
Fancy Dress competition on Facebook; Kids dress up as young Krishna
আন্তর্জাতিক স্তরে কৃষ্ণ সাজো প্রতিযোগিতায় ব্যাপক সাড়া ফেইজবুক পেইজে, বাজিমাত করল সাত শিশু কৃষ্ণ
সুদীপ দাস, করিমগঞ্জ : ভগবান শ্রীকৃষ্ণের জন্মতিথিকে স্মরণ করে প্রতিবছর রাধারমণ সেবা সমিতি কৃষ্ণ সাজো প্রতিযোগিতার আয়োজন করলেও ২০২০ সালের করোনাকালে আন্তর্জাতিক স্তরে কৃষ্ণ সাজো প্রতিযোগিতায় ব্যাপক সাড়া মিললো বারইগ্রাম রাধারমণ আশ্রম ফেইজবুক পেইজে। অন্যান্য বছরের আশ্রম প্রাঙ্গনে কৃষ্ণ সাজো প্রতিযোগিতাকে পেছনে ফেলে কোভিড মহামারির সময়ে জন্মাষ্টমীর পুণ্য তিথি লগ্নে সামাজিক মাধ্যমগুলি রীতিমতো যে বাল কৃষ্ণ, নাড়ু গোপাল, ননি চোরা, রাখাল কৃষ্ণের দখলে ছিল তা নিঃসন্দেহে বলা যায়।
কৃষ্ণ সাজো প্রতিযোগিতায় নিজেদের মাখন চোরা পুত্রদের বিজয়ী করতে কিন্তু কৌতূহল কম দেখা যায়নি মা যশদা থেকে নন্দ রাজাদের। তবে এক্ষেত্রে একধাপ এগিয়ে রয়েছে রাধারমণ সেবা সমিতি, বিশ্ব হিন্দু পরিষদ ও বজরং দলের বারইগ্রাম প্রখণ্ড । যৌথ আয়োজনে বলতে গেলে রাজ্যের মধ্যে প্রথম সামাজিক মাধ্যমের কৃষ্ণ সাজো প্রতিযোগিতা কিন্তু ক্ষুদে প্রতিযোগিদের যথেষ্ঠ অনুপ্রেরণা এবং উৎসাহ দিতে সক্ষম হয়েছে ।
মূলত গত নয় আগষ্ট বারইগ্রাম রাধারমণ আশ্রম নামের ফেইজবুক পেইজ থেকে কৃষ্ণ সাজো প্রতিযোগিতার ঘোষণা করা হয় । লাইকের মাধ্যমে এবং বিচারক মন্ডলীর সিদ্ধান্ত অনুযায়ী প্রথম, দ্বিতীয় এবং তৃতীয় স্থান বিজয়ীদের বাছাই করা হবে বলে নিয়মাবলীতে উল্লেখ করা হয় পেইজে। ১৪ আগষ্ট বিকাল চারটা অবধি লাইকের ভোট গণনা পর্ব সহ বিচারক মন্ডলীর যৌথ সিদ্ধান্ত অনুসারে স্বাধীনতা দিবসের দিনে প্রতিযোগিতার ফলাফল ঘোষণা করা হবে বলে জানিয়ে দেওয়া হয় কর্তৃপক্ষের পক্ষ থেকে । আর এই থেকে শুরু হয় প্রতিযোগিতা। উত্তর পূর্ব তো বটেই, গোটা ভারতবর্ষ ছাড়া পাশ্ববর্তী দেশ বাংলাদেশ থেকেও পেইজে প্রতিযোগিতায় অংশ নেন ক্ষুদে প্রতিযোগীরা। ২৮৫ জন শিশু কৃষ্ণকে নিয়ে প্রতিযোগিতা শুরু হলে ১৪ আগষ্ট বিকাল অবধি নিজেদের লাড়ু গোপালের পক্ষে লাইক, শেয়ার এবং মন্তব্য দিতে যেন দুই দেশ এক মঞ্চে মেতে উঠে। প্রতিযোগীদের নিকটাত্মীয়রাতো ছিলেন, সঙ্গে ভিনধর্মী দেশ থেকে কিন্তু শ্রী কৃষ্ণের শিশু রূপধারী ছবিতে লাইকের যথেষ্ট সমর্থন আসে । ২৮৫ জন প্রতিযোগীকে লাইক, শেয়ার এবং মন্তব্য দিতে লক্ষাধিক সমর্থনের সাথে সাথে পাঁচ দিনের মাথায় কয়েক লক্ষাধিক কৃষ্ণ ভক্তদের দর্শন রীতিমতো রেকর্ড বলা যায় । ১৫ আগষ্ট স্বাধীনতা দিবসে বিচারক মন্ডলী প্রথম তিনজনকে বাছাই করতে গিয়ে রীতিমতো হিমশিম খেয়ে যান। হাড্ডাহাড্ডি লড়াই এমন পর্যায়ে পৌঁছে যে শেষপর্যন্ত তিনজন সেরা বাছাই করার পরিবর্তে সাতজনকে তিন স্থানের সেরা বলে ঘোষণা করা হয় ।
কৃষ্ণ সাজো প্রতিযোগিতায় প্রথম স্থান যৌথভাবে দখল করে ঐশানী পাল (করিমগঞ্জ) ও স্নেহাংশ দাস (লাতু, করিমগঞ্জ)। দ্বিতীয় স্থানের জন্য দুজনকে সম্মান দেওয়া হয় কর্তপক্ষের পক্ষ থেকে । বিজয়ী ঘোষণা করা হয় রাগিনী দাস (করিমগঞ্জ) এবং সানবিকা দত্তকে (নাজিরা, শিবসাগর) । তৃতীয় স্থান দখল করে যৌথভাবে যথাক্রমে প্রজ্ঞা মিত্র (মালিগাঁও, গুয়াহাটি), সুনেত্রা চক্রবর্তী (বাগবাড়ী, কালীগঞ্জ) এবং নিত্যাম দাশগুপ্ত (নিভিয়া, করিমগঞ্জ)।
শিশু শিল্পীদের উৎসাহ প্রদান করতে সামাজিক মাধ্যমে আয়োজক মন্ডলিকে অভিনন্দন জানান প্রতিযোগীদের অভিভাবকরা। বিজয়ী প্রতিযোগীদের শংসাপত্র সহ পুরস্কার তুলে দেওয়া হবে বলে জানান রাধারমণ সেবা সমিতির মুখ্য আহ্বায়ক অরূপ রায় । যৌথভাবে প্রথমবারের অনুষ্ঠান আয়োজন করে রাধারমণ সেবা সমিতি, বিশ্ব হিন্দু পরিষদ এবং বজরং দল বারইগ্রাম প্রখন্ড । আন্তর্জাতিক স্তরে কৃষ্ণ সাজো প্রতিযোগিতা ২০২০ সফল করতে বিশেষ অবদানকারীদের মধ্যে অন্যতম হলেন সুমিত দে, সুনয়ন দাস, সঞ্জীব দাস, ভাগবত রায় প্রমুখ।






Comments are closed.