Also read in

পার্থসারথি চন্দর প্রয়াণে বিরাট ক্ষতি হয়ে গেল, বলছেন স্থানীয় ক্রীড়া সংগঠকরা

শুধু শিক্ষার দিক থেকে নয়, স্থানীয় ক্রীড়ামহলেও একজন সুপরিচিত মুখ ছিলেন প্রয়াত পার্থসারথি চন্দ। স্থানীয় খেলোয়াড় এবং সংগঠক দের সঙ্গে তার খুব ভালো সম্পর্ক ছিল। খেলাধুলার প্রতি সবার প্রিয় পার্থ স্যারের বিশেষ টানছিল। তাই এমন একজনের এভাবে চলে যাওয়াটা মেনে নিতে পারছে না স্থানীয় ক্রীড়ামহল।

এস এম দেব স্টেডিয়ামে এলেই খুব উৎসাহের সঙ্গে ম্যাচ উপভোগ করতেন সবার প্রিয় পার্থ স্যার। ক্রিকেট ও ব্যাডমিন্টন এর সঙ্গে যেন তাঁর বিশেষ টানছিল। কিভাবে আরো উন্নতি করা যায়, তা নিয়ে খেলোয়াড় ও সংগঠকদের সঙ্গে সবসময়ই আলাপ আলোচনা করতেন। দরকার হলে নিজে থেকেই গুরুত্বপূর্ণ টিপস দিতেন। খেলোয়াড় এবং সংগঠকরাও তাকে খুব শ্রদ্ধা করতেন। তাই তো হঠাৎ করে তার এভাবে চলে যাওয়াটা মেনে নিতে পারছেন না কেউই।

শিলচর জেলা ক্রীড়া সংস্থার সভাপতি বাবুল হোড় জানান, শুধু শিক্ষার জগতে নয়, খেলাধুলার জগতেও এক বিরাট ক্ষতি হয়ে গেল। তিনি বলেন, ‘পার্থ দার প্রয়াণে স্থানীয় খেলাধুলার জগতে বিরাট ক্ষতি হয়ে গেল। মূলত একজন শিক্ষাবিদ ছিলেন
তিনি। কিন্তু খেলাধুলার প্রতিও তার খুব আগ্রহ ছিল। তার দুই ভাই পরিতোষ চন্দ এবং ঝুমুর চন্দ প্রাক্তন খেলোয়াড় ছিলেন। দাদা পরিতোষ চন্দ তো জেলা ক্রীড়া সংস্থার অন্যতম প্রতিষ্ঠাতা সদস্য ছিলেন। বরাকভ্যালি ব্যাডমিন্টন অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি ছিলেন। সংস্থার প্রথম ক্রিকেট সচিব ছিলেন পরিতোষ দা। আর ঝুমুর দাও খুব ভালো খেলোয়াড় ছিলেন।’

বাবুল বাবু আরো বলেন, ‘এইতো কদিন আগেই মাঠে বসে পার্থ দার সঙ্গে আমার দীর্ঘক্ষণ কথা হয়েছিল। স্কুল ক্রিকেটের উদ্বোধনী ম্যাচে বিশেষ অতিথি হিসেবে মাঠে এসেছিলেন তিনি। সেদিনই শেষবারের মতো মাঠে এসেছিলেন তিনি। তার এভাবে চলে যাওয়াটা মেনে নিতে কষ্ট হচ্ছে।’

সংস্থার সচিব বিজেন্দ্র প্রসাদ সিং জানান, সংস্থার জেনারেল কাউন্সিল মেম্বার ছিলেন পার্থ স্যার। তার এভাবে চলে যাওয়ায় বিরাট শূন্যতার সৃষ্টি হল। তিনি বলেন, ‘একজন স্পোর্টস লাভার ছিলেন পার্থ স্যার। শেষ দুটি কার্যকাল থেকে সংস্থার সঙ্গে গভীর ভাবে জড়িয়ে পড়েছিলেন তিনি। খুব কম সময়ের মধ্যেই ক্রীড়ামহলেও সবার হৃদয়ে এক বিশেষ জায়গা জুড়ে নিয়েছিলেন। যখনই দরকার পড়েছে, স্যারকে পাশে পেয়েছি।’

বরাকভ্যালি ব্যাডমিন্টন অ্যাসোসিয়েশন এর সঙ্গেও জড়িত ছিলেন প্রয়াত পার্থসারথি চন্দ। সংস্থার সহ-সভাপতি ছিলেন তিনি। সেইসঙ্গে মালুগ্রাম ক্লাবের সঙ্গেও জড়িত ছিলেন। শিলচর জেলা ক্রীড়া সংস্থার শেষ দুটি বিজিএমে মালুগ্রাম ক্লাবের প্রতিনিধিত্ব করেছিলেন তিনি। বরাকভ্যালি ব্যাডমিন্টন অ্যাসোসিয়েশনের প্রাক্তন সচিব উত্তম চৌধুরী জানান, গত তিন বছর থেকে বাড়তি দায়িত্ব নিয়ে সংস্থার কাজ করছিলেন পার্থ স্যার। সংস্থার সবার সঙ্গেই তার বিশেষ সম্পর্ক ছিল। সবাই স্যার কে খুব ভালোবাসতেন। তাই পার্থ স্যারের এভাবে চলে যাওয়াটা আমাদের জন্য খুবই বেদনাদায়ক।

শিলচর জেলা ক্রীড়া সংস্থার প্রাক্তন গ্রাউন্ড সচিব চন্দন শর্মা জানান, পার্থ স্যারের এভাবে চলে যাওয়াটা তার জন্য এক বিরাট ধাক্কা। তিনি বলেন, ‘মনে হচ্ছে যেন একজন অভিভাবককে হারালাম। আমার দোকানে নিয়মিতভাবে আসতেন। ব্যবসা বাণিজ্যের খবর নিতেন। একজন অভিভাবকের মতো উপদেশ দিতেন। স্থানীয় খেলাধুলার খবর নিতেন। তিনি এভাবে চলে যাবেন এখনো বিশ্বাস হচ্ছে না।’

Comments are closed.

error: Content is protected !!