দুটি করে উইকেট নেন।

সেমিফাইনালে ইটখোলা স্পোর্টিংয়ের বিরুদ্ধে এক রুদ্ধশ্বাস জয় পেয়েছিল ক্লাসমেটস ইউনিয়ন। তবে সেই ম্যাচটা তারা খেলেছিল ইন্ডিয়া ক্লাব মাঠে। এস এম দেব স্টেডিয়ামের তুলনায় ইন্ডিয়া ক্লাব মাঠ অনেক ছোট। এটা কিন্তু আজ ক্লাসমেটস এর বিরুদ্ধে গেছে। ‌ ফাইনালে তারা এই ফ্যাক্টর এর সঙ্গে মানিয়ে নিতে পারেনি।

 

 

রান তাড়া করতে নেমে ২৫ রানে ২  উইকেট হারায় ক্লাসমেটস। তখন তারা প্রচন্ড চাপে। তবে মনোজিৎ রুদ্রপাল ও সন্দীপ বারই কিছুটা সময় নিলেও দলকে লড়াইয়ে ফিরিয়ে আনেন। একটা সময় ক্লাসমেটস এর আস্কিং রেট সাতের একটু বেশিতে এসে গিয়েছিলো। হাতে উইকেট থাকায় ম্যাচ তখন ক্লাসমেটসের পক্ষেই ছিল। তবে উইকেটে সেট হয়েও মনোজিৎ ও সন্দীপ বড় শট হাকাতে পারেননি। নিয়মিত স্ট্রাইক রোটেট করে গেলেও বড় শট না আসায় আস্কিং রেট প্রায় ৯এর কাছাকাছি চলে যায়।  সেখান থেকে শেষ চার ওভারে ম্যাচ পুরোপুরি নিজেদের নিয়ন্ত্রণে নিয়ে ফেলে টি টি ক্লাব। প্রচণ্ড চাপের মধ্যেও দারুণ বোলিং করেন ডানহাতি মিডিয়াম পেসার সুরোজ কুমার রায়। তার চার ওভারে স্পেলটাই ক্লাসমেটকে প্রচণ্ড চাপে ফেলে দেয়। আসলে ঝকঝকে একটা অর্ধশত রান (৫৩) করলেও মনোজিৎ কোনো সময়ই গিয়ার শিফট করতে পারেননি। ৩১ রান করে অবসর নেওয়া সন্দ্বীপ ও একই টেম্পোতে ব্যাট করে যান। এটাই তাদের বিপদ ডেকে আনে। শেষ ৮ ওভারে যখন দুজনের চতুর্থ গিয়ারে ব্যাটিং করার দরকার ছিল তারা তখনও ওয়েটিং গেম খেলছিলেন।

বড় শট নিতে ব্যর্থ হওয়ায় সন্দীপ হঠাৎ করে অবসর নিয়ে মাঠ থেকে বেরিয়ে যান। বিষয়টা খুবই দৃষ্টিকটু লেগেছে। ‌ একজন ব্যাটসম্যান হিসেবে তিনি যে কোন সময় অবসর নিতেই পারেন। তবে এমন একটা চাপের সময়ে কোনো চোট না পেয়ে অবসর নেওয়া পুরোপুরি খেলার স্পিরিট এর বিরুদ্ধে। ‌ সন্দীপ বেরিয়ে যাবার পর অমিও শংকর রায় (১৪) ক্রিজে এলেও তাতে কোনো লাভ হয়নি। বিশাল এক ছয় দিয়ে ইনিংস শুরু করলেও আর সেভাবে বড় শট হাকাতে পারেননি অমিও। অবশেষে তিন উইকেটে ১২৪ রানে আটকে যায় ক্লাসমেটস।

Comments are closed.

error: Content is protected !!