Also read in

সবার সব প্রচেষ্টাকে ব্যর্থ করে চলে গেল রোহন, বিষাদের ছায়া

প্রায় এক বছর ধরে যুদ্ধ করলেও শেষ রক্ষা টুকু হলো না। সব যুদ্ধের অবসান ঘটিয়ে শুক্রবার সকাল প্রায় ৪ টার সময় দুবছরের রোহন সবাইকে ছেড়ে পাড়ি দিল পরলোকে। তাকে সুস্থ করে তোলার জন্য তার মা বাবা থেকে শুরু করে আরো অন্যান্য সবার প্রচেষ্টা ব্যর্থ হয়ে যায়। কোন চিকিৎসাই তাকে সুস্থ করে তুলতে পারল না। সবকিছুকে পেছনে ফেলে চলে গেল মা-বাবার আদরের ছোট্ট রোহন।

এখানে উল্লেখ করা যেতে পারে, পাঁচ মাস বয়সের সময় রোহন হঠাৎ একদিন বিছানা থেকে পড়ে গিয়ে নাকে চোট পায়। সঙ্গে সঙ্গে তার অভিভাবকরা পার্শ্ববর্তী হাসপাতালে নিয়ে যান। পরবর্তীকালে ভালো চিকিৎসার জন্য তার পরিবারের লোকজন শিলং এবং গৌহাটির হাসপাতালগুলোতে বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকদের দেখান। তারও পরে এক সময় শিলচরে রোহনের মা বাবা তার হোমিওপ্যাথিক চিকিৎসা শুরু করেন। সে সময় রোহন কিছুটা সুস্থ হয়ে উঠেছিল। কিন্তু এই সুস্থতা খুব সাময়িক ছিল। রোহনের বাবা রথিকান্ত পালের কাছ থেকে জানা যায় যে তারা তাকে বার বার ওষুধ খাওয়াচ্ছিলেন, কিন্তু কিছুদিন পরপরই ফোলাটা বেড়ে উঠছিল। একসময় এটা খুব খারাপ আকার ধারণ করে। যার ফলে তারা তাকে শিলচর মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতালে নিয়ে গিয়েছিলেন।সেখানে বিভিন্ন পরীক্ষা-নিরীক্ষার পর তারা জানতে পারলেন যে রোহন নিউরোব্লাস্টোমা নামের এক বিরল ধরনের ক্যান্সারে আক্রান্ত হয়েছে। এই রোগের চিকিৎসা নয়াদিল্লির ‘এইমস’য়েই করা সম্ভব। খুব স্বাভাবিকভাবেই এই চিকিৎসার জন্য তাদের প্রচুর টাকার প্রয়োজন ছিল। তখন শিলচরের অনেকেই রোহানকে সুস্থ করে তোলার জন্য আর্থিক সাহায্য করেছেন।

এখানে আরও উল্লেখ করা যেতে পারে, রাজশ্রী ভট্টাচার্য নামের একজন ব্যক্তি নিজস্ব উদ্যোগে সামাজিক মাধ্যমে তার অবস্থা ব্যাখ্যা করে চিকিৎসার জন্য অর্থ সাহায্য কামনা করেন। তিনি বিভিন্ন লোকের কাছ থেকে প্রায় ২০ হাজার টাকা সংগ্রহ করে রোহনের মা বাবার হাতে তুলে দেন।তাছাড়া মুখ্যমন্ত্রী সর্বানন্দ সোনোয়াল ২৫ হাজার টাকা চিকিৎসার জন্য দান করেন। আসামের অর্থমন্ত্রী হিমন্ত বিশ্ব শর্মাও বাচ্চাটির চিকিৎসার জন্য অটল অমৃত যোজনার মাধ্যমে সরকারি সাহায্যের ব্যবস্থা করে দেন।

রোহনের মা-বাবা তার চিকিৎসার যাবতীয় ব্যবস্থা করলেও সবার সবধরনের চেষ্টা ব্যর্থ হয়ে যায়। ধরে রাখা গেল না ছোট্ট শিশু রোহনকে। অসহনীয় যন্ত্রণা সহ্য করে শেষ পর্যন্ত আজ ভোরে সবাইকে ছেড়ে চলে গেল রোহন।

Comments are closed.

error: Content is protected !!