নিলামবাজারের দিব্যাঙ্গ হোসেন আহমেদ নরেন্দ্র মোদির সব থেকে বড় ভক্ত!
যখন শচীন টেন্ডুলকর কোনও মাঠে খেলছেন, তার ভক্ত নানা বাধা-বিপত্তি পার করেও দর্শকের আসনে পৌঁছে যাচ্ছেন, এরকম দৃশ্য সাধারণত খেলার মাঠে মেলে। তবে রাজনীতিতে এমন দৃশ্য কমই চোখে পড়ে। করিমগঞ্জের নিলামবাজার এলাকার হোসেন আহমেদ প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির ভক্ত এবং তার কোন ভাষণ শোনেন না এমনটা কম হয়। মোদির জন্যই বিজেপির ভক্ত হয়েছেন এবং দলের প্রায় সব অনুষ্ঠান দেখতে পৌঁছে যান।
বৃহস্পতিবার ভাটগ্রামে নরেন্দ্র মোদির অনুষ্ঠানে প্রচন্ড ভিড় ঠেলে তিনি পৌঁছে যান একেবারে সামনের সারিতে। মাটিতে বসেই পুরো অনুষ্ঠান দেখেন। তবে তার কোনও বহিঃপ্রকাশ নেই, প্রিয় নেতার সঙ্গে সেলফি উঠবেন এমন আকাঙ্খাও রাখেন না। মনের টানেই অনুষ্ঠান দেখেন।
কেন তার এই টান? এই প্রশ্নের উত্তরে হোসেন আহমেদ বলেন, ‘২০১৪ সালে নির্বাচনের আগে যখন প্রধানমন্ত্রীর নরেন্দ্র মোদির ভাষণ শুনতে শুরু করি ধীরে ধীরে তার ভক্ত হয়ে পড়ি। অতীতেও নরেন্দ্র মোদির অনুষ্ঠানে অংশ নিয়েছি, টাকা পয়সার অভাবে প্রায় ভিক্ষে করেছি, তবু অনুষ্ঠান বাদ দিইনি। পরবর্তীতে মন্ত্রী হিমন্ত বিশ্ব শর্মার ভক্ত হয়ে পড়ি, তিনি করিমগঞ্জে যতবার অনুষ্ঠান করেছেন এবং খবর পেয়েছি, ততবার সেখানে পৌছে গেছি। আমি কাউকে জানাই না, চুপচাপ যেখানে জায়গা পাই বসে অনুষ্ঠান দেখি এবং ফিরে যাই।’
রাজনীতিতে এক দলের বড় নেতা অন্য দলের নেতার সমালোচনা করেন এবং বড় বড় ঘোষণা প্রতিশ্রুতি ইত্যাদি থাকে প্রচারের মূলমন্ত্র। তবে সাধারন মানুষের মনে কিছু কিছু নেতার প্রতি থাকে অগাধ প্রেম, তবে এরা প্রায় চোখেই পড়েন না। নিলাম বাজারের হোসেন আহমেদ এদের মধ্যেই একজন।
আমরা অতীতে দেখেছি যখন ১০৪ বছর বয়সে বিদেশি তকমা গায়ে নিয়ে শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেছিলেন চন্দ্রধর দাস, তার স্ত্রী কিন্তু সরকারের উপর রাগ করেননি। সেই মুহূর্তেও নরেন্দ্র মোদিকে ঈশ্বর হিসেবে প্রণাম করেছেন। তিনি একসময় বলেছেন, মনে মনে মোদির কাছে প্রার্থনা করলে তাকে সরকারি সাহায্য পাঠিয়ে দেন প্রধানমন্ত্রী। এই অগাধ প্রেমের বার্তা হয়তো প্রধানমন্ত্রীর কানে কখনো পৌঁছয় না, তবু ভক্তের মনে আশার আলো জাগিয়ে রাখে।
এদিন করিমগঞ্জের অনুষ্ঠানে প্রচন্ড ভিড় ছিল এবং প্রখর রোদে অনেকেই মাথা ঘুরে পড়ে গেছেন। আবার কেউ কেউ ঝগড়া, মারপিট ইত্যাদিও করেছেন। এতকিছুর মধ্যেও দুই পায়ে চলতে অক্ষম হোসেন আহমেদ তার মনমতো জায়গায় বসে অনুষ্ঠান দেখেছেন।
Comments are closed.