Also read in

মিজো সংগঠনের আসামের বাঙালিদের কাছে ট্যাক্স দাবিতে আতঙ্ক, মুখ্যমন্ত্রীর দরবারে সুজাম উদ্দিন

দক্ষিন হাইলাকান্দির  আসাম মিজোরাম সীমান্তে
বসবাসকারী আসামের  বাংলাভাষী নাগরিকদের কাছে  ট্যাক্স দাবি করে  মিজো সংগঠনের চিঠি প্রেরনের ঘটনায় তীব্র আতংকের সৃষ্টি  হয়েছে।  জানা গেছে, গত ১৬ মার্চ  দু’দিনের সময়সীমা বেঁধে দিয়ে  অসমের বাংলা ভাষী নাগরিকদের কাছে চিঠি পাঠিয়েছে  মিজো ছাত্র সংগঠন  ইয়ং  মিজো  এসোসিয়েশান (  ওয়াই এম এ)।

ষোল মার্চ জারি করা নোটিশের মেয়াদ শেষ হয়েছে আজ  বিকেল চারটায় ।  মিজো ভাষায় লিখা চিঠিতে সাফ জানিয়ে দেওয়া হয়েছে,  দাবি মতো টাকা না দিলে  ভয়াবহ হামলা চালানো হবে।  এদিকে  মিজো সংগঠনের  ট্যাক্স দাবির প্রেক্ষিতে মিজোরাম সীমান্ত এলাকায় বসবাসকারী অসমের বাংলা ভাষী নাগরিকদের মধ্যে তীব্র আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়েছে।  অনেকেই নিরাপদ স্থানে সরে যাচ্ছেন বলেও খবর পাওয়া গেছে।

আতঙ্কিত নাগরিকরা বিষয়টি স্থানীয় বিধায়ক সুজাম উদ্দিন লস্কর সহ জেলা প্রশাসনের দৃষ্টিগোচর করে নিরাপত্তা প্রদানের দাবি জানিয়েছেন।  এদিকে গন অভিযোগ পেয়ে   কাটলিছড়ার বিধায়ক সুজাম উদ্দিন  লস্কর সোমবার দিসপুরে রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী সর্বানন্দ সোনোয়ালের সাথে সাক্ষাৎ করে  মিজো সংগঠনের  টাকা দাবি করে  পাঠানো হুমকির চিঠি তুলে ধরে বিহিত পদক্ষেপ গ্রহনের আবেদন জানান।বিধায়ক সুজাম উদ্দিন এদিন মুখ্যমন্ত্রী সোনোয়ালের হাতে একটি স্মারকপত্র তুলে দিয়ে  দীর্ঘ দিন ধরে অসম মিজোরাম সীমান্ত বিবাদ নিয়ে মিজো পুলিশ ও হানাদারদের ক্রমাগত আক্রমণ ও তাণ্ডবলীলার চিত্র তুলে ধরে
অসমের জমি উদ্ধারের পক্ষে  বিহিত ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য  দাবি জানান।

বিধায়ক সুজাম উদ্দিন জানান, মুখ্যমন্ত্রী অত্যন্ত গুরুত্ব সহকারে বিষয়টি দেখেন এবং সঙ্গে সঙ্গে অসম পুলিশের ডিজিপিকে ফোন করে মিজো ছাত্র সংস্থার হুমকি মোকাবেলায় প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেওয়ার নির্দেশ দেন। সীমান্তের অসমের বাসিন্দাদের আতঙ্কিত না হওয়ার আর্জি রাখেন তিনি। এদিকে মুখ্যমন্ত্রীর ফোন পেয়ে পুলিশ নড়েচড়ে বসে।পুলিশের দক্ষিন অসম রেঞ্জের ডি আই জি  বিধায়ক সুজামের  সাথে যোগাযোগ করে বিস্তারিত তথ্য সম্পর্কে অবহিত হন। ঘাড়মুড়া জামিরা জেলা পরিষদ সদস্য ছালেহ আহমদ মজুমদার  জানান,  ইয়ং মিজো এসোসিয়েশনের          ভৈরবী ব্রাঞ্চের অধীন কুমপুন সাব কমিটির সভাপতি  সি লালচানকিমা ও সচিব এইচ ডি       লালহিমিনাংলিয়ানা গত ষোল মার্চ  কর দাবী করে সীমান্তের অসমের কচুরতল সহ বিস্তীর্ন এলাকায় বসবাস রত বাঙ্গালী বাসিন্দাদের বেছে বেছে এই নোটিশ
প্রদান করেছেন।।

প্রদত্ত চিঠিতে বলা হয়েছে,
আঠারো মার্চ বিকেল চারটার মধ্যে টাকা প্রদান করা  না হলে   ঘর বাড়ি থেকে উচ্ছেদ করে দেওয়া হবে।  তাছাড়া সম্প্রতি ,  মিজোরা কচুরথল ও গল্লাছড়া এলাকায় বসবাসকারী বাঙ্গালীর ঘরে ঘরে ঢুকে পুরুষদের তল্লাসী করে খুঁজে না পেয়ে মহিলাদেরকে দু-একদিনের মধ্যে ঘর বাড়ি ছেড়ে চলে যাওয়ার জন্য হুঁশিয়ারী দিয়েছিল।জনৈকা মহিলার  সাথে অশালীন আচরণের অভিযোগ এনে পরিবারের পক্ষ থেকে  রামনাথপুর থানায় একটি মামলাও দায়ের করা হয়।  যদিও অভিযুক্তরা অন্য রাজ্যের হওয়ায় অসম পুলিশ এখন পর্যন্ত কাউকে গ্রেফতার করতে পারেনি।

গত বছরের মার্চ মাসে মিজো ছাত্রসংস্থা এমজেডপি,ওয়াই এম এ জোর করে অসমের জমি দখলের চেষ্টা করলে সীমান্তের উত্তেজনা চরমে পৌছেছিল। পরে দুই রাজ্যের শীর্ষ প্রশাসনিক স্থরে আলোচনা করে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রনে আসে।

সর্বশেষ খবরে জানা গেছে,  কাটলিছড়ার চক্র আধিকারিক  জেমস আইন্ড  ও অতিরিক্ত পুলিশ সুপার বরুন পুরকায়স্থ   সোমবার বিকেলে সরেজমিনে ছুটে গিয়ে পরিস্থিতির খোঁজ খবর নেন।

Comments are closed.