Also read in

ফুটপাথে ঝালমুড়ি বিক্রেতা সোনাই-এর ছাত্র মাধ্যমিক পরীক্ষায় তিনটি লেটার সহ প্রথম বিভাগে উত্তীর্ণ, খুশীর হাওয়া

 

দারিদ্র্য কখনো শিক্ষার অন্তরায় হতে পারে না- তা আবারো প্রমাণ করল কাছাড় জেলার সোনাইয়ের এক ছাত্র। সোনাই কচুদরম অগ্রগামী স্কুলের ছাত্র মাহির আহমেদ এইচএসএলসি পরীক্ষায় তিনটি বিষয়ে লেটার সহ প্রথম বিভাগে পাস করেছে। মাহির গণিত, ইংরেজি এবং ফার্সিতে লেটার মার্ক সহ মোট ৪৪৭নম্বর পেয়েছে। সোনাইয়ের বাউরিকান্দি এলাকার নুরুল হকের ছেলে মাহির আহমেদের সাফল্যে খুশি তার শিক্ষক, সহপাঠী ও গ্রামবাসী।

মাহির লেখাপড়ার পাশাপাশি স্থানীয় বাজারে ঝালমুড়ি বিক্রি করে তার দরিদ্র পরিবারকে সাহায্য করেছিল এবং শিক্ষার খরচ ও মেটাচ্ছিল, ফল প্রকাশের দিনও সে বাজারে ঝালমুড়ি বিক্রি করছিল। তার ফল জানতে পেরে তার ঝালমুড়ি স্টলের কাছে উপস্থিত লোকজন তাকে সাধুবাদ জানায়। দারিদ্র্য যে শিক্ষার পথে বাধা হতে পারে না তা আবারও প্রমাণ করেছে মাহির। গ্রামবাসীরা আশা করছেন মাহির এই ফলাফল অন্যান্য শিক্ষার্থীদের অনুপ্রাণিত করবে।

সাংবাদিকদের সাথে আলাপকালে মাহির বলেন, “আমি একটি ছোট দোকান চালাই। সকালে স্কুলে যেতাম এবং স্কুল থেকে ফিরে রাত ৯টা পর্যন্ত দোকান চালাতে সময় দিতাম। তারপর বাসায় রাতের খাবার খেয়ে আমি রাত একটা- দুইটি পর্যন্ত পড়াশুনা করতাম। দোকান চালানো আমার পরিবারকে অর্থনৈতিকভাবে সাহায্য করেছে এবং সেই সাথে আমার শিক্ষার খরচ মেটাতে ও সাহায্য করেছে। আমি ৭৪.৫ শতাংশ নম্বর পেয়ে পাশ করেছি।”

মাহির অবিশ্বাস্য যাত্রা অধ্যবসায়ের অদম্য চেতনা এবং অটল বিশ্বাসের প্রমাণ হিসাবে কাজ করে যে দারিদ্র্য কখনই শিক্ষার সোহানকে বাধাগ্রস্ত করবে না। তার কাহিনীটি তাদের আর্থ-সামাজিক পটভূমি নির্বিশেষে প্রতিটি ব্যক্তির মধ্যে থাকা অসাধারণ সম্ভাবনার একটি উজ্জ্বল উদাহরণ। এটি একটি অনুস্মারক হিসাবে কাজ করে যে দৃঢ় সংকল্প, কঠোর পরিশ্রম এবং সবার অটল সমর্থন থাকলে দারিদ্র্যসহ যে কোনও বাধাই একজন শিক্ষার্থীর স্বপ্ন এবং আকাঙ্ক্ষার পথে অন্তরাল হয়ে দাঁড়াতে পারে না।

যেহেতু মাহির অসাধারণ কৃতিত্ব আশার আলো সৃষ্টি করে চলেছে, তার যাত্রা নিঃসন্দেহে আশার আলোকবর্তিকা হিসেবে কাজ করবে, অগণিত অন্যদের তাদের শিক্ষা অনুসরণ করতে এবং তারা যে চ্যালেঞ্জগুলির মুখোমুখি হন তা কাটিয়ে উঠতে উৎসাহিত করবে।

Comments are closed.