Also read in

কোভিড সংক্রমণ নিয়ে অকালে চলে গেলেন দক্ষ নৃত্য শিক্ষক তথা কোরিওগ্রাফার নয়ন দাস

মাত্র ৩৪ বছর বয়সে চলে গেলেন স্বনামধন্য নৃত্য শিক্ষক নয়ন দাস। করোনা ভাইরাস কেড়ে নিল উপত্যকার অন্যতম গুণী ব্যক্তিটিকে। তিনি সম্প্রতি ভাইরাসে আক্রান্ত হওয়ার পর শিলচর মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি হয়েছিলেন এবং সেখানে তাঁকে আইসিইউ ওয়ার্ডে রাখা হয়েছিল। বুধবার সকাল ৮টা ৪৫ মিনিটে তার মৃত্যু হয়েছে। হাসপাতালের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে করোনা ভাইরাস সহ আরও কয়েকটি সমস্যায় তিনি ভুগছিলেন, ফলে তার মৃত্যুর জন্য সরাসরি ভাইরাসকে দায়ী করা হচ্ছে কিনা সেটা জানা যাবে ডেথ অডিট বোর্ডের রিপোর্ট এলে পরেই।

ভাইরাসে আক্রান্ত হওয়ার পর গত ৩০ এপ্রিল তিনি শিলচর মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে এসেছিলেন। হাসপাতালে কোভিড ওয়ার্ডে চিকিৎসাধীন থাকার সময় তার শরীরে অক্সিজেনের মাত্রা ক্রমশ কমে যাচ্ছিল। সঙ্গে ডায়বেটিস থাকায় তার চিকিৎসা একটু কঠিন হয়ে দাঁড়ায়। এছাড়া তাঁর উচ্চ রক্তচাপ ও ছিল।

নয়ন দাস মূলত করিমগঞ্জ জেলার বদরপুরের বাসিন্দা। তবে বহুদিন ধরে মেহেরপুরের শিবালিক পার্ক এলাকায় বসবাস করতেন। এখানেই নৃত্যশ্রী ডান্স অ্যাকাডেমি নামের তার নাচের বিদ্যালয় ছিল, শহরের বিভিন্ন এলাকার ছাত্রছাত্রীরা এতে নাচ শিখতে আসতো। তিনি এলাকার বিভিন্ন সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানে স্বতঃস্ফূর্তভাবে যোগ দিতেন, ফলে এলাকাবাসীর কাছে অত্যন্ত প্রিয় ছিলেন তিনি। তার মৃত্যুতে অনেকেই স্তম্ভিত এবং শোকস্তব্ধ। এছাড়া বদরপুরে তার একটি নাচের বিদ্যালয় রয়েছে, যেখানে এলাকার অনেক ছাত্রছাত্রীরা নাচ শিখতে আসে এবং তিনি প্রায়ই সেখানে যাতায়াত করতেন।

এই বছর মার্চ মাসে শিবালিক পার্ক এলাকায় একটি সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান আয়োজিত হয়েছিল যেখানে কলকাতা, আগরতলা ইত্যাদি এলাকা থেকে অনেক শিল্পীরা এসেছিলেন। সেই অনুষ্ঠান শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত চালিয়ে নেওয়ার ক্ষেত্রে বড়োসড়ো ভূমিকা পালন করেছিলেন নয়ন দাস। তার মৃত্যুতে এলাকায় শোকের ছায়া নেমে এসেছে।

শিবালিক পার্ক ডেভেলপমেন্ট কমিটির পক্ষ থেকে দেবাশীষ পাল বলেন, “এত কম বয়সে এভাবে তিনি চলে যাবেন এটা ভাবতেই পারছিনা। এলাকায় তিনি ভাড়া থাকতেন, প্রত্যেকের সঙ্গে তাঁর ভাল সম্পর্ক ছিল এবং অত্যন্ত গুণী ব্যক্তি ছিলেন। আমাদের প্রায় প্রত্যেক সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানে তিনি বড়োসড়ো দায়িত্ব পালন করতেন এবং সেটা সফল হত। করোনা ভাইরাস পরিস্থিতি এখন যেখানে দাঁড়িয়ে আছে আমাদের প্রত্যেককে সাবধান থাকা উচিত। আমরা নিজেদের এলাকায় অতিরিক্ত সুরক্ষা ব্যবস্থা রেখেছি। এলাকার প্রত্যেক ব্যক্তিকে সাবধান এবং সচেতন থাকতে বলে দেওয়া হয়েছে।”

পরিবারের সদস্য সহ অসংখ্য গুণমুগ্ধকে রেখে গেছেন নয়ন দাস। তার ছাত্র-ছাত্রীরা বিভিন্ন সামাজিক মাধ্যমে শোক ব্যক্ত করছেন।

Comments are closed.