মঙ্গলবার কাছাড়ে পজিটিভ ২৬২, মেডিক্যালে করোনায় মারা গেলেন দুই, ক্যানসার হাসপাতালে এক
সোমবার কাছাড় জেলায় করোনা ভাইরাসে আক্রান্ত হওয়ার একদিনের সেরা রেকর্ড ছিল, মঙ্গলবার কিছুটা কমে এলেও আক্রান্তের সংখ্যা নগণ্য ছিলনা। এদিন জেলায় মোট ২৬২ জন লোক পজিটিভ হয়েছেন। রেপিড এন্টিজেন টেস্টে ২০৩ জন এবং আরটিপিসিআর পরীক্ষায় ৫৯ জনের সংক্রমণ শনাক্ত হয়েছে। তবে এদিন জেলায় সুস্থ হয়েছেন ১৭২ জন ব্যক্তি। দ্বিতীয় ঢেউয়ে জেলায় ২৪ জন লোক এযাবৎ করোনায় মারা গেছেন, এরমধ্যে একজনের মৃত্যুর জন্য সরাসরি করোনা ভাইরাসকে দায়ী করা হয়েছে, বাকি ২৩ জনের শরীরে ভাইরাসের সংক্রমণ ছাড়াও অন্যান্য রোগ ছিল।
শিলচর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের সহকারী অধ্যক্ষ ডাঃ ভাস্কর গুপ্ত জানিয়েছেন, হাসপাতালে এখন চিকিৎসাধীন রয়েছেন ২১৭ জন ব্যক্তি এরমধ্যে ১৮০ জন ওয়ার্ডে এবং ৩৭ জন ব্যক্তি আইসিইউতে চিকিৎসাধীন। ১১৭ জন ব্যক্তিকে অক্সিজেন সাপোর্টে রাখা হয়েছে যা এযাবত সর্বোচ্চ। ভেন্টিলেশনের সহায়তায় চিকিৎসাধীন রয়েছেন ১৩ জন আক্রান্ত ব্যক্তি। এদিন ৩২ জন রোগী সুস্থ হয়ে বাড়ি ফিরেছেন এবং ১৭ জন নতুন আক্রান্ত হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন। ডাক্তারের পরামর্শে ৪ ব্যক্তিকে বাড়ি যেতে দেওয়া হয়েছে এবং নিজের ইচ্ছায় ৩২ জন লোক হোম আইসোলেশন নিয়েছেন।
শিলচর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে মৃত্যু হয় ৬৫ বছর বয়সের দিলীপ কুমার সিংহের। তিনি হাইলাকান্দি লালাবাজারের বাসিন্দা, ৫ মে অসুস্থ অবস্থায় শিলচর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে এসেছিলেন। তার শরীরে নিউমোনিয়া সহ অন্যান্য রোগ ছিল এবং একসময় অক্সিজেনের মাত্রা নেমে গিয়ে ৭৬ শতাংশে দাঁড়ায়। শেষমেষ তাকে কোভিড আইসিওতে ভেন্টিলেশনে রাখা হয় এবং অক্সিজেন সাপোর্ট দেওয়া হয়। কিন্তু শেষ রক্ষা হয়নি, মঙ্গলবার সকাল ১০টা ৩০ মিনিটে তার মৃত্যু হয়।
হাইলাকান্দি জেলার লালা চন্দ্রপুর এলাকার বাসিন্দা জিতেন্দ্র চন্দ্র দাস ৯ মে অসুস্থ অবস্থায় শিলচর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসার জন্য এসেছিলেন। তারও কোভিড নিউমোনিয়া ছিল এবং অক্সিজেনের মাত্রা ৭৬ শতাংশের নিচে ছিল। তাকে কোভিড ওয়ার্ডের আইসিইউতে ভেন্টিলেশনে রাখা হয়েছিল এবং অক্সিজেন সাপোর্ট দেওয়া হয়েছিল। এর আগে লাগাতার দশ দিন জ্বর, সর্দি, কাশি ইত্যাদি সমস্যায় ভুগছিলেন। মঙ্গলবার ভোররাতে তার মৃত্যু হয়েছে, মৃত্যুকালে বয়স হয়েছিল ৬৭ বছর।
এছাড়া মঙ্গলবার বিকেল পাঁচটায় কাছাড় ক্যান্সার হাসপাতাল মৃত্যু হয় শিলকুড়ি এলাকার বাসিন্দা রিতা নুনিয়ার। তিনি বেশ কিছুদিন ধরে হাসপাতালে চিকিৎসাধীন ছিলেন এবং একসময় তার শরীরে করোনা ভাইরাসের সংক্রমণ ধরা পড়ে। মাত্র ২৫ বছর বয়সে তার মৃত্যু হয়েছে।
কাছাড় জেলায় এখন মোট ৯৮১ জন ব্যক্তি আক্রান্ত হয়ে চিকিৎসাধীন অবস্থায় রয়েছেন। এরমধ্যে শিলচর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ২০৮ জন, সিভিল হাসপাতালে ১৬ জন, গ্রীন হিলস হাসপাতলে ২৯, ক্যান্সার হাসপাতাল ১২ জন, গ্রেসওয়েল হাসপাতালে ২২ জন, সিআরপিএফ দয়াপুর হাসপাতালে ১৩ জন, সেনা হাসপাতালে চারজন এবং বাড়িতে চিকিৎসাধীন রয়েছেন ৬৭৭ জন। দ্বিতীয় ঢেউয়ে এখন পর্যন্ত কাছাড় জেলায় ৩০৫০ জন ব্যক্তি আক্রান্ত হয়েছেন এবং ২০৪৬ জন ব্যক্তি সুস্থ হয়েছেন।
জেলায় ২৪ জন লোক এযাবত মারা গেছেন, এরমধ্যে একজনের মৃত্যুর জন্য সরাসরি করোনা ভাইরাসকে দায়ী করা হয়েছে, বাকি ২৩ জনের শরীরে ভাইরাসের সংক্রমণ ছাড়াও অন্যান্য রোগ ছিল।
Comments are closed.