Won't be wise to attribute Assam University's existence to Assam Movement, says MP Rajdeep Roy
বিশ্ববিদ্যালয়কে অসম চুক্তির সঙ্গে গুলিয়ে ফেলা বুদ্ধিমানের কাজ হবে না, পোখরিয়ালের সম্মতিতেই এসেছিলেন গাডকরি, বললেন রাজদীপ
“বরাক উপত্যকায় কেন্দ্রীয় বিশ্ববিদ্যালয় গড়ে তোলার জন্য অনুমতি পেতে এলাকার মানুষ দীর্ঘদিন আন্দোলন করেছেন। এর সঙ্গে অসম চুক্তি বা অসম আন্দোলনের সরাসরি যোগসূত্র নেই। অবশ্যই অসম চুক্তি স্বাক্ষর হওয়ার পর রাজ্যে যে দুটি কেন্দ্রীয় বিশ্ববিদ্যালয় হয়েছে এর মধ্যে একটি হচ্ছে আসাম বিশ্ববিদ্যালয়। তবে এই বিশ্ববিদ্যালয় অসম চুক্তির ফসল এটা বলা বুদ্ধিমানের কাজ হবে না,” এমনটাই বললেন সাংসদ রাজদীপ রায়। প্রায় ১০ দিন ধরে বরাক উপত্যকায় বিজেপির রাজ্য এবং কেন্দ্রীয় স্তরের নেতারা অবস্থান করেছেন বেশ কিছু বড় অনুষ্ঠান হয়েছে। রবিবার বিকেলে সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়ে নিজেদের অনুভূতি তুলে ধরেন সাংসদ এবং জেলা বিজেপির অন্যান্য সদস্যরা। সেখানেই কথাগুলো বলেন সাংসদ।
শুক্রবার আসাম বিশ্ববিদ্যালয়ের সমাবর্তন অনুষ্ঠানে কেন্দ্রীয় পরিবহন মন্ত্রী নীতিন গাডকারির সঙ্গে যোগ দিয়েছিলেন মুখ্যমন্ত্রী সর্বানন্দ সোনোয়াল। অনুষ্ঠানে ভাষণের শুরুতেই মুখ্যমন্ত্রী বলেন, “অসম চুক্তির ফসল হিসেবে বরাক উপত্যকায় কেন্দ্রীয় বিশ্ববিদ্যালয় স্থাপনের অনুমতি দেওয়া হয়েছিল।” পাশাপাশি তিনি অসম আন্দোলনে প্রাণ হারানো শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধাও জানান। এতে বরাক উপত্যকায় তীব্র প্রতিক্রিয়া দেখা দেয়, অনেকেই বলেন মুখ্যমন্ত্রী বিশ্ববিদ্যালয়ের আন্দোলনের ইতিহাস না জেনেই কথাগুলো বলেছেন।
সমাবর্তন অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন সাংসদ রাজদীপ রায়ও, তাই সাংবাদিক সম্মেলনে তাকে এব্যাপারে প্রশ্ন করা হয়। তিনি বলেন, “বরাক উপত্যকায় কেন্দ্রীয় বিশ্ববিদ্যালয় গড়ে তোলার দাবিতে আকসা সহ বিভিন্ন সংগঠন এবং সমাজসেবীরা আন্দোলন করেছেন। এরমধ্যে আমার প্রয়াত পিতা বিমলাংশু রায়ও ছিলেন। ছাত্র সংগঠনের সদস্য হিসেবে আমিও ছিলাম। শুক্রবার বিশ্ববিদ্যালয়ের সমাবর্তন অনুষ্ঠানে আমি উপস্থিত ছিলাম, তবে মুখ্যমন্ত্রী ঠিক কি বলেছেন সেটা লক্ষ্য করিনি। আমার মনে তিনি অসম আন্দোলনের ফসল হিসেবে বিশ্ববিদ্যালয়কে গণ্য করেননি, হয়তো অন্য কিছু বলেছেন। তবে যদি অসম চুক্তির সঙ্গেও বিশ্ববিদ্যালয়ের স্থাপনার ঘটনাকে জড়িয়ে ফেলা হয়, সেটা বুদ্ধিমানের কাজ হবেনা।”
