এনআরসির নামে একজন হিন্দুও দেশছাড়া হবেন না, প্রয়োজনে আইন বদলে দেওয়া হবে: সুরেন্দ্র কুমার জৈন
এনআরসির নামে একজন হিন্দুকেও ভারত ছাড়তে হবেনা, প্রয়োজনে আইন বদলে দেওয়া হবে। হিন্দুরা দেশভাগের শিকার হয়ে এদেশে এসেছেন, তারা শরনার্থী। মুসলমানরা এদেশে আসার কোনও কারন ছিলনা, তবু তারা অবৈধভাবে দলে দলে এদেশে ঢুকে পড়েছে। তারা অনুপ্রবেশকারী, তাদের এদেশ থেকে চলে যেতে হবে। কাজটি সরকার করতে না পারলে আমরা করব, এমনটাই দাবি বিশ্ব হিন্দু পরিষদের আন্তর্জাতিক যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক সুরেন্দ্র কুমার জৈনের।
রবিবার শিলচর বিশ্বহিন্দু পরিষদের দক্ষিণপূর্ব প্রান্ত (শিলচর) এর উদ্যোগে আয়োজিত গায়ত্রী মহাযজ্ঞ তথা হিন্দু সম্মেলনে যোগ দিয়ে তিনি কথাগুলো বলেন।
এনআরসি প্রক্রিয়ায় কার নাম থাকবে আর কে বাদ পরবেন এবং যাদের নাম বাদ পরবে তাদের ভবিষ্যৎ কি হবে এসব নিয়ে বরাক উপত্যকার মানুষের মনে রাজ্যের অন্যান্য এলাকার মানুষের মতোই ওনেক প্রশ্ন রয়েছে। এমন অবস্থায় বিশ্বহিন্দু পরিষদের কেন্দ্রীয় সংগঠনের পক্ষ থেকে এমন বয়ানে নতুন বিতর্ক উস্কে দিতে পারে।
সুরেন্দ্র কুমার জৈন এদিন বলেন, ভারতবর্ষ হিন্দুদের দেশ, হিন্দুরা দেশভক্ত, তারা ভারতবর্ষের উন্নতি চান। তবে মুসলমানরা এদেশের সংস্কৃতি নষ্ট করতে চায়। তারা লভ-জেহাদের মতো সমাজ বিরোধী কাজে লিপ্ত থাকে। আগে সরকার দুর্বল ছিল, হিন্দুরা একজোট ছিলনা তবে এখন সেই পরিস্থিতি নেই। আজ মুসলমানদের এদেশে থাকতে হলে ভারতমাতাকে, গো-মাতাকে এবং মেয়েদের সম্মান দিতে হবে। না হলে দেশ ছেড়ে চলে যেতে হবে। পাশাপাশি তিনি ভারতীয় মুসলমানদের আব্দুল কালামের মতো ব্যক্তিত্বদের আদর্শের অনুপ্রেরণায় চলার আহবান জানান। তিনি বলেন, অনেক মুসলমানই নিজেদের বাবর, ঘোরি বা গজনির বংশধর বলে মনে করেন তবে তারা ভুলে যান যে এই নেতারা ভারতের ক্ষতি করতে এসেছিল। ভারতীয় মুসলমানের আদর্শ হওয়া উচিৎ এ পি জে আব্দুল কালামের মতো ব্যক্তিরা।
রাম মন্দির নির্মাণের প্রসঙ্গ টেনে তিনি বলেন, রাম মন্দির হবেই এবং আগামী বছরের রাম নবমীর আগে মন্দির নির্মাণের কাজ আরম্ভ হবেই আর এতে বরাক উপত্যকা সহ উত্তর পূর্বাঞ্চলের বিশেষ ভুমিকা থাকবে।
এদিন সম্মেলনে বিভিন্ন ধর্মীয় সংগঠনের তরফ থেকে সন্ন্যাসীরা অংশ গ্রহণ করেন। তারা তাদের বক্তব্যে হিন্দুদের এক হওয়ার পরামর্শ দেন।
রবিবার সকাল ৮টা থেকে গায়ত্রী মহাযজ্ঞ শুরু হয় এবং এতে জাতি ধর্ম নির্বিশেষে অনেকেই যোগ দেন। বিশ্বহিন্দু পরিষদের দক্ষিণপূর্ব প্রান্ত (শিলচর) এর উদ্যোগে আয়োজিত অনুষ্ঠানটি এই অঞ্চলে এই ধরনের প্রথম অনুষ্ঠান। এতে প্রায় পনেরো হাজার ভক্ত সমাগম হয়।
অনুষ্ঠানের আগের দিন সন্ধ্যায় প্রায় তিনশো জন মহিলা অন্নপূর্ণাঘাট থেকে মঙ্গলঘট ভরে নিয়ে এসে ইণ্ডিয়া ক্লাব মাঠে শ্রীশ্রী রামনবমী এবং গায়ত্রী মহাযজ্ঞের অধিবাস পালন করেন। এভাবেই আনুষ্ঠানিক সূচনা হয় মহাযজ্ঞ এবং হিন্দু সম্মেলনের। রবিবার দুপুরে প্রসাদ বিতরণের মাধ্যমে অনুষ্ঠানের সমাপ্তি হয়।
Comments are closed.