Also read in

Zila Parishad President : Tug of war between BJP and AIUDF

হাইলাকান্দি জেলা পরিষদের নবনির্বাচিত সভানেত্রী ফরহানা খানম চৌধুরী এ আই ইউ ডি এফ না বিজেপি দলের এনিয়ে দুই দলের দড়ি টানাটানি শুরু হয়েছে। ছয় ফেব্রুয়ারি ইউ ডি এফ ছুট ফরহানাকে চেয়ারম্যান করে বিজয় মিছিল করে বিজেপি দল। আর এই মিছিলের ৪৮ ঘন্টার মধ্যে শুক্রবার পাল্টা মিছিল করে এ আই ইউ ডি এফ দল জানায় যে ফরহানা খানম চৌধুরী তাদের দলের এবং বোর্ডও ইউ ডি এফের।।

বুধবার যে ফরহানা বিজেপি অফিসে দাঁড়িয়ে বলেছিলেন, তিনি ইউডিএফ দলত্যাগ করে বিজেপি দলে যোগ দিয়েছেন সেই ফরহানাই শুক্রবার ১৮০ ডিগ্রি পাল্টি খেয়ে নিজেকে এ আই ইউ ডি এফ দলের বলে দাবি করলেন।।। হাইলাকান্দি জেলা বিজেপি নেতাদের দাবি ফারহানা খানম তাদেরই সমর্থনে নির্বাচিত জেলাপরিষদ সভাপতি, তিনি তাদেরই আছেন এবং থাকবেন।

অন্যদিকে ফারহানা খানমের সাফ কথা ভারতীয় জনতা পার্টির সঙ্গে তার কোন সম্পর্ক নেই ।শুক্রবার হাইলাকান্দি জেলাপরিষদে দাঁড়িয়ে ফারহানা জানিয়ে দেন যে, তিনি এআইইউডিএফ-র সদস্য এবং প্রার্থী হিসাবে জেলাপরিষদ সভাপতি নির্বাচিত হয়েছেন। তাই তিনি হাইলাকান্দি জেলাপরিষদে এ আই ইউ ডি এফ-র সভাপতি।

যদিও বাস্তব ঘটনা হচ্ছে দুদিন আগে এই ফারহানা খানম এ আই ইউ ডি এফ-র অপর সদস্য এবং বিধায়ক সুজাম উদ্দিন লস্করের স্ত্রী তথা জেলাপরিষদের সভাপতি পদের প্রার্থী ফারহানা বেগম লস্করকে হারিয়ে জেলাপরিষদের সভাপতি নির্বাচিত হয়েছিলেন। বিজেপির চার সদস্য এবং অগপ-র এক সদস্যের সমর্থন নিয়ে এ আই ইউ ডি এফ ছুট ফারহানা খানম মোট ছয় ভোট পেয়ে এক ভোটের ব্যাবধানে নিজের দলেরই ফারহানা বেগম লস্করকে হারিয়ে জেলাপরিষদের সভাপতি নির্বাচিত হয়েছিলেন। শুধু তাই নয়, তিনি বিজেপি কর্মকর্তাদের সঙ্গে নিয়ে সাংবাদিকদের সঙ্গে কথাও বলেছিলেন। গেরুয়াদলের নেতাদের সঙ্গে ক্যামেরার সামনে
ছবিও তুলেছিলেন। কিন্ত সেই ফরহানা শুক্রবার জানান, বিজেপির সমর্থনে তার জেলাপরিষদের সভাপতি হওয়ার প্রশ্নই উঠে না । তিনি তার দলের আরেকজন জেলাপরিষদ সদস্যের সঙ্গে সভাপতির পদের জন্য প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেছিলেন। গোপন ব্যালটে ভোট হয়েছিল । তিনি সর্বাধিক ভোট পেয়ে সভাপতি নির্বাচিত হয়েছেন । এক্ষেত্রে তারসঙ্গে বিজেপির কোন প্রকার সম্পর্কের কথা তিনি অস্বীকার করেন।

যদিও সাংবাদিকরা দুদিন আগে দেওয়া তার বয়ানের কথা উল্লেখ করেন, ইতিপূর্বে তিনি নিজে যেখানে বলেছিলেন তিনি নির্দল হিসাবে জেলাপরিষদের সভাপতি হয়েছেন এবং বিজেপি নেতাদের সঙ্গে নিয়ে সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলেন। সেখানে হঠাৎ করে তিনি কিভাবে এ আই ইউ ডি এফ-র জেলাপরিষদের সভাপতি হয়ে যান। এভাবে সাংবাদিকরা একের পর এক তির্যক প্রশ্ন করতে থাকলে হঠাৎ জ্ঞান হারিয়ে মাটিতে পড়ে যান ফারহানা খানম। তাকে পাজাকোলা করে সেখান থেকে সরিয়ে নেওয়া হয় ।

এদিকে বিধায়ক সুজাম উদ্দিন লস্কর জেলাপরিষদের সভাপতি ফারহানা খানমকে নিজের দলের বলে দাবি করে বলেন, তিনি এ আই ইউ ডি এফ-র সদস্য আছেন এবং থাকবেন বলে জানিয়ে দেন। বিধায়ক সুজাম উদ্দিনের অভিযোগ, হাইলাকান্দি জেলাপরিষদ কব্জা করার জন্য কংগ্রেস এবং বিজেপি ষড়যন্ত্র করেছিল। এই ষড়যন্ত্রে সামিল ছিলেন স্বয়ং প্রাক্তন মন্ত্রী গৌতম রায়। তবে গৌতম রায়ের এই ষড়যন্ত্র ব্যর্থ হয়েছে বলে দাবি করেন বিধায়ক সুজাম উদ্দিন।

এদিকে এদিন সন্ধ্যায় জেলা বিজেপি সভাপতি সুব্রত নাথ, সাধারন সম্পাদক সন্দিপন পাল ও বিভাস সিংহ, সহসভাপতি হীরকজ্যোতী চক্রবর্তী,এবং দীবেন্দু চন্দ প্রমুখ সাংবাদিক সম্মেলনের আয়োজন করে বলেন বিজেপির সমর্থনে গঠিত জেলাপরিষদের এই বোর্ড বিজেপির আছে এবং আগামিতেও বিজেপিরই থাকবে। জেলাপরিষদ সভাপতি ফারহানা খানম তাদের দলের সভাপতি। জেলা বিজেপি সভাপতি সুব্রত নাথ এবং সাধারণ সম্পাদক সন্দিপন পাল হাইলাকান্দির এ আই ইউ ডি এফ বিধায়কদের চ্যালেঞ্জ জানিয়ে বলেন,তাদের হিম্মত থাকলে বিজেপির জেলাপরিষদ সভাপতি ফারহানা খানমকে পদ থেকে অপসারিত করে দেখান। বিজেপির বোর্ডকে যারা এ আই ইউ ডি এফ-র বোর্ড বলে দাবি করছেন তারা পাগলের প্রলাপ বকছেন। এদিকে দুদিন আগে জেলাপরিষদ দখলের পর বিজেপির করা মিছিলের জবাব হিসাবে এ আই ইউ ডি এফ সমর্থকরা ফারহানা খানমকে নিয়ে মিছিল করে পটকাবাজিতে মেতে উঠেন। এই মিছিলে দলের দুই বিধায়ক সুজাম উদ্দিন লস্কর ও নিজাম উদ্দিন চৌধুরী সহ জেলাপরিষদের এ আই ইউ ডি এফ-র সদস্য সহ দলের কর্মী সমর্থকরা অংশ নেন।

Comments are closed.