Also read in

Urn with Tarun Gogoi's ash in it reaches Silchar

তরুণ গগৈর চিতাভস্ম পৌঁছুল শিলচর, ৭ জানুয়ারি বরাকে বিসর্জন করবেন গৌরব গগৈ

২৩ নভেম্বর গুয়াহাটিতে মারা যান বরিষ্ঠ কংগ্রেস নেতা তথা তিনবারের মুখ্যমন্ত্রী তরুণ গগৈ। দলের পক্ষ থেকে সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে, রাজ্যের প্রত্যেকটি জেলায় তার চিতাভস্ম বিসর্জন করা হবে। জানা গেছে তার এমনটাই ইচ্ছাও ছিল। রাজ্যের অন্যান্য জেলার সংখ্যা যোগ রেখে বরাক উপত্যকার তিন জেলার জন্য চিতাভস্মের কলসি ইতিমধ্যে পাঠিয়ে দেওয়া হয়েছে। তরুণ গগৈর ছেলে তথা সাংসদ গৌরব গগৈ প্রত্যেক জেলায় পৌঁছে নিজের হাতে অস্থি বিসর্জন করবেন বলে সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। কাছাড় জেলায় আগামী ৭ জানুয়ারি চিতাভস্ম বিসর্জন হবে, এরপরের দুইদিন হাইলাকান্দি এবং করিমগঞ্জে অনুষ্ঠানটি হবে। এই উপলক্ষে তিন দিনের বরাক উপত্যকা সফরে আসবেন সাংসদ গৌরব গগৈ।

জেলা কংগ্রেসের সাধারণ সম্পাদক মোহনলাল দাস গুয়াহাটি থেকে সম্প্রতি তিন জেলার কলস সমঝে নিয়ে এসেছেন। শিলচরের পার্ক রোডে কংগ্রেস ভবনের একটি কক্ষে অত্যন্ত শ্রদ্ধার সঙ্গে কলসগুলো রেখে দেওয়া হয়েছে। মুখ্যমন্ত্রীর প্রতিকৃতির সামনে অত্যন্ত সুন্দরভাবে সাজিয়ে রাখা হয়েছে অস্থি-কলষ  এবং সেখানে অনেকেই দূর থেকে শ্রদ্ধা জানাচ্ছেন। যেহেতু রাজ্যের প্রত্যেকটি জেলায় বিসর্জন হবে, ফলে এই প্রক্রিয়া প্রায় এক মাসের বেশি সময় ধরে চলবে। গৌরব গগৈ সহ দলের অন্যান্য বরিষ্ঠ নেতারা বিসর্জন অনুষ্ঠানে যোগ দেবেন।

সোমবার হাইলাকান্দি জেলা কমিটির সদস্যরা এসে তাদের জন্য পাঠানো চিতাভস্মের কলসি নিয়ে গেছেন। কাছাড় জেলায় যেদিন অনুষ্ঠান হবে, ঠিক পরের দিন হাইলাকান্দিতে বিসর্জনের দিন ঠিক করা হবে। সেখানে এখন দলের বরিষ্ঠ নেতারা অনেকেই বিজেপিতে যোগ দিয়েছেন। তবে দলের তৃণমূলের কর্মকর্তারা পুরো প্রক্রিয়া এগিয়ে নিয়ে যাবেন। কাছাড় জেলার বরিষ্ঠ নেতারা সেখানে যোগ দেবেন।

সোমবার দুপুরে অসম প্রদেশ কংগ্রেস কমিটির হয়ে হাইলাকান্দির প্রতিনিধিদের কাছে কলস তুলে দেন সঞ্জীব রায়। তিনি বলেন, “প্রয়াত মুখ্যমন্ত্রী তরুণ গগৈ টানা ১৫ বছর রাজ্যের মানুষের সেবা করেছেন। সারা রাজ্যের কোনও জেলা বাকি নেই, সবখানেই তিনি সাধারণ মানুষের কাছাকাছি গেছেন। তার মৃত্যুর পর তাকে মানুষের কাছাকাছি পৌঁছে দিতেই এই অভিনব সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। প্রত্যেক জেলায় তার চিতাভস্ম বিসর্জন করা হবে এবং সেখানেই তিনি পঞ্চভূতে বিলীন হবেন। অবশ্যই তার আশীর্বাদে দল আগামীতে আবার ঘুরে দাঁড়াবে এবং নির্বাচনে সফলতা লাভ করবে। সাধারণ মানুষ এখনো তরুণ গগৈর অবদান ভুলে যাননি, অনেকেই আবার আমাদের পাশে ফিরে আসবেন।”

জেলা কংগ্রেসের সাধারণ সম্পাদক মোহনলাল দাস জানান, তিনি যখন গুয়াহাটি থেকে চিতাভস্ম নিয়ে কাছাড় জেলার ঢোকেন, সেখানে অনেকেই শ্রদ্ধা জানানোর জন্য দাঁড়িয়েছিলেন। বিভিন্ন জায়গায় কীর্তন আয়োজন করে প্রয়াত মুখ্যমন্ত্রীকে শ্রদ্ধা জানিয়েছেন মানুষ। তিনি বলেন, “প্রচন্ড ঠান্ডার রাতেও অনেকেই রাস্তার পাশে দাঁড়িয়েছিলেন শুধুমাত্র প্রয়াত মুখ্যমন্ত্রীর প্রতি শ্রদ্ধা জানাতে। এতেই বোঝা যায় তিনি জনগণের কতটুকু প্রিয় ছিলেন। আমরা তার আদর্শেই সফলভাবে রাজনীতি করে যাচ্ছি, তার আশীর্বাদ নিয়ে আগামীতে দলের সফলতার জন্য পরিশ্রম করব।”

উল্লেখ্য, গত ২৫ আগস্ট করোনায় আক্রান্ত হয়েছিলেন গগৈ। প্রায় দু’মাস হাসপাতালে ভর্তি ছিলেন তিনি। শেষে গত ২৫ অক্টোবর বাড়ি ফেরেন তিনি। কিন্তু তারপর বেশি দিন আর বাড়ি থাকতে পারেননি। ফের গত ২ নভেম্বর হাসপাতালে ভরতি করা হয় তাঁকে। তাঁর বেশ কিছু অঙ্গপ্রত্যঙ্গ কাজ না করায় অবশেষে তাঁকে ভেন্টিলেশন সাপোর্টে রাখা হয়েছিল। ২৩ নভেম্বর তার মৃত্যু হয়। প্রধানমন্ত্রীর নরেন্দ্র মোদি থেকে শুরু করে হিমন্ত বিশ্ব শর্মা সহ প্রত্যেকে এই প্রথম মুখ্যমন্ত্রীকে শ্রদ্ধা জানিয়েছিলেন।

Comments are closed.