বিশ্ববিদ্যালয়ের সমাবর্তন অনুষ্ঠান নিয়ে আরেকটি কথা উঠছে, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানটির সংবিধান অনুযায়ী রাষ্ট্রপতি, রাজ্যপাল, প্রধানমন্ত্রী অথবা কেন্দ্রীয় মানবসম্পদ মন্ত্রী মুখ্য অতিথি হিসেবে যোগ দিতে পারেন। অথচ এবার অনুষ্ঠানের মুখ্য অতিথি হিসেবে যোগ দিলেন কেন্দ্রীয় সড়ক পরিবহন মন্ত্রী। এছাড়া মঞ্চে উপাচার্য সহ শুধুমাত্র জনপ্রতিনিধিরাই ছিলেন। এটা নিয়ে অনেকেই প্রশ্ন তুলেছেন। এব্যাপারে সাংসদের বয়ান, “বিশ্ববিদ্যালয় সমাবর্তন অনুষ্ঠান হওয়ার কথা ছিল এপ্রিল মাসে, সেই সময় মানবসম্পদমন্ত্রীর সঙ্গে কথা হয়েছিল এবং তিনি আসতে রাজি হয়েছিলেন। তবে করোনা ভাইরাসের জন্য পরিস্থিতি পাল্টে গেছে, পরিবর্তিত তারিখে মানবসম্পদ মন্ত্রী সময় দিতে পারেননি। এদিকে সড়ক পরিবহনমন্ত্রী একই দিনে শিলচরে আসছেন বাজপেয়ীজির মূর্তি উন্মোচন করতে। এব্যাপারে দুই মন্ত্রকের মধ্যে আলোচনা হয় এবং মানবসম্পদমন্ত্রী অনুমতি দেন সড়ক পরিবহন মন্ত্রী নীতিন গাডকারি সমাবর্তনে যোগ দিতে পারবেন। নীতিন গাডকারিজি একজন উচ্চশিক্ষিত এবং দক্ষ ব্যক্তি, তিনি এধরনের অনুষ্ঠানে মুখ্য অতিথি হওয়ার যোগ্যতা রাখেন। এটা নিয়ে কোনও আলোচনার প্রয়োজন রয়েছে বলে আমি মনে করিনা।”
সাংসদ আরও বলেন, “নীতিন গাডকারি শিলচরে দাঁড়িয়ে ঘোষণা করে গেছেন বরাক উপত্যকায় লজিস্টিক পার্ক এবং দুটো নতুন সেতু গড়ে তোলা হবে। এছাড়া উপত্যকায় একটি আন্তর্জাতিক মানের বিমানবন্দর গড়ে তোলার পরিকল্পনা রয়েছে কেন্দ্র সরকারের। পরিবহন মন্ত্রীর ঘোষণার পর স্থানীয় স্তরে পরিকল্পনা শুরু হয়েছে, জায়গা দেখা হচ্ছে। আপাতত বলা হচ্ছে যে এলাকায় লজিস্টিক পার্ক হবে তার আশেপাশেই নতুন সেতু নির্মাণ হবে। বিমানবন্দরের জন্য ইতিমধ্যে একটি বিশেষ দল জায়গা পরিদর্শন করে গেছে। আগামী বছর প্রকল্পের শিলান্যাসের সম্ভাবনা রয়েছে। ইতিমধ্যে মহাসড়কের কাজ শেষ হওয়ার কথা ঘোষণা করে গেছেন কেন্দ্রীয় পরিবহন মন্ত্রী। এছাড়া জলপথ উন্নতির জন্য বিশেষ উদ্যোগ নিচ্ছে আমাদের সরকার। সব ধরনের পরিবহন ব্যবস্থাকে উন্নত করে শিলচর শহরকে রাজ্যের দ্বিতীয় উন্নততম শহর হিসেবে গড়ে তোলার দিকে এগোচ্ছি আমরা।”
বাজপেয়ীজীর ব্রোঞ্জের মূর্তি স্থাপনের পুরও প্রক্রিয়ার ব্যাপারে নিত্যভূষণ দে বলেন, “আমরা কারও সাহায্য নিয়ে এই মূর্তি বানাইনি, বাজপেয়ীজির অনুরাগীরা নিজেদের সাধ্যমত অনুদান দিয়েছেন এতেই পুরো প্রক্রিয়া সম্পন্ন হয়েছে। কেউ দশটাকা দিয়েছেন, কেউ হাজার টাকা দিয়েছেন, এতে প্রায় ৩৩ লক্ষ টাকা উঠেছে। সেটা দিয়ে মূর্তি বানানো এবং পরবর্তী অনুষ্ঠান সম্পন্ন হয়েছে। আমরা চাইলে এই হিসাব জনসমক্ষে তুলে ধরতে পারি।”
করিমগঞ্জে দুই দিনের রাজ্য সম্মেলন নিয়ে কৌশিক রাই বলেন, “অত্যন্ত সফলভাবে এত বড় সম্মেলন আয়োজন করা হয়েছে, এতে রাজ্যস্তরে বরাক উপত্যকার কার্যকর্তাদের সুনাম হয়েছে। প্রথমবার কোনও রাষ্ট্রীয় দলের রাজ্য সভাপতি টানা দশদিন বরাক উপত্যকায় থেকেছেন। অতীতে এই এলাকাকে এতটা সম্মান দেয়নি কোনও দল। আমরা আগামী নির্বাচনে কাছাড়ের সবগুলো আসনে জয়ী হব এবং এটা সম্ভব হবে দলের আড়াই লক্ষ কার্যকর্তাদের পরিশ্রমের ফলে।”
Comments are closed.